পাঁচ লাখ টাকা দিন, মাহমুদ জাফরকে ফেরত দিব’

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জানুয়ারি ১৭ ২০২৩, ১৯:৩৯

মোল্লার বই ডটকমের নির্বাহী পরিচালক মাহমুদুল হাছানের মুক্তিপণ বাবদ পাঁচ লাখ টাকা দাবি করছে এক অজ্ঞাত ব্যক্তি। সেই সাথে টাকা পাঠানোর জন্য একটি বিকাশ নাম্বারও দেওয়া হয়েছে তার বাবাকে।

সেই বিকাশ নাম্বারে সূত্র ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাহমুদুল হাছানের খোঁজ পাওয়ার জন্য মাঠে কাজ করছে। বিকাশ নাম্বারের সিমের রেজিস্ট্রেশন তথ্য বলছে, যে ব্যক্তির নামে এই সিমটি রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে তার ঠিকানা ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলায়। কিন্তু সেই সিমের অবস্থান কখনও গোপালগঞ্জ, কখনও সিলেট ও ফরিদপুর, আবার ঢাকায় দেখাচ্ছে। ফলে অজ্ঞাত পরিচয় সেই ব্যক্তির অবস্থান সম্পর্কে ধাঁধাঁয় পড়ে গেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

মাহমুদুল হাছানের বাবা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তার ছেলে নিখোঁজের একদিন পর থেকে সাত থেকে আটবার মাহমুদুল হাছানের ফোন নাম্বার ব্যবহার করে এক ব্যক্তি কল করেছেন। সবশেষ সেই ব্যক্তির সাথে এক মিনিট ২৩ সেকেন্ড কথা হয়েছে জাফর আহমদের। সেই ব্যক্তির সাথে যতবার কথা হয়েছে তিনি শুধু একটি কথাই বলেছেন- আপনার ছেলেকে ফেরত দেওয়া হবে, যদি আপনি পাঁচ লাখ টাকা দেন। এরপর তার বাবাকে একটি বিকাশ নাম্বার দেওয়া হয়েছে এবং সেই বিকাশ নাম্বারে টাকাগুলো পাঠিয়ে দিতে বলা হয়েছে।

যাত্রাবাড়ী থানার এসআই মোহসিন আলী গণমাধ্যমকে জানান, মাহমুদুল হাছানের ফোনের সর্বশেষ অবস্থান ছিল গোপালগঞ্জ এলাকায়। সেই এলাকার নেটওয়ার্ক ধরে তিনি নিখোঁজের একদিন পর একজন পুরুষ তার বাবাকে ফোন দিয়েছিলেন বলে তার পরিবার জানিয়েছে। ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে বলা হয়েছে- তিনি বিষয়টি দেখছেন। এরপর থেকে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।‌ এর আগে নিখোঁজের সময় তার সবশেষ নেটওয়ার্ক ছিল কদমতলী এলাকার সাদ্দাম মার্কেট। কিন্তু সেদিনের পর মাত্র একবার ফোনটি চালু হয়েছে, এরপর থেকে বন্ধ রয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, তারা নিশ্চিত হয়েছেন মাহমুদুল হাছানকে কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তুলে নিয়ে যায়নি। তবে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থা সদস্যরা মাঠে কাজ করছেন। বিষয়টি কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকেও জানানো হয়েছে। তারাও কাজ করছেন।

জানা গেছে, মাহমুদুল হাছান নিখোঁজ হওয়ার আগে এক ব্যক্তি তাকে এক হাজার টাকা পাঠিয়ে কিছু বই কেনার জন্য কল করেন। এরপর থেকে ফোন নাম্বারটি বন্ধ ছিল। ফলে উদ্বিগ্ন ছিলেন তিনি। ‌ তার স্ত্রীকে জানিয়েছিলেন- এক ব্যক্তি এত টাকার বই অর্ডার করল, কিন্তু তার ফোন নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এরপর সর্বশেষ ৯ জানুয়ারি সেই ফোন নাম্বারটি খোলা পাওয়া যায়। সেদিন মাহমুদুল হাছান ফোন করে সেই ব্যক্তির ঠিকানা নিয়ে বইয়ের তালিকা অনুযায়ী সেগুলো নিয়ে পরদিন রওনা দেন। সেই ঠিকানা অনুযায়ী তিনি যেতে পেরেছেন কি না তা জানতে পারেনি তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। ‌মাহমুদুল হাছানকে যে ফোন নাম্বারটি দিয়ে কল করা হয়েছিল সেটির রেকর্ড বলছে শুধু গত এক বছরে তাকে সেই ব্যক্তি ফোন দিয়েছেন, আর কাউকে ফোন করেননি। ফলে সেই ফোন নাম্বারের রেজিস্ট্রেশন এবং ব্যক্তির পরিচয় নিয়ে নানা রহস্য তৈরি হয়েছে।