দীর্ঘশ্বাস

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

সেপ্টেম্বর ২০ ২০১৮, ১০:৪৮

নাসিম মুমতাজী: ওই পথে কে হেঁটে যায়? পদছায়া! গাছের মগডালে শালিক-পরিবার জুড়ে দিলো আর্তনাদ৷ ভেঙে খানখান হয়ে গেল ঘুমন্ত নীরবতা৷ পূর্বদিগন্তে এখন আর শিশু রবি উঠে না৷ ওই প্রান্তে সুখের কোনো বীণ বাজে না৷ সুর শোনা যায় না৷ ধ্বনিত হয় না উল্লাসের প্রতিধ্বনি৷ সান্ধ্যলালিমা গায়ে মেখে পাখি ফেরে আপন নীড়ে৷ আজানের সুর ধ্বনিত হয় না ওই মিনার চূড়ায়—অসংখ্য পাখি যেখানে চক্কর কাটে৷ চিলোকোঠার বিষণ্ণ চড়ুই দম্পতি দরবারের সেই জৌলুশ দেখতে পায় না আর৷ এখানে সেই মেঠোপথ৷ দুই পাশে দেবদারু৷ সারিবদ্ধ৷ ঠায় দাঁড়িয়ে৷ মৃদু লয়ে নড়ে তার পাতাগুলো৷ পথের উপর দিয়ে যায় না কোনো শাহসওয়ার৷ সবই যেন স্থবির৷ নির্জীব পুরো দুনিয়া৷ বিপণ্ন নদীটির কথা ভুলে গেছে সবাই—মুজাহিদের শ্রান্ত ঘোড়ার তৃষ্ণা নিবারণে যে অপেক্ষমান৷ পাথরে উট বেঁধে কেউ আর ঝরণার নিটোল পানি পান করে না৷ বিস্ফারিত নয়নে কেউ তাকিয়ে থাকে না উমুবি মসজিদের দেয়ালে৷ অবাক বিস্ময়ে কেউ ভাবে না মদিনাতুজ জোহরার কথা৷ কর্ডোভার প্রাসাদ থেকে কেউ বের হয় না—উইরোপিয়ান দাম্ভিকদের উদ্ধত তরবারি ছিনিয়ে আনতে৷ আলহামরার গাম্ভীর্য শ্রদ্ধা জাগায় শুধু! বিপুল উপহার আর বহুমূল্যের উপঢৌকন শোভা বাড়াচ্ছে কেবল তুরস্কের মিউজিয়ামের৷ নতুন করে কোনো রাষ্ট্রদূত ধর্ণা দেয় না তোপকাপি প্রাসাদের দুয়ারে৷ এ পথ কত চেনা—অথচ কত অচেনা! ভেবে ভেবে বুকের অলিন্দে আছড়ে পড়ে একপশলা দীর্ঘশ্বাস৷