জাল ভোটের মহোৎসবের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করছি -এডভোকেট মাওলানা রশীদ আহমদ

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

মার্চ ২০ ২০১৯, ১২:৪২

গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি: গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জাল ভোটের মহোৎসবের অভিযোগ এনে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী এডভোকেট মাওলানা রশীদ আহমদ।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, গত ১৮ মার্চ ২০১৯, সোমবার অনুষ্ঠিত গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জাল ভোটের মহোৎসব হয়েছে, অতএব আমি এর ফলাফল প্রত্যাখ্যান করছি। আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় স্থানীয় জনগণ যেভাবে ছিলেন উল্লাসিত ঠিক সেভাবে ফলাফল নিয়ে ছিলেন শংকিত। পুরো নির্বাচনী প্রচারণা জোড়ে এমন খুব কম ভোটারের সাথে দেখা হয়েছে যারা আমার প্রতীক আনারসে ভোট দেয়ার বাইরে অন্য কিছু ভেবেছেন। কিন্তু তাদের তাড়া করছিলো ৩০ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের বিভীষিকাময় দুঃস্বপ্ন। সকলের একই কথা, এরা কি তাদের চরিত্র বদলাতে পারবে? তাদের দাবী ছিলো সঠিক ভোট হলে তো সমগ্র সিলেটে আপনি ই সর্বাধিক ভোট পেয়ে জয়যুক্ত হবেন। প্রতিপক্ষ ভোটারের মনে ভীতির সঞ্চার করে চলেছিলো- ভোট মাওলানাকে দিলেও ফলাফলে জিতবো আমরা। অতীত নজীরের সাথে মিলে যাওয়ার কারণে তাদের এ দাবী বাজার পেয়েছে খুব। নির্বাচনের দিন ভয়ে আতংকে সারাদিন পার করেছে আমার এজেন্ট ও কর্মীবৃন্দ। কোথাও তারা ভালভাবে দাড়াতেই পারেনি, প্রতিবাদ করা তো দূরের কথা। আমি জাল ভোটের প্রতিবাদ করায় দুইটি সেন্টারে আক্রমণের মুখোমুখি হয়েছে। এবার পুলিশ-প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকবে মর্মে আশ্বস্ত করে জনগণকে যেটুকু নির্বাচনমুখী করেছিলাম, নির্বাচনের দিনের বাস্তব চিত্র দেখে তারা তা থেকে একেবারেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। আমার মনে হয়না ১৭/১৮ হাজারের বেশী ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন বলে, বাকি সব জাল ভোট। ফুলবাড়ি ইউনিয়নের হিলালপুর কেন্দ্রে আমি দেখেছি কোন ভোটার নেই। প্রিজাইডিং অফিসার দাবী করেছেন, সকালে কিছু ভোট পড়েছে, আবার ভোটার আসবে বলে আশা করছি। অথচ এখানকার ফলাফলে দেখা গেছে নৌকা প্রতীক দুই হাজার দুইশ’র বেশি ভোট। পার্শ্ববর্তী মোল্লাগাঁও সেন্টারে অন্যান্য কেন্দ্রের মতো একই চিত্র, অথচ বিকালে এখানে আর ব্যালট পাওয়া যায়নি, সব শেষ হয়ে গেছে। এই হলো সরকারদলীয় ইকবাল চৌধুরীর নিজ এলাকার অবস্থা। অথচ আমার হাজীপুর কেন্দ্রে পুলিশ পাহারা বসিয়েছে। এজেন্টের দরকার হয়নি, পোলিং স্টাফ সঠিক ভোটারকেও হেনস্তা করেছে, ধীরগতিতে অগ্রসর হয়েছে, যাতে ভোট কম পড়ে। বিকাল ২টার পরের অবস্থা ছিলো ভয়াবহ। কোন বাঁধা বিপত্তি ছাড়াই ৩টি বিশেষ প্রতীকের পক্ষে ২ঘন্টা ভোট ডাকাতি হয়েছে। আমার প্রশ্ন এ ধরণের একটা নির্বাচন আয়োজন করে সরকারী অর্থ ব্যয়ের কি প্রয়োজন? সরকারী আদেশ বলে প্রশাসক নিয়োগ করে দিলেইতো হতো।

সমগ্র নির্বাচনী প্রচারণা জোড়ে গোলাপগঞ্জের সর্বস্তরের ভোটার আমার প্রতি যে স্বতঃস্ফুর্ত সমর্থন ও ভালবাসা দেখিয়েছেন আমি তাতে আবেগাপ্লুত। আমি জানি এবং সর্বস্থরের জনগণও বিশ্বাস করেন- সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে এবং জনগণ তাতে অংশ নিলে ৮০% ভোটই আমি পেতাম। অনেকগুলো নিরপেক্ষ জরিপে এ তথ্য ই উঠে এসেছে। কর্মীবৃন্দ আমার প্রতীক আনারসের পক্ষে নিরলস কাজ করেছেন। আমি দলমত নির্বিশেষে সকল ভোটার ও কর্মীবৃন্দের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। কাজ করার পরিবেশ না পেলে এ চেয়ারে বসেই কি হতো! অতএব, আল্লাহ যা করেন মঙ্গলের জন্যই করেন। আমরা নিজ মাতৃভুমি ও জনগণের জন্য অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছি মাত্র। বাকিটুকু আল্লাহর মর্জিতে সমর্পিত। আমি নির্বাচনী প্রচারণার সময় বলেছি- নির্বাচনে অংশগ্রহণ সমাজকর্মের চলমান প্রক্রিয়ার অংশ মাত্র। ক্ষমতা পেলে এগুলোর গতি বৃদ্ধি পাবে। স্থানীয় সমস্যার সমাধান ও উন্নয়নে অবদান রাখার সুযোগ পাবো। তা না হলেও হারিয়ে যাবো না। আমি আপনাদের সাথে ছিলাম, আছি এবং থাকবো ইনশাআল্লাহ।