জিপি-রবির সঙ্গে সমঝোতার আভাস দিলেন অর্থমন্ত্রী

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

সেপ্টেম্বর ১৮ ২০১৯, ১৯:২৫

দেশের দুই শীর্ষ মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবির সঙ্গে নিরীক্ষা আপত্তির টাকা নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির বিরোধ আলোচনার মধ্যে মীমাংসার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

সরকারের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বলেছেন, ওই আলোচনায় দুই পক্ষই যেন ‘উইন উইন সিচুয়েশনে’ থাকে, তা নিশ্চিত করা হবে। সপ্তাহ তিনেকের মধ্যেই আলোচনার ফল পাওয়া যাবে।

টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারকে সঙ্গে নিয়ে বুধবার সচিবালয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার মাইকেল ফোলির সঙ্গে বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রীর এমন বক্তব্য আসে।

তিনি বলেন, নিরীক্ষা আপত্তি নিয়ে কিছুটা ভুল বুঝাবুঝি রয়েছে। দুই পক্ষই যে নোটিস বা আইনি প্রক্রিয়ায় গেছে- তা প্রত্যাহার করা হবে।

বিটিআরসির দাবি, গ্রামীণফোনের কাছে নিরীক্ষা আপত্তি দাবির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং রবির কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে তাদের।

প্রথম ধাপে ব্যান্ডউইথ কমিয়ে দিয়ে এবং দ্বিতীয় ধাপে গত ২২ জুলাই বিভিন্ন ধরনের সেবার অনুমোদন ও অনাপত্তিপত্র দেওয়া বন্ধ রেখেও কাজ না হওয়ায় গত ৫ সেপ্টেম্বর দুই অপারেটরকে ‘কারণ দর্শাও’ নোটিস পাঠায় বিটিআরসি।

টাকা না দেওয়ায় গ্রামীণফোন ও রবির টু জি ও থ্রি জি সেবার লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না- তা জানতে এক মাস সময় দেওয়া হয় দুই অপারেটরকে।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নোটিসের জবাব না দিলে বা পাওনা টাকা পরিশোধ না করলে পরবর্তী পদক্ষেপ বিষয়ে সোয়া ১২ কোটি গ্রাহকের এই দুই অপারেটরে প্রশাসক নিয়োগের মত পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে বলে গত ৫ সেপ্টেম্বর জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান জহুরুল হক।

অবশ্য তার আগেই গত ২৫ আগস্ট রবি এবং ২৬ আগস্ট গ্রামীণফোন ঢাকার দেওয়ানি আদালতে দুটি মামলা দায়ের করে। নিরীক্ষা আপত্তির ‘পাওনা’ টাকা আদায়ে বিটিআরসির দাবিকে ‘অযৌক্তিক ও ত্রুটিপূর্ণ’ হিসেবে বর্ণনা করে মীমাংসার দাবি জানানো হয় সেখানে।

এই টানাপোড়েনের মধ্যে বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রামীণফোনের সিইওর সঙ্গে বৈঠকে বসেন অর্থমন্ত্রী ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী। ওই বৈঠকের পর বেলা সোয়া ২টায় হঠাৎ করেই অর্থমন্ত্রণালয় জানায়, আড়াইটায় সংবাদ সম্মেলন হবে।

একই বিষয়ে বেলা ৩টায় বিটিআরসিতে সংবাদ সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও তা বাতিল করে অর্থমন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলনে আসেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান জহুরুল হক ও কর্মকর্তারা।

অর্থমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “কয়েকদিন ধরে আলোচনা করছিলাম যে সমাধানে আসা উচিত। সমাধানটি হবে উইন উইন সিচুয়েশনে থেকে। আমরাও হারব না, তারাও হারবে না। আমরা আমাদের যেটুকু ন্যায্য দাবি হবে, সেটা আমরা আদায় করার চেষ্টা করব। তারাও আমাদেরটা মেনে নেবেন বিশ্বাস করি।

“আমাদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে, অন্য সব পথ বাদ দিয়ে আমরা আলোচনার টেবিলে বসব, আমরা সমঝোতায় আসব। মাননীয় মন্ত্রী (টেলিকম) এখানে আছেন, তিনিও তার যেটুকু পাওনা… এই প্রক্রিয়ায় সমাধান খুঁজে বের করব। এটাই বেস্ট এভিনিউ হবে ফর পিসফুল সিচুয়েশন। তারা ব্যবসা করবে, আমাদের পাওনা বুঝিয়ে দেবে, আমরাও তাদের সাহায্য করব, এটাই আমাদের উদ্দেশ্য।”