ফতুল্লায় হত্যার পর লাশের সাথে ১০ দিন বসবাস!

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

এপ্রিল ১০ ২০১৯, ২২:১৪

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ব্যবসায়ী সেলিম চৌধুরী হত্যার ঘটনায় আটক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী

 

লাশ গুমের উদ্দেশে মাটি চাপা দেওয়া হয়। কেউ যাতে কিছু জানতে না পারে সেজন্য মাটির ওপর দেয়া হয় সিমেন্টের আস্তরণ। এমনকি সেই লাশের ওপর গত ১০ দিন ধরে খুনীরা চালিয়ে যাচ্ছিলেন ব্যবসায়িক কার্যক্রম!

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার ভোলাইল এলাকায় একটি গোডাউনের ভেতরে হত্যা করে লাশ মাটিতে পুঁতে রাখার ১০ দিন পর ঝুট ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান চৌধুরী ওরফে সেলিম চৌধুরীর (৫২) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

বুধবার বিকেলে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

১০ দিন আগে নিখোঁজ হওয়া ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রী রেখা আক্তারের জিডির তদন্ত করতে গিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ফয়সালকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে পুলিশ।

তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে লাশ পুঁতে রাখার রহস্য। ফয়সালের স্বীকারোক্তিতে বুধবার ভোলাইল মিষ্টির দোকানের পাশে একটি ঝুটের গোডাউনের ভেতরে মাটিতে পুঁতে রাখা মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, পার্টনারশিপে ঝুটের ব্যবসা করতেন কামরুজ্জামান চৌধুরী। ভোলাইলে ছিল তাদের ঝুটের গোডাউন। এই গোডাউনেই পার্টনারের সঙ্গে পাওনা টাকা নিয়ে বিবাদ হয় সেলিমের।

এর জের ধরেই তাকে হত্যা করা হয়। পরে লাশ গুমের উদ্দেশে মাটি চাপা দেওয়া হয়। কেউ যাতে কিছু জানতে না পারে সেজন্য মাটির ওপর দেয়া হয় সিমেন্টের আস্তরণ। এমনকি সেই লাশের ওপর গত ১০ দিন ধরে খুনীরা চালিয়ে যাচ্ছিলেন ব্যবসায়িক কার্যক্রম!

ফতুল্লা থানার উপ-পরিদর্শক মামুন আল আবেদ বলেন, ‘‘গত ৩১ মার্চ থেকে নিখোঁজ ছিলেন কামরুজ্জামান। রেখা আক্তারের জিডির সূত্র ধরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফয়সালকে আটক করা হয়েছিল। মূলত তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতেই সেলিম চৌধুরীর লাশটি উদ্ধার করা হয়। ৩১ মার্চ রাতেই সেলিমকে হত্যা করে লাশ মাটিতে পুঁতে রাখা হয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি।’’

ফয়সালের বরাত দিয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন বলেন, গোডাউনটি সেলিম চৌধুরীসহ তার পার্টনারদের তত্ত্বাবধানে ছিল। ৩১ মার্চ পার্টনারদের কাছে পাওনা টাকা ফেরত চাইতে ভোলাইলের গোডাউনে আসেন সেলিম চৌধুরী। পরে টাকা নিয়ে বাক-বিতণ্ডায় তাকে হত্যা করা হয়।

ফতুল্লার বক্তাবলী কানাইনগর এলাকার বাসিন্দা সেলিম চৌধুরী। পরিবার পরিজন নিয়ে ফতুল্লার শিবু মার্কেট এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। ৩১ মার্চ সকাল ১১টার দিকে সেলিম চৌধুরীর সাথে তার স্ত্রী রেখার শেষবারের মতো কথা হয়।

গত ৬ এপ্রিল সেলিম চৌধুরী নিখোঁজ রয়েছেন দাবি করে তার স্ত্রী রেখা আক্তার ফতুল্লা মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন।