বাংলাদেশ থেকে করোনাভাইরাসের প্রথম জিনোম সিকোয়েন্স তথ্য জমা

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

মে ১৩ ২০২০, ০০:০৬

ডা. রিফাত আল মাজিদ


বাংলাদেশ থেকে করোনাভাইরাস এর প্রথম জিনোম সিকোয়েন্স তথ্যটি জমা দিয়েছে চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন।

দেরীতে হলেও অবশেষে অত্যাবশ্যকীয় ভালো কিছুর শুরু হলো। আশা করি এটাই শেষ নয়। এগিয়ে আসবেন জিনোম সিকোয়েন্সিং-এ সক্ষম প্রতিটি সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ও গবেষকবৃন্দ।

বাংলাদেশে নভেল এই ভাইরাসটির গতি ও প্রকৃতি বুঝতে সাহায্য করবে জিনোম সিকোয়েন্সিং- যেমনটি আশা করেছে সিএইচআরএফ। কিন্তু একটি বা দুটি ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স থেকে এই তথ্য পাওয়া সম্ভব নয়। ভিন্ন ভিন্ন উৎস থেকে আসা ভাইরাস দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কোভিড-১৯ রোগটি মহামারী আকারে ছড়িয়ে দিয়েছে। তাই দেশের বিভিন্ন ভৌগলিক পয়েন্ট থেকে নমুনা সংগ্রহ করে সেই নমুনাগুলোতে উপস্থিত ভাইরাসগুলোর জিনোম সিকোয়েন্স করতে হবে। জানতে হবে ভাইরাসটির কি কি ধরনের পরিবর্তিত রূপ ছড়িয়ে আছে আমাদের দেশে। এর জন্য দরকার সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বিত উদ্দ্যোগ ও কার্যক্রম। একক উদ্দ্যোগে এই কাজটি করা এক প্রকারে অসম্ভব।

এই নভেল ভাইরাসে আক্রান্ত অনেকই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। আবার অনেকেই মৃত্যুবরণ করেছেন। জানা দরকার সুস্থ হওয়া মানুষগুলো ঠিক কোন কোন ধরনের পরিবর্তিত রূপের ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন। ভাইরাসটি প্রতিরোধকল্পে এই তথ্য জানা অতীব জরুরী।

সাধারনত মানুষ কোন জীবানু দ্বারা আক্রান্ত হলে তার শরীরে সেই জীবানুটির বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি লাভ করে, ফলে পরবর্তীতে সেই মানুষটি সাধারনত সেই জীবানুতে আর আক্রান্ত হয় না। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে করোনা ভাইরাসে কেউ আক্রান্ত হলে তার শরীরে ভাইরাসটির বিরুদ্ধে যথেষ্ট পরিমান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি লাভ নাও করতে পারে। সেক্ষেত্রে করোনায় সুস্থ হওয়া ব্যক্তি আবারো করোনায় আক্রান্ত হতে পারে। তাই করোনা প্রতিরোধে সেই ব্যক্তিকে হয়তো নির্দিষ্ট সময় পর পর প্রতিষেধক নিতে হতে পারে। আরো চিন্তার বিষয় এই যে বর্হিবিশ্বের কোন দেশ বা প্রতিষ্ঠান যদি করোনা ভাইরাসের প্রতিকারে কার্যকর কোন প্রতিষেধক আবিষ্কার করে ফেলে, তবে সেটি যে বাংলাদেশে সংক্রমণকারী ভাইরাসের পরিবর্তিত রুপটির বিরুদ্ধে কার্যকরী হবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই । সুতরাং, প্রয়োজন হতে পারে আমাদের দেশের মানুষদের জন্য কার্যকরী প্রতিষেধক আবিষ্কার করার প্রকল্প হাতে নেয়ার। তাই যত বেশী জিনোম সিকোয়েন্স তথ্য আমাদের হাতে থাকবে, কাজটি করা তত সহজ হবে আমাদের জন্য।

এরকম আরো সিকোয়েন্স জানা হলে বাংলাদেশের ভাইরাসটি সম্বন্ধে একটা ধারনা পাওয়া সহজ হবে। অন্য যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ করছে তাদের উদ্যোগও সফল হোক আশা করি।