ভুল চিকিৎসায় কোমায় থাকা বশেমুরবিপ্রবির শিক্ষার্থী মুন্নির বিষাদময় আড়াই বছর

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

নভেম্বর ২৩ ২০২১, ২৩:১৪

সাজ্জাতুজ জামান সুজন, বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি:

গোপালগঞ্জ ২৫০-শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভুল ইনজেকশন পুশ করায় দীর্ঘদিন অজ্ঞান অবস্থায় ছিলো গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মরিয়ম সুলতানা মুন্নি।
২০১৯ সালের ২০ মে রাতে পিত্তথলিজনিত সমস্যার কারণে ডাক্তার তপন কুমার মন্ডলের অধীনে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি হয় বশেমুরবিপ্রবি সমাজবিজ্ঞান ২০১৭-২০১৭৮ সেশনের শিক্ষার্থী মুন্নি। এরপর ২১ মে ২০১৯, গোপালগঞ্জ ২৫০-শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নার্সের দেয়া ভুল ইনজেকশন(এনেস্থিসিয়া) পুশ করায় দীর্ঘদিন অজ্ঞান অবস্থায় ছিলেন এই শিক্ষার্থী। ভুল চিকিৎসায় পেরিয়ে গেছে আড়াই বছর।

কেমন আছেন সেই মুন্নি?

এ বিষয়ে কথা হয়েছে তার ভাই মোঃ আল-আমিন এর সাথে। তিনি ভুল চিকিৎসায় দীর্ঘদিন অজ্ঞান থাকা বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থীর বর্তমান শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে বলেন, ” এখন ঠিক কোমায় নেই।বেড বাউন্ডে আছে। ওর সেন্স আছে, নিজে থেকে পাশ ফিরতে পারে, কথা বলে না তেমন একটা। তবে নল পরিয়ে খাওয়া দাওয়া করাতে হয়।”
ভুল চিকিৎসার পরে একটা মামলা হয়েছিলো।সে সময় চিকিৎসকরা কোনো সমস্যা করেছিলো কিনা জানতে চাইলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর ভাই বলেন, “মামলার পরে একটু অসুবিধা হয়েছিলো। কিন্তু সরাসরি তো আর কোনো রোগীর চিকিৎসা বন্ধ করবে না ডাক্তাররা। ওইভাবে তো সম্ভব না। কিন্তু পরোক্ষভাবে সমস্যা করেছিলো।”

এদিকে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা এই শিক্ষার্থীর ভুল চিকিৎসার জন্য দ্বায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি ছিলো বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের। তবে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেয়ার কথা না জানা গেলেও গত ২১নভেম্বর মেডিকেল শিক্ষার্থীদের সাথে বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা সেবা নিতে সমস্যার সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা না দেয়ার বিষয়ে এক চিকিৎসক স্ট্যাটাস দেয়ায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

নিজেদের ভুলে এক মেধাবী শিক্ষার্থীর জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকার পরেও সেই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা সেবা না দেয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ নৈতিকতা বিবর্জিত ঘটনা বলে মনে করছে শিক্ষার্থীসহ সচেতন মহল।