বাহুবলের ফার্মেসী ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা আদায়; এসআইসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

এপ্রিল ২৯ ২০২০, ২৩:১১

বাহুবল (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি:হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার ৩ নং সাতকাপন ইউনিয়নের মানিকা বাজারের ইমাম মেডিকেল সেন্টারের স্বত্বাধিকারী ও পল্লী চিকিৎসক সোহেল মিয়ার কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে ৫০ হাজার থেকে কমিয়ে ১০ হাজার টাকা ও পরবর্তীতে তিন হাজার টাকা চাঁদা আদায়ের দায়ে এক এসআই,বাজার কমিটির সভাপতি সেক্রেটারী ও এক দারোগার সহযোগীকে দায়ী করে সহকারী পুলিশ সুপার বাহুবল সার্কেল এর কার্যালয়ে গত ২৭ মার্চ অভিযোগের একটি লিখিত আবেদন দাখিল করেছেন ভূক্তভোগী সোহেল মিয়া

এই আবেদনটি থানার আব্দুর রহমান নামে একজন স্টাফ গ্রহণ করেন। অভিযুক্তগণ হলেন-এসআই আনসুর আহাম্মেদ, মানিকা বাজার কমিটির সভাপতি আব্দুল কদ্দুছ, হরাইটেকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বাজার কমিটির সেক্রেটারী ফার্মেসী ব্যবসায়ী আব্দুর রহীম ও সানু।

সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়,গত ২২ এপ্রিল বাহুবল মডেল থানার এসআই (নিরস্ত্র) আনসুর আহাম্মেদ বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মানিকা বাজারে গিয়ে সোহেল মিয়ার ভিজিটিং কার্ড দেখে তিনি বলেন আপনার দোকান তো অবৈধ,আপনি অবৈধভাবে ঔষধ বিক্রি করছেন। আপনি আর এখানে ব্যবসা করতে পারবেন না। আপনার বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ রয়েছে। আপনি আর দোকান খুলবেন না”।

এ কথা বলে তিনি চলে যান। পরদিন এসআই (নিরস্ত্র) আনসুর আহাম্মেদ বাজারে ইমাম মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে সোহেল মিয়াকে বলেন- আমি গতকাল বলেছিলাম দোকান বন্ধ রাখার জন্য। আজ খুললেন কেন? আপনাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। ইউএনও আসলে ৫০ হাজার জরিমানা করবে। এসময় মেম্বার আব্দুল জব্বার ও আমিন আলী এসআই আনসুরকে জরিমানা না করার অনুরোধ করলে তিনি সেক্রেটারী আব্দুর রহীমের ফার্মেসীতে গিয়ে সভাপতির সাথে কিছুক্ষণ আলোচনা করে চলে যান।

সন্ধার পর সভাপতি আব্দুল কদ্দুছ, সেক্রেটারী আব্দুর রহীম ও সানু মিলে সোহেল মিয়ার ফার্মেসীতে গিয়ে সানুকে ৫শ টাকা ও এসআই (নিরস্ত্র) আনসুর আহাম্মেদকে ২৫শ টাকা দেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন সভাপতি। সোহেল মিয়া টাকা না দিতে চাইলে সভাপতি আব্দুল কদ্দুছ তাকে হুমকি দিয়ে বলেন এ বাজারে ব্যবসা করতে হলে আমাদের কথা মানতে হবে।

পরে সোহেল মিয়া ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে এসআই (নিরস্ত্র) আনসুর আহাম্মেদকে দেয়ার জন্য সভাপতির হাতে ২৫শ টাকা ও সানুকে ৫শ টাকা দেন। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত এসআই আনসুর আহাম্মেদ বলেন- ‘সোহেলের বিরুদ্ধে নারী সংক্রান্ত অভিযোগ ছিল,সেদিন আমি বাজারে গিয়ে তাকে সতর্ক করেছি এবং বাজার কমিটির সভাপতিকে দায়িত্ব দিয়েছি বিষয়টা দেখার জন্য। আমি কোন টাকা গ্রহণ করিনি। ‘ইউএনও’কে দিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করাবেন’ কথাটি বলেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি সত্যতা স্বীকার করেন। ‘ভ্রাম্যমান আদালত কি রায় দেবে’ তা আপনি অগ্রীম বলা সঠিক কিনা?এ প্রশ্নের উত্তর তিনি এড়িয়ে যান। এ ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী সেনারকান্দি গ্রামের বাসিন্দা মুশাহিদ মিয়া ও ছুরুক মিয়ার কাছে জানতে চাইতে তারা বলেন- ‘দারোগার সাথে বিষয়টি শেষ করতে সভাপতি কদ্দুছ মিয়া ফার্মেসী মালিক সোহেল মিয়ার কাছ থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আড়াই হাজার টাকা নেন। এসময় টেনু মাস্টারও ছিলেন। এ বিষয়ে জানতে বাহুবল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার পারভেজ আলম চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান- আবেদনের বিষয়টি বিস্তারিত জেনে আপনাকে জানাবো ।