বেফাকের প্রশ্ন ফাঁস; থলের বিড়াল

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

এপ্রিল ১৪ ২০১৯, ০৫:০৮

রেজাউল করিম আবরার:
কাসিম নানুতবি, শায়খুল হিন্দ, কাশ্মিরি, থানবি এবং মাদানির হে কওমি মাদরাসা! আজ তোমার লজ্জিত হওয়ার দিন। তোমার ঐতিহ্যকে আজ ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে মানুষ নামক কিছু দুপায়ী পশু। সামান্য কয়টা টাকার জন্য যারা শতবর্ষের একটি কাফেলাকে কলঙ্কিত করেছে, এরা কুকুর। কুকুরের চেয়েও আরো খারাপ।

গতকাল জুমুআর পর প্রথম খবর আসে প্রশ্ন ফাঁসের। আল্লাহ কসম করে বলি, আমার কিছু তালিবুল ইলমকে তখন কাঁদতে দেখেছি। এত দীর্ঘদিন কঠোর পরিশ্রম করে তারা পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছে! কিন্তু সে প্রশ্ন বিক্রি করতে এখন লোক এসেছে তাদের কাছে! এটাই আমাদের ঐতিহ্য! বেফাক এবং হাইআর মুখোশধারী কথিত মুরব্বিরা খারাপ হতে পারেন! কিন্তু আমাদের তালিবুল ইলমরা ঠিকই কেঁদেছে। এদের ইখলাসের কারণে হয়ত এতদিন আল্লাহ তাদের কূকর্ম আড়াল করে রেখেছিলেন।

গতকাল গিয়েছিলাম নারায়ণগঞ্জ বন্দর একটি সেমিনারে। সেমিনার শেষ করে রাত সাড়ে এগারোটার দিকে বেফাক এবং হাইআতুল উলইয়ার শীর্ষ কয়েকজন মুরব্বিকে ফোন দেই। একজন আত্মপক্ষ সমর্থনের চেষ্টা করলেন। জিজ্ঞাসা করলাম, আপনারা কী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন? বললেন, এখন অফিস বন্ধ হয়ে গেছে! আগামীকাল অফিস খোলার পর প্রশ্ন মিলিয়ে দেখার পর সিদ্ধান্তগ্রহণ করা হবে!

মেজাজটা পুরোই খারাপ হয়ে যায়! সারাদেশে তোলপাড় হচ্ছে! আর উনারা অফিস বন্ধ করে যার যার বাসায় আরামে বিশ্রাম করছেন! জীবনে কাউকে গালিগালাজ করি না। কিন্তু ওনাকে অনেকগুলো গালি দিলাম। হতভম্ব হয়ে ফোন রেখে দিলেন!

কওমি মাদরাসার নিরীহ তালিবুল ইলমদের টাকা দিয়ে বেফাক পরিচালিত হয়। সারা দেশে একযোগে পরীক্ষা চলছে! কিন্তু ওনাদের অফিসে বসার মতো কেউ নেই। প্রশ্নপত্র ফাঁস হলে হোক! বেফাকের একেকটা মিটিংয়ে শরিক হয়ে কেউ দশ হাজার টাকা আবার কেউ পাঁচ হাজার টাকা পান! বিভিন্ন ধরণের লবিং করেন! কখনো সেগুলো নিয়ে কিছু বলিনি। কিন্তু পরীক্ষার সময় সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হওয়ার পর যারা দ্রত অফিসে আসতে পারেন না, বেফাকের র্শীষপদে তাদের কে বসিয়েছে? একজন বললেন, আমি মাত্র ঘুম থেকে উঠলাম! খবর নিয়ে দেখছি! উনার নাম বললে আমার চাকরি থাকবে না! সারা দেশের হাজার হাজার তালিবুল ইলমদের ভাগ্য শুকরদের হাতে রেখে যারা ঘুমিয়ে পড়েন, তাদের নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে! আপনারা ঘুমিয়ে থাকলে, অফিসে আসার প্রয়োজনীয়তা অনুভব না করলে কে বলেছে হাজার হাজার তালিবুল ইলমদের দায়িত্ব নিতে? মাসে মাসে মোটা অঙ্কের বেতন গ্রহণ করতে?

উনারা নতুন অপরাধী নয়! নিরীহ তালিবুল ইলমদের টাকায় পরিচালিত শিক্ষাবোর্ডে নিজেদের শক্তি বাড়াতে সব ধরণের লবিং উনারা করেন! আর অফিসে যারা থাকেন, তাদের কথা সকলেরই জানা৷ বেফাক অফিসে একবার যে যায়, তাদের আচরণে বিরক্ত হয়ে ফিরে আসে। আমিও একবার এমন পরিস্তিতিতে পড়েছিলাম। বাধ্য হয়ে সরাসরি মহাসচিবকে গিয়ে বলি, আমি অমুকের ছেলে! আমার বাবা তিন বছর বেফাকের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ছিলেন! আপনাদের লোকদের ব্যবহার এতো খারাপ কেন? তিনি তখন অনেক আদর করে দ্রুত কাজ করে দেওয়ার নির্দেশ দেন!

আপনারা যারা বেফাকে আছেন, তারাই আজ এ লজ্জাজনক অধ্যায়ের সূচনা করেছেন! কোনো তালিবুল ইলম এর সাথে জড়িত নয়! একটু ভাবুন! আল্লাহর কাছে জবাব দিতে পারবেন? আমরা হতাশ নই। নানুতবি, শায়খুল হিন্দের কওমি মাদরাসাকে কেউ আটকিয়ে রাখতে পারবে না! যারা ষড়যন্ত্র করবে, তারা ধ্বংস হয়ে যাবে৷ কওমি মাদরাসা আবার মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে ইনশাআল্লাহ।