বাহুবল উপজেলা চেয়ারম্যানের অনিয়ম; ৫৫ হাজার টাকা প্রতারণার অভিযোগ

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জুন ২১ ২০২০, ০১:১৯

বাহুবল (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ খলিলুর রহমানের বিরুদ্ধে এক দরিদ্র যুবকের ৫৫ হাজার টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই যুবক ঘটনার ফিরিস্তি টেনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে জানা যায়, নারিকেলতলা গ্রামের আরজু মিয়ার পুত্র জিতু মিয়া একজন দরিদ্র পরিবারের সন্তান। দীর্ঘদিন যাবত ক্ষুদ্র ব্যবসা করে মা বাবা সহ স্ত্রী সন্তান নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এরই মাঝে আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে ব্যবসার কিছু জমানো টাকা ও স্থানীয় এনজিও অফিস থেকে ঋণ উত্তোলন করে একটি পিকআপন ভ্যান খরিদ করেন। ক্ষুদ্র ব্যবসা ও পিকআপ ভ্যানের আয় দিয়ে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করে বেশ ভালই চলছে সংসার। বিগত ৪ মাস পূর্বে ভাড়ায় সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা দিলে ওসমানীনগর থানা পুলিশ পিকআপটি আটক করে। এতে হতাশায় পড়েন যুবক জিতু এবং তিনি বিভিন্ন ব্যক্তির সহায়তার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরেন। তার এই বিপদ সংকট অবস্থা জেনে তাকে খবর দিয়ে এনে পিকআপটি ছাড়িয়ে এনে দেবেন বলে তাকে আশ্বস্ত করেন। এসময় চেয়ারম্যান পিকআপ ভ্যানের জরিমানা বাবদ ৩০ হাজার টাকা দিতে হবে বলেন। এতে সম্মত হয়ে সে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে ধার কর্জ করে চেয়ারম্যানের কথামত তার পুত্র ইসমাইলের হাতে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে দেন। এর আরো ২৫ হাজার টাকা লাগবে বলে চেয়ারম্যান তার পুত্র ইসমাইলকে পাঠান জিতুর কাছে। উপায়ন্তর না পেয়ে জিতু যোগাড় করে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে দেন ইসমাইলের হাতে। পিকআপটি ছাড়িয়ে আনতে ইসমাইল ওসমানীনগর থানায় গেলেও কোন কুলকিনারা করতে পারেননি। এদিকে ভূক্তভোগী যুবক প্রায় প্রতিদিনই তার পিকআপ ভ্যান পাওয়ার আশায় চেয়ারম্যানের কাছে ধর্ণা দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান রাগান্বিত হয়ে আরো এক দেড় মাস অপেক্ষা করতে বলেন। জিতু এবার ‘আমও হারান ছালাও হারান’ অবস্থায় পড়েন। এর পর থেকে সমুদয় টাকা ফেরতের দাবীতে গ্রামের বিশিষ্ট লোকদের নিয়ে চেয়ারম্যানের অফিস ও বাসায় কয়েক দফা ধর্ণা দেয়ার পরও টাকা ফেরত পাওয়ার কোন সম্ভাবনা দেখা যায়নি। এভাবেই অতিবাহিত হয় চারটি মাস। চেয়ারম্যান ও তার পুত্র ইসমাইলের আচরণে দরিদ্র যুবক জিতু মিয়া বুঝতে পারেন তার সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। অবশেষে জিতু ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এর অনুলিপি দেয়া হয় সিলেট বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক বরাবর। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্নিগ্ধা তালুকদার অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, অভিযোগটি আমি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, কর্তৃপক্ষই সিদ্ধান্ত দেবেন।

অভিযোগের ব্যাপারে বাহুবল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ খলিলুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান,আমার বিরুদ্ধে একটা কু-চক্র মহল মানহানীর জন্য উঠে পরে লেগেছে। তারই অংশ হিসেবে জিতুকে দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে। প্রজেক্টের কাজ না দেয়ায় রাসেল মিয়া নামে একব্যক্তি জিতুকে দিয়ে অভিযোগ করেছে।

অভিযোগকারী জিতু মিয়া জানান, আমি দরিদ্র মানুষ। আমার সাথে চেয়ারম্যান ও পুত্র ইসমাইল এমন কান্ডটি করা ঠিক হয়নি। আমি বিচার চাই,সাথে আমার টাকা ফেরত চাই।