ভয়াবহ বন্যার কবলে সিলেটের কোম্পানিগঞ্জ

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জুন ১৬ ২০২২, ১৯:৪৫

অবিরাম বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে বন্যার ভয়াবহ রূপ ধারন করেছে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায়। ৬ ইউনিয়নের প্রায় সবকটি গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে গেছে। উপজেলার সবচেয়ে উঁচু সড়ক সিলেট-ভোলাগঞ্জ বঙ্গবন্ধু মহাসড়কের কোথাও কোথাও ১ থেকে ২ ফুট উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে শহরের সাথে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সড়ক পথে যোগাযোগ প্রায় বন্ধের উপক্রম। ধলাই নদীর পার্শবর্তী বাঁধ গুলো ভেঙ্গে নদীর তীরবর্তী গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বড় স্টিল নৌকা দিয়ে নিচু এলাকার মানুষ তুলনামূলক উঁচু এলাকায় আশ্রয় নিচ্ছেন।

সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। ফ্লাড সেন্টারের সকল শাখা খোলে দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ স্টেশনে বিপদ সীমার উপরে পানি উঠে যাওয়ায় রাত থেকে পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে।

এদিকে বন্যার ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় সাংসদের পক্ষ থেকে ২৪ মেট্রিকটন চাল ও ৩ হাজার পেকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। উপজেলার মধ্যে ভোলাগঞ্জ, নোয়াগাঁও, নারাইনপুর, কলাবাড়ি গ্রাম উঁচু হওয়ায় মানুষজন গবাদিপশু নিয়ে এসব এলাকায় আশ্রয় নিচ্ছেন।

এদিকে উপজেলার বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে আশ্রয় নিতে আসা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। অনেক গ্রাম থেকে নৌকার অভাবে আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে মানুষ আসতে পারছেন না। কোথাও কোথাও মানুষের চাপে তিল ধারনের ঠাঁই হচ্ছে না। আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট রয়েছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে আজ কোন খাবার বিতরণ করা হয়নি।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উপজেলায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ডুবে গেছে উপজেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অনেক বাড়ির ওপর দিয়ে পানি প্লাবিত হওয়ায় মানুষ আশ্রয় নিয়েছে নিকটস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে। আবার যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার কারণে অনেকে যেতে পারছে না আশ্রয়কেন্দ্রে।

এদিকে মানুষের তুলনায় আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা কম থাকায় অসহায় হয়ে পড়ছে মানুষ। উপজেলার প্রতিটি গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করা হলেও জায়গা স্বল্প থাকায় আশ্রয় নিতে পারছেন না পর্যাপ্ত মানুষ। ফলে বেঁচে থাকার অনিশ্চয়তায় রয়েছেন উপজেলার অধিকাংশ জনসাধারণ।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পল্লী বিদ্যুতে ডেপুটি জেনারেল ম্যানাজার মৃণাল কান্তি বলেন, উপজেলার প্রায় জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইন পানিতে নিমজ্জিত এবং বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটি পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় আপাতত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধু রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব নয়।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুসিকান্ত হাজং জানান, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক কোন ওয়াটার গ্যাজ না থাকায় পানির পরিমাপ করা যাচ্ছে না। সরকারের তরফ থেকে ২৪ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এবং নগদ পেয়েছি ৫০ হাজার টাকা। এছাড়াও উপজেলা পরিষদ থেকে ২লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার থেকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হবে। সিলেট শহরের সাথে কোম্পানীগঞ্জের সড়ক পথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৫ই মে থেকে শুরু হওয়া টানা ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে পানিবন্দি ছিলেন উপজেলার প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ ।