নামাজে মনোযোগ ধরে রাখার ছোট ও সহজ পদ্ধতি

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জানুয়ারি ১১ ২০১৯, ১৮:৩১

মাহবুব হোসাইন: আমরা যখন নামাজে দাড়াই তখন শয়তান আমাদের অন্তরে নানারকম প্ররোচনা দিয়ে নামাজে অমনোযোগী করে তোলার চেষ্টা করে, এতে অনেকের বেলায় শয়তান সফল হয় আবার অনেকের বেলায় সফল হতে পারেনা।

এর থেকে বাঁচতে হলে ও নামাজ শুদ্ধভাবে পড়তে হলে আমরা যদি নামাযে যা পড়ি মেশিনের মতো না পড়ে বুঝে পড়ার চেষ্টা করতাম তাহলে ইনশাল্লাহ শয়তান আমাদের নামাজকে নষ্ট করতে সফল হতে পারবে না।

নামাযে সূরা ফাতিহা পড়ার সময় এ হাদীসটির কথা খেয়ালে রাখলে এক একটি আয়াত পড়ার পর আল্লাহর প্রেমময় জওয়াবটা মনের কানে শুনবার জন্য বান্দাহকে থামতেই হবে। আল্লাহর জওয়াবে যে তৃপ্তি ও শান্তি তা তারাই বোধ করতে পারে, যারা আয়াতগুলো ধীরে ধীরে মজা নিয়ে পড়ে।

আউ’যুবিল্লা-হি মিনাশ শায়ত্বানির রাজিম’ ও বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম পড়ে সূরা ফাতিহা তিলাওয়াত করতে হবে।

হাদীসে আছে যে সূরা ফাতিহার এক এক আয়াত তিলাওয়াত করার সাথে সাথে আল্লাহ এর জওয়াব দেন। এ হাদীসের কথাগুলো এমন আবেগময় ভাষায় বলা হয়েছে যা বান্দাহর মনে গভীর দোলা দেয়।

হাদীসটি নিম্নরূপ :

হাদিসটির অর্থ : হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেলন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি :

আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি নামাজকে আমার ও আমার বান্দাহর মধ্যে দু-ভাগে ভাগ করেছি। আর আমার বান্দাহ আমার নিকট যা চায় তাই পাবে।

বান্দাহ যখন বলে, “আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন।”

অর্থ : যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তালার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা। তখন আল্লাহ বলেন, “ আমার বান্দাহ আমার প্রশংসা করল।”

যখন বান্দাহ বলে “আর রাহমানির রাহীম”।

অর্থ :যিনি নিতান্ত মেহেরবান ও দয়ালু। তখন আল্লাহ বলেন আমার বান্দাহ আমার গুণ গাইল” যখন বান্দাহ বলে “মালিকি ইয়াওমিদ্দীন ”

অর্থ : যিনি বিচার দিনের মালিক। তখন আল্লাহ বলেন “আমার বান্দাহ আমার গৌরব বর্ণনা করল”

যখন বান্দাহ বলে, “ইয়্যাকা না বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাসতাঈন”
অর্থ :আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি।

তখন আল্লাহ বলেন “এ বিষয়টা আমার ও আমার বান্দাহর মাঝেই রইল। আর আমার বান্দাহর জন্য তাই যা সে চাইল (অর্থাৎ আমার ও আমার বান্দাহর মধ্যে এ চুক্তি হলো যে সে আমার কাছে চাইবে, আর আমি তাকে দেব)।

যখন বান্দাহ বলে “ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকীম সিরাতাল্লাযীনা আন আমতা আলাইহিম গাইরিল মাগদূবি আলাইহিম ওয়ালাদ দোয়াললীন” আমিন।

অর্থ :আমাদেরকে সরল পথ দেখাও, সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।”

তখন আল্লাহ বলেন, এটা আমার বান্দাহর জন্যই রইল আর আমার বান্দাহর জন্য তা ই যা সে চাইল।”

শুধুমাত্র আমরা যদি অন্তত সুরা ফাতিহার এই অর্থগুলিকে আমাদের মনে বসিয়ে নেই তাহলেও নামাজে অনেকাংশেই আমাদের মনোযোগ ধরে রাখা সম্ভব। এছাড়াও আমারা সাধারণত নিয়মিত নামাজে যে ছোট ছোট সুরা গুলি পড়ি সেগুলির অর্থও পড়ে মনে রাখতে পারি, রুকু সিজদাহর তাসবিহ গুলির অর্থ গুলিও খুব সহজেই মনে রাখা সম্ভব। এভাবে যদি আমারা কি তিলাওয়াত করছি তার মর্মার্থ বুঝতে সক্ষম হই তাহলে নামাজে অনেক বেশি মনোযোগী হওয়া সম্ভব। আল্লাহ তায়ালা আমাদের বুঝার তাওফিক দিক, আমীন।