প্রথম আলোর মিজানের কলমে উইঘুর মুসলিম ও আমি

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জানুয়ারি ১২ ২০২১, ১৮:৩৭

আবদুল হক

মিজানুর রহমান খানের উচ্চারণ ছিল অসম্ভব রকম সুন্দর, লেখার ভাষাও ছিল বেশ গোছানো—কিন্তু তাঁর নীতিবোধ সম্পর্কে কিছু বলতে পারি না। খুব সম্ভব তিনি বিক্রি হয়ে গিয়েছিলেন এবং বিক্রীত মাল শেষ পর্যন্ত আর ফেরত আনতে পারেন নি।

চীনের উইঘুর মুসলিমরা দুনিয়ায় সবচেয়ে দীর্ঘকাল ধরে নিপীড়িত জনগোষ্ঠী। মিজান সাহেব সিংকিয়াঙে ঘুরে ঘুরে এই মযলুমদেরকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী প্রমাণ করবার জন্যে প্রথম আলোয় ধারাবাহিক প্রতিবেদন করেছিলেন।

ব্যাপারটা এমন যে, একটা ছোট দ্বীপে একপাল হরিণ। তার চারদিকে বিশাল মুখব্যাদান করে ওঁৎ পেতে আছে শত শত কুমির। এক খেঁকশেয়াল ভেলায় চড়ে সেই দ্বীপ ঘুরে দৃশ্যটা দেখে বনের রাজার কাছে গিয়ে নালিশ করল যে, হরিণগুলো ছোটোছুটি করে অন্যায়ভাবে কুমিরদেরকে কষ্ট দিচ্ছে। অতএব তারা অপরাধী। এই অপরাধীদের কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।

কেউ একজন মিজান সাহেবকে এই উদ্ভট ও অসদুদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদন বন্ধ করতে বলেছিল। তিনি ভয় পেয়ে থেমে গেলেন বটে, কিন্তু ছোট আদালতে ঠুকে দিলেন মামলা। ফলে প্রতিবাদীকে আড়াই বছর সময় নষ্ট করতে হলো, কারাগারে।

মিজান সাহেব মারা গেছেন। ছোট আদালতের বাদী এখন বড় আদালতে হাজির। ছোট আদালতের আসামীও কিছুদিন পরে সেখানে যাবে এবং সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারকের আদালতে মযলুম মানবতার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবে।

তবে সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারক কোনো অন্ধ আইনের অধীন নন। তিনি ক্ষমাপরায়ণ এবং যা-খুশি করার ক্ষমতা রাখেন। ফলে তিনি কাউকে ক্ষমা করতে ইচ্ছে করলে সে বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করার কেউ নেই।