তুরস্ক সফরে তাফাজ্জুল হক হবিগঞ্জী’র নেতৃত্বে ইউকে জমিয়তের ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জুন ২৫ ২০১৯, ২০:১৫

একুশে জার্নাল ডেস্ক: তুরস্কের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষালয় সুলায়মানিয়া মাদরাসার দাওয়াতে তুরস্কের ঐতিহাসিক স্থান ও স্থাপনা পরদর্শনের উদ্দেশ্যে ইউকে সফররত জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহসভাপতি শায়খুল হাদীস আল্লামা তফাজ্জুল হক হবিগঞ্জীর নেতৃত্বে এবং ইউকে জমিয়তের সভাপতি মাওলানা শুয়াইব আহমদের ব্যবস্থাপনায় জমিয়ত নেতৃবৃন্দের একটি প্রতিনিধি দল তুরস্কের উদ্দেশ্যে গত ২০ জুন লণ্ডন ত্যাগ করেছেন।উল্লেখ্য বিশ্বের বহু দেশে ছড়িয়ে রয়েছে সুলায়মানিয়া মাদরাসার প্রায় ১০ হাজার শাখা। এসব মাদরাসায় দ্বীনি শিক্ষার পাশাপাশি জেনারেল এডুকেশন প্রদান করা হয়।

প্রতিনিধি দলটি তুরস্কের ঐতিহাসিক ওসমানী খেলাফতের স্মৃতি বিজড়িত স্থানসমূহ ঘুরেফিরে দেখবেন এবং বর্তমান তুরস্কের আর্থসামাজিক ও আদর্শিক অবস্থান সম্পর্কে ধারণা লাভের চেষ্টা করবেন।

দশ সদস্যের প্রতিনিধি দলে রয়েছেন আলেমকুল শিরোমণি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র সহ সভাপতি হযরত মাওলানা তাফাজ্জুল হক সাহেব হবিগঞ্জী, ইউকে জমিয়তের সিনিয়র সহ সভাপতি বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মাওলানা মুফতি আবদুল মুনতাকিম, সহ সভাপতি মাওলানা আওলাদ হোসাইন জগদলী, জেনারেল সেক্রেটারি মাওলানা সৈয়দ তামীম আহমদ, ট্রেজারার হাফিজ হোসাইন আহমদ বিশ্বনাথী, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজ জিয়াউদ্দিন, নির্বাহী সদস্য জনাব কয়েস আহমদ, ইকবাল হোসাইন, মিডিয়া এক্টিভিস্ট বুলবুল আহমদ প্রমুখ।

প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মাওলানা মুফতি আবদুল মুনতাকিম সফরের প্রথম দিন এবং দ্বিতীয় দিনের কিছু স্মৃতি তাঁর কলামে তুলে ধরেছেন।
উল্লেখ্য শায়খ সোলায়মান হিলমী তোনাহান রাহমাতুল্লাহি আলাইহি তুরস্কের ইতিহাসে বড় মাপের এক জন আল্লাহর ওলী ও সংস্কারক অতিবাহিত হয়েছেন । ১৯৫৯ সনে কালজয়ী এ মহান ব্যক্তিত্বের ইনতেকাল হয়। কিন্তু দীর্ঘ একটা সময়কাল অতিবাহিত হওয়া সত্তেও আজ অবধি তুরস্কের সাধারণ মানুষ শায়খ সোলায়মান কে ভুলতে পারেনি । গত ২১ জুন পবিত্র জুমার দিন আমরা তাঁর পবিত্র মাজার যিয়ারতে যাই। এই সংস্কারকের প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসা সোলায়মানিয়ার দাওয়াতেই আমাদের চলমান সফর । প্রায় দশ হাজার শাখা প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠানটি এখন হেদায়াতের এক অতুলনীয় মহিরুহ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে সামর্থ হয়েছে । শুধু ইস্তাম্বুল শহরে প্রায় পাঁচ শত শাখা কাজ করে যাচ্ছে । এ সবের মধ্যে অবশ্য বড়মাপের বেশ ক’টি প্রতিষ্ঠান দেখবার মতো রয়েছে । আমরা জুমার নামায আদায়ের জন্য এমনি একটি শাখায় গমন করি । যাই হোক বর্তমান সময়ে সোলায়মানিয়া মাদ্রাসার মাধ্যমে যত বেশি দ্বীনি ও শিক্ষামূলক কাজ তুরস্কে ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আন্জাম দেয়া হচ্ছে, তা যে কাউকে সারপ্রাইজ করার জন্য যথেষ্ট । জুমার পর মাদ্রাসার বিভিন্ন অফিস পরিদর্শনের সুযোগ হয়। অফিস গুলো সৌন্দর্য, প্রশস্ততা, পরিচ্ছন্নতা এবং পরিপাটি হওয়ার ক্ষেত্রে অনেক চমৎকার ও অসাধারণ । এর পর আমরা সোলায়মানিয়া মাদ্রাসার আরেকটি ভিন্নধর্মী ক্যাম্পাসে আসরের সময় পৌঁছাই । এই ক্যাম্পাসের অপূর্ব সৌন্দর্য, বৈশিষ্ট্য এবং সুযোগ সুবিধার বিস্তারিত বর্ণনা দিতে গেলে দীর্ঘ প্রবন্ধ লেখলেও আলোচনা হয়ত শেষ হবেনা । আধুনিক শিক্ষিত সমাজকে দ্বীনি শিক্ষার প্রতি আকৃষ্ট করে তোলার জন্য সুদূরপ্রসারী চিন্তা নিয়ে এতো দীর্ঘ মেয়াদি কোন পরিকল্পনা কোথাও আছে বলে জানিনা । গত কাল শুক্রবার দীর্ঘরাত পর্যন্ত আমরা সোলায়মানিয়া মাদ্রাসার আলোচ্য ক্যাম্পাসে ব্যবস্থাপক ও তত্ত্বাবধায়ক দের সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হই । এর দ্বারা একে অন্যের ভিউ জানার ও মতবিনিময়ের সুযোগ হয় । আল্লামা তাফাজ্জুল হক মুহাদ্দিস হবিগঞ্জী হাদীসে রাসূল পেশ করে গুরুত্বপূর্ণ নাসীহাত পেশ করেন ।
এর পর তুর্কীি ভিত্তিক ঐতিহাসিক সোলায়মানিয়া মাদ্রাসার দাওয়াতে আমাদের দ্বিতীয় দিনের সফর। দ্বিতীয় দিনে আমরা প্রথমে সোলায়মানিয়া মাদ্রাসা পরিচালিত হযরত আবু আইয়ূব আনসারী (রাঃ) হিফযুল কোরআন মাদ্রাসা দেখতে যাই । মাদ্রাসাটি অনেক আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । তিন শতাধিক বছর পুরনো বলা হয় । এখানে সকালের নাশতা সেরে কাফেলার মধ্যমণি শায়খুল হাদীস মাওলানা তাফাজ্জুল হক হবিগঞ্জী সম্মিলিত মোনাজাত করেন । এখান থেকে হযরত আবু আইয়ুব আনসারী (রাঃ) র মাজার মোবারক একেবারেই নিকটে । আমাদের আজকের মূল উদ্দেশ্য হযরতের মাকবারার যিয়ারত । অতএব আমরা দ্রুত যিয়ারতের উদ্দেশে মাকবারায়ে আবু আইয়ুব আনসারী রাঃ চলে যাই । তিনি রাসূলে কারীম (সাঃ) এর সাথে প্রতিটি পবিত্র যুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের দুর্লভ ফজীলতের অধিকারী ও ছিলেন । যাইহোক এসব কারণে আমরা আবেগ ও ভালবাসাসিক্ত অন্তরে হযরত আবু আইয়ুব আনসারী রাঃ র মাকবারা যিয়ারত করি । হযরত আবু আইয়ুব আনসারী রাঃ র মাকবারা যিয়ারত শেষে বিকেলে আমরা উম্মাহর হৃদয়ের স্পন্দন ইস্তাম্বুল বিজয়ী বীর সেনানী হযরত সুলতান মুহাম্মদ ফাতেহ রাহমাতুল্লাহি আলাইহির মাযার যিয়ারত ও তাঁর নামে প্রতিষ্ঠিত দর্শনীয় ঐতিহাসিক মসজিদে মাগরিবের নামাজ আদায় করার জন্য গমন করি ।
প্রতিনিধি দলের সদস্যবৃন্দ সফরের সফলতার জন্য সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন। সফর শেষে প্রতিনিধি দলটি পুণরায় বৃটেন ফিরে যাবেন।