বেলুন বিক্রেতা ইমন এবং তার সংগ্রামী জীবন

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জানুয়ারি ২৫ ২০১৯, ১৪:০৭

মাহমুদুল হাসান

গুরুদয়াল লেক পারে বসে আছেন স্বামী-স্ত্রী। তাদের পাশে একটা ফুটফুটে বাচ্চা। স্বামী-স্ত্রী গল্প করছে। বাচ্চাটা খেলছে। হঠাৎ বেলুন বিক্রেতা ইমন তাদের কাছে এল। তার থেকে একটি বেলুন কেনার জন্য বিনয়ের সুরে কয়েকবার অনুরোধ করল। তারা তাদের বাচ্চার জন্য বেলুন কিনবে না। বাচ্চা বেলুন দেখে কাঁদছে৷ তবুও কিনিবে না। ইমনকে তাড়িয়ে দিল। ইমন মন খারাপ করে চলে যেতে লাগল। অদূরে বসে দৃশ্যটি দেখছিলাম আছি। দৃশ্যটি আমাকে চরমভাবে আহত করেছে।

আসলে ইমনদের মতো হকারদের সম্পর্কে কেউ তেমন জানতে চান না। জানতে চান না তাদের সুখ-দুঃখের কথা। সমাজের আর দশটা মানুষের মতো তাদেরও আছে সুন্দর আগামীর স্বপ্ন, আছে জীবনের সুখ আর দুঃখের অনেক গল্প। কিন্তু তাদের জীবনপাতার গল্পগুলো লিখা হয় জীবন সংগ্রামের কাহিনী দিয়ে। নিরবে নিভৃতে তারা চালিয়ে যায় জীবন সংগ্রাম। কিশোরগঞ্জ শহরের গুরু দয়াল লেকে ঘুরে ঘুরে বেলুন বিক্রি করে ৮ বছর বয়সি ইমন।

ইমনকে আমি কাছে ডাকলাম। একটি বেলুন কিনলাম। তাকে পাশে বসিয়ে কিছুক্ষন গল্প করে জেনে নিলাম তার সংগ্রামী জীবনের দুখের গল্প। তার গল্প আমাকে কাঁদালো। ভাবালো। আমি বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে রইলাম ইমনের মায়া ভরা মুখের দিকে।

কিছুক্ষণ পর ইমন চলে যাবে। বিদায় চাইল। বিদায় দিতে ইচ্ছে হচ্ছিল না তবুও দিতে হল। বিদায় বেলায় তার মুখে এক টুকরো হাসি দেখার জন্য তার থেকে কেনা বেলুন তাকেই উপহার দিলাম। আসলে বেলুনটা আমার কোন প্রয়োজন ছিল না৷ শুধু ইমনকে খুশি করার জন্য কিনেছিলাম।

বিদায়ের মুহূর্তে ইমন পুষ্পের হাসি হাসল। সাথে হাসলাম আমি, আমাদের সাথে হাসল এক পৃথিবী।