জানালা দিয়ে নবজাতককে ফেলে দিলেন মা!
একুশে জার্নাল
ডিসেম্বর ১১ ২০২০, ২০:০২
নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডের দোতলার সানশেড থেকে আজ শুক্রবার এক নবজাতকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃত অবস্থায় জন্মের পর ওই নবজাতককে তার মা জানালা দিয়ে বাইরে ফেলে দিয়েছিলেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
নাটোর সদর থানা ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আজ বেলা ১১টার দিকে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডের সানশেডে এক নবজাতকের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন পথচারীরা। তারা বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানান। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি পুলিশকে খবর দেয়।
পুলিশ এসে নবজাকতকটির লাশ উদ্ধার করে। তবে নবজাতকটির মা–বাবার সন্ধান পায়নি পুলিশ। পরে অনুসন্ধান শেষে আজ দুপুরে পুলিশ জানতে পারে, ওই ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া রোগী সুইটি বেগম নবজাতকটি প্রসব করেছেন। সুইটি বেগম ‘মেন্টাল অ্যাংজাইটি’ সমস্যায় ভুগছেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সুইটি বেগম জানান, তিনি সবার অগোচরে গভীর রাতে সন্তান প্রসব করেন। প্রসবের পর নবজাতকটিকে মৃত দেখতে পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক তাকে জানালা দিয়ে বাইরে ফেলে দেন।
সুইটি পুলিশকে জানান, তিনি মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। তাই অন্তঃসত্ত্বা হলেও প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি না হয়ে মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হন তিনি। রাতে হঠাৎ করে মৃত সন্তান প্রসব হওয়ায় তিনি কাউকে না বলে তাকে বাইরে ফেলে দেন।
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ নবজাতটির মৃতদেহ উদ্ধার করে। পরে তদন্ত করে ওই নবজাতকের মায়ের সন্ধান পায় পুলিশ, তাকে মানসিক রোগী বলে মনে হয়েছে। কারও অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই নবজাতকটির মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক কে এম আনছারুল হক জানান, ‘ওই মা সবার অগোচরে হাসপাতালের টয়লেটের ভেতর মৃত সন্তান প্রসব করেন। পরে তিনি নিজেই শিশুটিকে জানালা দিয়ে বাইরে ফেলে দেন এবং টয়লেট ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করেন। টয়লেট পরিষ্কার করে রাখায় কারও নজরে আসেনি।’
সুইটি বেগমকে প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি না করে মেডিসিন ওয়ার্ডে কেন ভর্তি করা হয়েছিল, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ভর্তির সময় ওই রোগী অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি জানাননি। তিনি মেন্টাল অ্যাংজাইটিতে ভুগছিলেন। তাই তাকে মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।’