নবীজির মহানুভবতা ও সাহাবিদের নবীপ্রেম

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জুন ১৫ ২০২৩, ২২:৫২

শরীফ আহমদ: বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবির্ভাবের পূর্বে সমগ্র পৃথিবী ছিল অন্ধকারে আচ্ছন্ন। অনাচার,অবিচার, ব্যভিচার, নৃশংসতা ও পাপাচারে টইটম্বুর ছিল চতুর্দিক।তখন আরবের অবস্থা ছিল আরো বেশি শোচনীয়। জাহিলি যুগের সেই বিভৎস সময়ে মানুষ ছিল নিজ অধিকার থেকে বঞ্চিত। আরবদের নৈতিক চরিত্র এতটাই বিগড়ে গিয়েছিল যে,যার দরুন মদ্যপান,নারীসম্ভোগ,গোত্রীয় দ্বন্দ্ব, বেহায়াপনা ছিল তখনকার আরবের সাধারণ চিত্র!মনুষ্যত্বহীন সেই সময়ে নারী জাতি ছিল সবচে বেশি অবহেলিত, গৃহপালিত পশুর চে’ খারাপ আচরণ করা হত নারীদের সাথে, এমনকি কন্যা-সন্তান জন্ম নিলে জীবন্ত পুঁতে ফেলা হত। যুদ্ধ ছিল তাদের অস্থি-মজ্জায় মিশে এবং একে অপরকে হত্যা করা ছিল ক্রিড়া কৌতুকের মতো!অনেক সময় মামুলি বিষয় রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের কারণ হতো।

সেই দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় মহান প্রভুর ইশারায় উদয় হলো এক আলোকোজ্জ্বল সূর্যের। যার আলোকরশ্মি পুরো দুনিয়াকে করলো আলোকিত, সুশোভিত।

সৃষ্টির উষালগ্ন থেকেই এই ধূলির ধরায় আগমন ঘটেছে অসংখ্য মহামানবের। কিন্তু পৃথিবী স্বীকার করে নিয়েছে যে, সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হলেন রাসূলে আরাবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। যুগে-যুগে যেসকল মহামানবের আগমনে পাপ-পঙ্কিলতায় নিমজ্জিত মানবজাতি সত্যের সন্ধান পেয়ে ধন্য হয়েছে, যাদের সত্যোজ্জ্বল আলোকচ্ছটায় বিশ্ব প্রকৃতি উৎফুল্ল হয়েছে, বিদায় নিয়েছে অন্যায়, অসত্য ও জুলুম– আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ ﷺ তাঁদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম।

প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ ﷺ এর পূতঃপবিত্র জীবনের প্রতিটি কথা বিস্ময়কর, চিরস্মরণীয়, চিরঅনুকরণীয়। তাঁর আদর্শ অনিন্দ্যসুন্দর, সার্বজনীন। তাঁর সাহাবাদের তিনি প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। তাঁরা তাঁর সান্নিধ্য লাভে ধন্য হয়েছেন এবং সমগ্র মানবজাতির জন্য আদর্শ হয়েছেন। তিনি এমন এক উৎকৃষ্ট সমাজ রেখে গেছেন, যার নজীর পৃথিবীর ইতিহাসে নেই। তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে পরবর্তীরাও উৎকর্ষের সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছাতে পারে।

সাহাবায়ে কেরাম নবীজি ﷺ কে নিজেদের সবকিছুর চে’ বেশি ভালোবাসতেন, নবীজির ভালোবাসার তরে নিজেদের সর্বস্ব বিলীন করে দিতে কুণ্ঠাবোধ করতেন না; এ কারণেই গোটা উম্মতের মধ্যে সাহাবায়ে কেরাম শ্রেষ্ঠ।

সাহাবায়ে কেরাম প্রিয় রাসুল ﷺ এর প্রতি যে ভক্তি-অনুরক্তি পোষণ করতেন এবং তাঁর যেভাবে আনুগত্য প্রকাশ ও তাঁর অনুসরণ করতেন তা শুধু বিস্ময়করই নয় বরং কল্পনাতীতও। পৃথিবীর কোনো মানুষের প্রতি এমন ভক্তি-মহব্বত এবং অনুরক্তি করা হয়েছে — ইতিহাসে এর কোনো দৃষ্টান্ত নেই।

এজন্য তাঁরাও হয়েছেন অনুসরণীয়-অনুকরণীয়।

অত্যন্ত দুঃখ এবং পরিতাপের বিষয় হলো আমরা মুখে-মুখে স্বীকার করি “নবীজিকে ভালোবাসি” কিন্তু আমাদের এই ভালোবাসা প্রকাশ পায় না। নবীজির ভালোবাসা আমাদেরকে আন্দোলিত করে না, আমাদের জীবনকে পরিবর্তন করে না। আমাদের জীবন সৌষ্ঠব ও সুগঠিত হয় না। সাহাবায়ে কেরাম নবীজি ﷺ কে কেমন ভালোবাসতেন এ সম্পর্কে নিম্নে তিনটি ঘটনা বলছি:

এক.

🔹নারী সাহাবির নবীপ্রেম🔹

উহুদের যুদ্ধ শেষ। বিশ্বনবীসহ (ﷺ) সাহাবাগণ যুদ্ধক্ষেত্র থেকে মদিনায় ফিরছিলেন। তারা বনূ দীনার গোত্রের পাশ দিয়ে যখন যাচ্ছিলেন তখন হযরত সুমাইয়া বিনতে কায়েসের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। যুদ্ধ ফেরত সাহাবারা হযরত সুমাইয়াকে জানালেন, তোমার স্বামী, ভাই ও বাবা যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন।

হযরত সুমাইয়া বিনতে কায়েস তার স্বামী, ভাই ও বাবার শাহাদাতের কথা শোনার পরও কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে জানতে চাইলেন: নবীজি কেমন আছেন? তিনি বেঁচে আছেন তো?!

তাঁরা (যুদ্ধ ফেরত সাহাবারা) বললেন: ‘আপনি যেমন কামনা করছেন। আলহামদুলিল্লাহ! তিনি ভালো আছেন। এবার হযরত সুমাইয়া বললেন: ‘তাহলে তাঁকে একটু দেখাও। আমি তাঁর জ্যোতির্ময় চেহারা মোবারক একটু দেখে নিই।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি ইশারা করে তাঁকে দেখানো হলো। দেখা মাত্রই তিনি চিৎকার করে বলে উঠলেন: كُلّ مُصِيبَةٍ بَعْدَكَ جَلَلٌ

‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনাকে সুস্থ পাবার পর সব বিপদ (স্বামী, ভাই ও বাবার মৃত্যু) আমার কাছে তুচ্ছ।’ অর্থাৎ এখন আর আমার মনে আমার স্বামী, ভাই বা বাবাকে হারানোর কোনো কষ্ট নেই। আপনাকে সুস্থ পেয়ে সব কিছুই আমি ভুলে গেছি।’ (আলবিদায়া ওয়ান নিহায়া,সীরাতে ইবনে হিশাম ২/৯৯)

দুই.

🔹হযরত সাওয়াদ রাযিয়াল্লাহু আনহুর ভালোবাসা🔹

বদর যুদ্ধের সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যুদ্ধের সারি সোজা করছেন। তাঁর হাতে একটি তীর ছিল। হজরত সাওয়াদ রাযিয়াল্লাহু আনহু (ইচ্ছাকৃতভাবে) সারির একটু সামনে দাঁড়িয়ে যান। বিশ্বনবি তার সামনে এসে তাকে তীর দিয়ে মৃদু খোঁচা দেন; আর বলেন, সারি সোজা করে দাঁড়াও।

এবার হযরত সাওয়াদ রাযিয়াল্লাহু আনহু নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলেন, আপনি আমাকে তীর দিয়ে খোঁচা দিয়ে কষ্ট দিয়েছেন। আমি প্রতিশোধ নিতে চাই!

নবীজি সাওয়াদের হাতে তীর দিলেন আর নিজের পেট থেকে কাপড় সরালেন এবং সাওয়াদকে প্রতিশোধ নিতে বললেন। এ সুযোগে সাওয়াদ রাযিয়াল্লাহু আনহু নবীজিকে জড়িয়ে ধরলেন এবং চুমু খেতে শুরু করলেন।

নবীজি ﷺ বললেন, সাওয়াদ! এমন করলে কেন? তিনি বললেন, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ! সামনে যুদ্ধ। বাঁচবো কিনা মরবো জানি না। মৃত্যুর আগে আপনার শরীরের একটু স্পর্শ পাওয়ার জন্যই এমনটি করেছি।’ (সীরাতে ইবনে হিশাম)।

তিন.

🔹হজরত জায়েদ ইবনে দাসানা রাযিয়াল্লাহু আনহু’র ভালোবাসা🔹

হযরত জায়েদ ইবনে দাসানা রাযিয়াল্লাহু আনহু কাফিরদের হাতে বন্দী হওয়ার পর পাপিষ্ঠরা তাকে শূলে চড়ানোর আয়োজন করে। তামাশা দেখার জন্য সমবেত হয় অনেক লোক। আবু সুফিয়ান (তখনো ইসলাম গ্রহণ করেননি) তিনি নরম সুরে জিজ্ঞেস করলেন, জায়েদ! সত্যি করে বলো তো, আল্লাহর শপথ দিয়ে তোমাকে জিজ্ঞেস করছি, তুমি কি এটা পছন্দ করো যে, তোমার পরিবর্তে মুহাম্মদের গর্দান উড়িয়ে দেয়া হোক আর তোমাকে হাসিমুখে তোমার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হোক। হযরত জায়েদ রাযিয়াল্লাহু আনহু দৃঢ়কণ্ঠে জবাব দিলেন: আল্লাহর শপথ! নবীজির যাত্রাপথে একটি কাঁটা লুকিয়ে রাখা হবে আর আমি ঘরে বসে আরাম করব, এতটুকুও আমার সহ্য হবে না।

হযরত জায়েদের জবাব শুনে সেদিন মক্কার কাফেররা হতভম্ব হয়ে গিয়েছিল। আরব নেতা আবু সুফিয়ান মন্তব্য করেছিলেন, “মুহাম্মদের প্রতি তার সাথীদের যে ভালোবাসা আমি দেখেছি, অন্য কারো প্রতি এমন ভালোবাসা আমি আর কখনো দেখিনি”।

এই হলো সাহাবায়ে কেরামদের রাসূলপ্রেমের হৃদয়ছোঁয়া কয়েকটি দৃষ্টান্ত।

তাই প্রিয় নবীর উম্মত হিসেবে আমাদের মনেও তার প্রেম ভালোবাসা জাগাতে হবে। বাস্তবতার আলোকে ফুটিয়ে তুলতে হবে তাঁর আদর্শ। তবেই আমরা শামিল হতে পারব তাঁদের মাঝে- যারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বাস্তবেই ভালোবেসে আশেকে রাসূল হয়েছেন।

নবীজির মহানুভবতা

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দয়া ও মহানুভবতার অনন্য দৃষ্টান্ত ছিলেন। কঠিন পরিস্থিতিতেও তাঁর মধ্যে ফুটে উঠত দয়া ও মহানুভবতা। শত্রু-মিত্র, মুসলিম-অমুসলিম, ধনী-গরিব সবার প্রতি তিনি মহানুভব ছিলেন। তাঁর উদারতা ও মহানুভবতায় আকৃষ্ট হয়ে অনেকেই ইসলাম গ্রহণ করেছেন।তিনি তাঁর সুমহান আদর্শ দিয়ে জয় করে নিয়েছিলেন পৃথিবীবাসীর হৃদয়।

হাদিসে তাঁর মহানুভবতার বৈশিষ্ট্য এভাবে বর্ণিত হয়েছে, ‘তিনি ছিলেন প্রশস্ত হৃদয়-মহানুভব। সত্যবাদিতায় সবার আগে, নম্রতা আর কোমলতায় অনন্য, আচার-আচরণে অভিজাত। প্রথমে যে তাঁকে দেখত- ভয় করত। কিন্তু যখনই কেউ তাঁর সঙ্গে মিশত তাঁকে ভালোবাসতো।’ (তিরমিজি)

তাঁর এ মহান আদর্শের কথা মহান আল্লাহ তাআলা মহাগ্রন্থ আল কুরআনে উল্লেখ করেছেন ” আপনি অবশ্যই মহান চরিত্রের অধিকারী। (সূরা কলম -৪)

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মহানুভবতার দৃষ্টান্ত:—

এক.

যায়েদ ইবনে সা‘নাহ। একজন ইহুদী। একবার নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার থেকে কিছু ধার নিয়েছিলেন। পরিশোধের সময় এখনো আসেনি। আরো তিন দিন পর পরিশোধের কথা। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাঁটছিলেন। সাথে ওমর রা.। এমন সময় হঠাৎ সেই ইহুদী তেড়ে এসে নবীজির কাপড় গুটিয়ে ধরল। কণ্ঠে তার কর্কশ স্বর। গলায় বজ্রধ্বনি- তোমরা বনী আবদুল মুত্তালিবের লোকেরা ঋণ পরিশোধে বড় টালবাহানা করো!

ওমর রা. এর মত বীর-বাহাদুরের সামনে প্রিয় নবীজির সাথে এমন আচরণ! তিনি কি আর সহ্য করতে পারেন! গর্জে উঠলেন ওমর রা.। এ দেখে নবীজি ﷺ হাসছিলেন মিটমিট করে। একটু পর কোমলকন্ঠে বললেন- ওমর! আমি এবং সে দু’জনই তোমার কাছে অন্য কিছুর মুখাপেক্ষী ছিলাম। তুমি আমাকে সুন্দরভাবে ঋণ পরিশোধ করতে বলতে। আর তাকে বলতে- সুন্দরভাবে পাওনা তলব করতে।

সুবহানাল্লাহ্! কত সুন্দর উত্তর! একজন সাহাবীকে বলছেন, নিজেকে সদুপদেশ দেওয়ার জন্য। কত বড় বিনয়! নবীজি ﷺ বললেন- আসলে ঋণ পরিশোধের আরো তিন দিন বাকি আছে। এরপর ওমর রা.-কে বললেন, তার পাওনা পরিশোধ করে দাও এবং বাকি এ তিন দিনের হিসেবে তাকে আরো ত্রিশ সা পরিমাণ বাড়িয়ে দাও।

নবীজির এ মহানুভবতা ইহুদীর মনে দাগ কাটল। ইহুদী বুঝল, তার আচরণটা অন্যায় হয়েছে। সময়ের আগেই সে পাওনা চেয়েছে। চাওয়ার ধরণটাও হয়েছে খুব খারাপ। একজন মানুষকে এভাবে কাপড় চেপে ধরা ঠিক হয়নি। কিন্তু এরপরও যে তিনি কিছুই বললেন না! উল্টো আরো বাড়িয়ে দিতে বললেন। এমন ভালো মানুষও কি হয়!

নবীজির (সা.) এ অনুপম আচরণে বদলে গেল ইহুদীর মন। অন্ধকার ছেড়ে সে পেল আলোর সন্ধান। আলোকিত জীবনের, আলোকিত ভুবনের। নবীজির ক্ষমা ও মহানুভবতা দেখে ইসলাম গ্রহণ করে ধন্য হল চিরজীবনের জন্য। (মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ২২৩৭,মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস ১৩৮৯৮)

দুই.

মহানবী হযরত মুহাম্মদ ﷺ যখন মদীনায় আসেন প্রসিদ্ধ মতে আনাস রাযিয়াল্লাহু আনহুর বয়স তখন দশ বছর। একদা আনাস রাযিয়াল্লাহু আনহুর মা একদিন তাঁর হাত ধরে রাসূল ﷺ এর কাছে নিয়ে যান। এবং বলেন: ইয়া রাসূলাল্লাহ! আনসারদের প্রত্যেক নারী-পুরুষ আপনাকে কিছু না কিছু হাদিয়া দিয়েছে। আমি তো তেমন কিছু দিতে পারছি না। আমার এই ছেলেটি আছে, সে লিখতে জানে। এখনও সে বালেগ হয়নি। আপনি তাকেই গ্রহণ করুন। সে আপনার খিদমাত করবে। সেই দিন থেকে একাধারে দশ বছর যাবত রাসূল ﷺ খিদমাত করেছিলেন হযরত আনাস রাযিয়াল্লাহু আনহু। রাসূল ﷺ এর মহানুভবতায় সিক্ত হযরত আনাস রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন: ‘আমি ১০ বছর রাসূল ﷺ এর খেদমত করেছি। আমার কোনো কাজে আপত্তি করে তিনি কখনো বলেননি, এমন কেন করলে? বা এমন করোনি কেন?’ (সহিহ বুখারি, মুসলিম)।

তিন.

হজরত খাদিজা রা. উকাজ মেলা থেকে জায়েদকে কিনে এনেছিলেন। তিনি বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্নেহ-মমতায় বড় হতে লাগলেন। বাবা-চাচা তাকে বিপুল ধনসম্পদের বিনিময়ে ফেরত নিতে এলে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা সত্ত্বেও তিনি তাদের সাথে যাননি। বরং তাদেরকে বলেছিলেন, আমি মহান ব্যক্তির মহানুভবতা ও উদারতা সম্পর্কে অবগত। তাঁর সান্নিধ্যের বিনিময়ে দুনিয়ার অন্য কোনো সান্নিধ্য আমার কাম্য নয়।’ (মিশকাত)।

আমরা তো এমন মহানুভব নবীরই উম্মত। তাই এসো প্রতিজ্ঞা করি- আমরা কখনো কাউকে কষ্ট দেব না। কেউ আমাদের কষ্ট দিলে কিংবা অন্যায় আচরণ করলে উদারমনে তাকে ক্ষমা করে দেব। আমরা ক্ষমাশীল মানুষ হতে চেষ্টা করব। তাহলে ক্ষমাশীল আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করে দেবেন। আমাদের জীবন পরিচালিত হোক বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ ﷺ এর দেখানো পথে।

 

লেখক: ফাযিল,জামেয়া ক্বাসিমুল উলূম দরগাহ হযরত শাহজালাল রহ. সিলেট।