টাইগারদের লক্ষ্য ৩১৬ রান

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জুলাই ০৫ ২০১৯, ২০:০৩

বিশ্বকাপের ৪৩তম ম্যাচে মুখোমুখি বাংলাদেশ-পাকিস্তান। টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন পাকিস্তান দলপতি সরফরাজ আহমেদ। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ৩১৫ রান। সেঞ্চুরি করেছেন ওপেনার ইমাম উল হক। ৪ রানের জন্য সেঞ্চুরিবঞ্চিত হন বাবর আজম। ব্যাক টু ব্যাক ম্যাচে মোস্তাফিজ পাঁচটি উইকেট নেন। সাইফউদ্দিন তিনটি উইকেট তুলে নেন।

বাংলাদেশ একাদশে দুটি পরিবর্তন এসেছে। সাব্বির রহমানের জায়গায় একাদশে এসেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর রুবেল হোসেনের জায়গায় একাদশে ফিরেছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। বাংলাদেশের সেমি ফাইনালের স্বপ্নটা শেষ হয়েছে ভারতের বিপক্ষে হেরে। তবে লড়াইটা বাংলাদেশের এখনো বাকি, মর্যাদার লড়াইয়ে নেমেছে টাইগাররা।

এর আগে পাকিস্তান বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশকে হারাতে পারেনি। ইংল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী স্টেডিয়াম এবং ক্রিকেটের মক্কা খ্যাত লর্ডসে শুক্রবার (৫ জুলাই) অনুষ্ঠিত হয় ম্যাচটি। বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে তিনটায় শুরু হয় ম্যাচটি। গাজী টেলিভিশন ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করছে।

ইনিংসের অষ্টম ওভারের দ্বিতীয় বলে সাইফউদ্দিন ফিরিয়ে দেন ফখর জামানকে। দলীয় ২৩ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় পাকিস্তান। পয়েন্টে দাঁড়ানো মিরাজের তালুবন্দি হওয়ার আগে ফখর ৩১ বলে এক বাউন্ডারিতে করেন ১৩ রান। এরপর ১৫৭ রানের জুটি গড়েন ইমাম উল হক এবং বাবর আজম। দলীয় ১৮০ রানের মাথায় বিদায় নেন পাকিস্তানের হয়ে এক আসরে সর্বোচ্চ রান করা বাবর আজম। সাইফের বলে এলবির ফাঁদে পড়েন তিনি। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি। সাজঘরে ফেরার আগে বাবর ৯৮ বলে ১১টি চারের সাহায্যে করেন ৯৬ রান। জাভেদ মিয়াদাদ ১৯৯২ বিশ্বকাপে করেছিলেন ৪৩৭ রান, বাবর এই আসরে করলেন ৪৭৪ রান।

স্কোরবোর্ডে আরও ৬৬ রান যোগ করেন ওপেনার ইমাম উল হক এবং মোহাম্মদ হাফিজ। দলীয় ২৪৬ রানের মাথায় বিদায় নেন ইমাম। মোস্তাফিজের বলে ব্যাকফুটে খেলতে গিয়ে স্টাম্পে পা লাগিয়ে নিজের উইকেট ভেঙে দেন ইমাম। তার আগে লর্ডসের অনার্স বোর্ডে নাম লেখান এই সেঞ্চুরিয়ান। হিট উইকেটে বিদায়ের আগে ১০০ বলে সাতটি চারের সাহায্যে করেন ১০০ রান। পরের ওভারে মিরাজ ফিরিয়ে দেন মোহাম্মদ হাফিজকে। ২৫ বলে তিনটি বাউন্ডারিতে ২৭ রান করে হাফিজ ধরা পড়েন সাকিবের হাতে।

ইনিংসের ৪৩তম ওভারে মোস্তাফিজের পঞ্চম বলে হারিস সোহেলের ক্যাচ এক্সট্রা কাভার অঞ্চলে লুফে নেন সৌম্য সরকার। ব্যক্তিগত ৬ রান করে সাজঘরে ফিরেন পাকিস্তানের হারিস সোহেল। এটি মোস্তাফিজের একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে ১০০তম উইকেট। চতুর্থ দ্রুততম বোলার হিসেবে ১০০ উইকেটের মালিক হন ফিজ। ৪৫তম ওভারের খেলা শেষে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠের বাইরে যান পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ (২)। ইনিংসের ৪৬ তম ওভারের পঞ্চম বলে সাইফউদ্দিনের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন ওয়াহাব রিয়াজ (২)। ম্যাচে এটি সাইফউদ্দিনের তৃতীয় উইকেট। এরপর নিজের বলেই ক্যাচ নিয়ে মোস্তাফিজ বিদায় করেন ১ রান করা শাদাব খানকে। ২৬ বলে ৪৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে ইনিংসের শেষ ওভারে বিদায় নেন ইমাদ ওয়াসিম। মোস্তাফিজ তার চতুর্থ উইকেট তুলে নেন। চতুর্থ বলে ইমাদকে বিদায়ের পরের বলেই ফিজ ফিরিয়ে দেন ৮ রান করা মোহাম্মদ আমিরকে। হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগলেও শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আসা সরফরাজকে ফেরাতে পারেননি ফিজ।

মিরাজ ১০ ওভারে ৩০ রানে নেন একটি উইকেট। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ৯ ওভারে ৭৭ রান দিয়ে নেন তিনটি উইকেট। মাশরাফি ৭ ওভারে ৪৬, সাকিব ১০ ওভারে ৫৭ আর মোসাদ্দেক ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। মোস্তাফিজ ১০ ওভারে ৭৫ রান দিয়ে পান পাঁচটি উইকেট।

মূলত এই ম্যাচটি মর্যাদার লড়াই। পাকিস্তানের বিপক্ষে বিশ্বকাপে কেবল একবারই দেখা হয়েছে বাংলাদেশের। ১৯৯৯ সালে সেবার শেষ হাসিটা হেসেছিল টাইগাররা। আইসিসির প্রকাশিত সবশেষ র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। আট থেকে উঠে এসেছে সাতে। আর রেটিং পয়েন্টও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯১ তে। ৯৬ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে পাকিস্তান আছে ছয় নম্বরে। পাকিস্তানকে হারিয়ে রেটিং পয়েন্টও বাড়িয়ে নিতে চায় বাংলাদেশ।

 

বাংলাদেশ একাদশ: মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান (সহ-অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, লিটন কুমার দাস, সৌম্য সরকার, মেহেদি হাসান মিরাজ এবং মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।

পাকিস্তান একাদশ: সরফরাজ আহমেদ (অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক), বাবর আজম, ফখর জামান, হারিস সোহেল, ইমাদ ওয়াসিম, ইমাম-উল-হক, মোহাম্মদ হাফিজ, শাদাব খান, শাহীন শাহ আফ্রিদি, মোহাম্মদ আমির এবং ওয়াহাব রিয়াজ।