জুড়ীতে ধাত্রীর অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যু

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

ডিসেম্বর ১০ ২০২০, ২১:৫১

জহিরুল ইসলাম সরকার, জুড়ী, মৌলভীবাজার:

মৌলভীবাজারের জুড়ীতে সন্তান প্রসবের পর প্রচুর রক্তক্ষরণের ফলে খাদিজা আক্তার (৩০) নামে এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাটি বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের বেলাগাঁও গ্রামে ঘটেছে।

খাদিজা বেলাগাঁও গ্রামের সামছু মিয়ার মেয়ে। খাদিজার মা পারুল বেগম জানান, খাদিজাকে সিলেটের গোলাপগঞ্জ থানার নুরজানপুর গ্রামে বিয়ে দেন। তার ১০ বছর বয়সের এক মেয়ে এবং ৮ বছর বয়সের এক ছেলে রয়েছে। স্বামীর বাড়ি থেকে স্বাস্থ্য কেন্দ্র বেশ দুরে হওয়ায় নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে একমাস আগে খাদিজাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন। তার তৃতীয় সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য সময় ছিল ১৬ ডিসেম্বর।

কোন ব্যথা না থাকলেও স্বাভাবিক চেকআপের জন্য বৃহস্পতিবার সকালে খাদিজাকে বেলাগাঁও গ্রামে ধাত্রী জুলেখা খাতুনের ভাড়াটিয়া বাড়িতে নিয়ে যাই। খাদিজা সুস্থ অবস্থায় প্রায় আড়াই কিলোমিটার হেঁটে সেখানে যাওয়ার পর ধাত্রী জুলেখা তার নিজ সিদ্ধান্তে ইঞ্জেকশন দিয়ে ব্যথা উঠিয়ে কন্যা সন্তান প্রসব করায়। কিছুক্ষণ পর খাদিজার খিঁচুনী উঠে ও রক্তক্ষরণ শুরু হয়। বিষয়টি জুলেখাকে বার বার বললেও প্রথমে গুরুত্ব দেয়নি। দীর্ঘক্ষণ পর অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতাল নিয়ে যেতে বলে। গাড়ীতে খাদিজাকে তোলার সময়ই খাদিজা মারা যায়।

পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত্যু নিশ্চিত করেন।

সরেজমিন অনেকেই অভিযোগ করেন, ধাত্রী জুলেখা খাতুনের কোন সনদ নাই, কিভাবে একজন প্রসূতি চিকিৎসক হিসেবে প্রশাসনের নাকের ডগায় কোনো সনদ ছাড়াই ভাড়া বাসায় এভাবে অবৈধ ব্যবসা করে মানুষের জীবন নষ্ট করছে।

এ বিষয়ে ধাত্রী জুলেখা খাতুন বলেন, খাদিজার আগের দুইটি বাচ্চাও আমার হাতে হয়েছে। আজ তাকে নিয়ে আসার পর পানি ভাঙ্গা অবস্থায় পেয়ে স্যালাইন ও ওষুধ দিয়ে প্রসব করাই। বাচ্চা ও মা সুস্থ ছিল। প্রসবের প্রায় বিশ মিনিট পর খাদিজার খিঁচুনী ও রক্তক্ষরণ শুরু হলে সাথে সাথে হাসপাতাল নিয়ে যেতে বলি।

৫১ শয্যাবিশিষ্ট জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ ফারহানা আক্তার বলেন, দুপুর ২.১৫ মিনিটে মৃত অবস্থায় খাদিজাকে হাসপাতালে আনা হয়। প্রচুর রক্তক্ষরণের ফলে তার মৃত্যু হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সমরজিৎ সিংহ বলেন, মাঠ কর্মীদের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।