পাকিস্তানে নবী অবমাননাকারীকে আদালতেই গুলি করে হত্যা

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জুলাই ৩০ ২০২০, ০২:৪৪

পাকিস্তানে রসূল অবমাননাকারীকে আদালতেই গুলি করে হত্যা

পাকিস্তানের খাইবার পাখতুন খা প্রদেশের পেশোয়ারে রসূল অবমাননা মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আদালত কক্ষে বিচারকের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাটি বুধবার সকাল সেশন জজ শওকত আলীর আদালতে ঘটেছে।

পুলিশ কর্মকর্তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী আসামী তাহের আহমদ নাসীমকে যখন আদালতে মামলার শুনানির উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তখন হঠাৎ এক ব্যক্তি আদালত কক্ষে প্রবেশ করে তাহের আহমদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে যায়। যার পরেই লোকটি আদালত কক্ষে তাকে গুলি করে হত্যা করে। পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকারীকে আটক করা হয়েছে।

আলজাজিরা জানায়, তাহির আহমেদ নাসিম নামে ওই ব্যক্তি নিজেকে ইসলামের নবী বলে দাবি করেছিলেন। এর পর ধর্ম অবমাননার দায়ে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

২০১৮ সাল থেকে নাসিম পুলিশের হেফাজতে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননা আইনের পাকিস্তানি পেনেল কোডের ২৯৫-এ, ২৯৫-বি এবং ২৯৫-সি ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

বুধবার জেলা আদালতে মামলার শুনানি চলাকালীন নাসিমকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তাকে ছয়টি গুলি করা হয়।

পেশোয়ার থানার পুলিশ কর্মকর্তারা বিবিসি উর্দুর আজিজুল্লাহ খানকে জানিয়েছেন, আসামী তাহের আহমদ নাসীম পেশোয়ারের বাসিন্দা ছিলেন এবং বেশ কিছুদিন যাবত রসূল অবমাননা মামলায় কারাগারে ছিলেন।

পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারী আফগানিস্তানের বাসিন্দা। লোকটির নাম ফয়সাল। তার বিষয়ে আরো তদন্ত চলছে। পুলিশ তার নাম প্রথমে খালেদ বলেছিল। জানা গেছে, হত্যাকারী নিজের সঠিক নাম বলছিল না।

উল্লেখ্য, একটি সূতমতে রসূল অবমাননাকারী তাহের আহমদ নাসিমের নিকট আমেরিকার নাগরিকত্ব ছিল বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তা মনসূর আমানকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছেন, তারাও এধরনের তথ্য পেয়েছেন এবং এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের থেকে তথ্য সংগ্রহ করছেন।

তাহের আহমদের বিরুদ্ধে করা এফআইআর থেকে জানা যায়, সারবান্দ থানার নওশেরার বাসিন্দা ইসলামাবাদের এক মাদরাসা ছাত্রের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছিল। তাতে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছিল যে, তাহের আহমদ নাসীম রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শানে অবমাননা করেছে।

পুলিশকে দেয়া এ লিখিত দরখাস্তে বলা হয়েছিল, এ তালিবে ইলমের তাহের আহমদের সঙ্গে ফেসবুকে কথাবার্তা শুরু হয়। এরপর তারা পেশোয়ারে সাক্ষাত করে। যেখানে তাহের আহমদ এমন কিছু কথা বলে যা রিসালাত অবমাননার পর্যায়ে পড়ে।

এ ঘটনার পর পাকিস্তানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে যে, নিহত এ ব্যক্তি আহমদী তথা কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের লোক ছিলেন। তবে পাকিস্তানের কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি জনাব সালিমুদ্দীন এক বিবৃতিতে এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। কাদিয়ানী এই নেতা তার টুইটারে লিখেছেন, উল্লেখিত ব্যক্তিটি অবশ্যই একটি আহমদী (কাদিয়ানী) পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিল। কিন্তু সে কয়েক বছর পূর্বে এ দল থেকে বিচ্ছিন্নতা অবলম্বন করেছিল। তাই আহমদী জামাতের সঙ্গে তার কোন সম্পর্ক ছিল না।

বিবিসি, আলজাজিরা