জবি আবৃত্তি সংসদের কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জুলাই ২৯ ২০১৯, ১৯:৪৭

 

রোববার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্যের কাছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আবৃত্তি সংসদের কমিটি গঠনে অনিয়মের জন্য অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়েছে। অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন আবৃত্তি সংসদের সহ-সভাপতি শেখ সজীব আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক – মোঃ মুশফিকুর রহমান ও সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য মিম।

কমিটি গঠনে অনিয়মের প্রতিবাদে সজীব এবং মুশফিক পদত্যাগপত্র জমা দিতে গেলে মাননীয় উপাচার্য এই সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। তখন স্যারের আশ্বাসের ভিত্তিতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
তাঁরা বলেন, আবৃত্তি সংসদের ২০১৯-২০ কার্যনির্বাহী পরিষদের কমিটি গঠনে সংগঠনের তৎকালীন শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ উপদেষ্টা কামরুল ইসলাম জুয়েল সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছেন, মানেননি গঠনতন্ত্র। সাধারণ সম্পাদক পদে তিনি নোমান হাসানের নাম প্রস্তাব করেন নতুন কমিটি গঠনের মিটিংয়ে। এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেননি মোঃ মুশফিকুর রহমানকে। সংগঠনের উপদেষ্টা হিসেবে যা প্রশ্নবিদ্ধ। বলেছেন মুশফিকের বিরুদ্ধে প্রক্টরিয়াল বডি থেকে অভিযোগ আছে। কিন্তু কি অভিযোগ আছে তার কোনো যথাযথ উত্তর দিতে পারেন নি।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক হিসেবে নিজ বিভাগের ছাত্র সোহানকে সাংগঠনিক সম্পাদক করতে সংশোধন করেছেন গঠনতন্ত্র। কিন্তু গঠনতন্ত্র সংশোধনে মানেননি গঠনতন্ত্রের ধারা। গঠনতন্ত্রে কোরাম ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্পর্কিত ধারা-১২ তে বলা হয়েছে, গঠনতন্ত্র অনুমোদন ও সংশোধন সভায় কার্যনির্বাহী পরিষদের মোট সদস্যের ৮০% উপস্থিত থাকতে হবে। কিন্তু ১৩ মে গঠনতন্ত্র সংশোধন সভায় উপস্থিত ছিলেন ৭৩.৯% সদস্য তাই সেই মিটিং এ কোরামই হয়নি। তার পরেও নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করে অবৈধভাবে গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করেছেন।
উপদেষ্টা কামরুল ইসলাম জুয়েল স্যারের এহেন কর্মকাণ্ডের কাছে বলি হয়েছেন সংগঠনের নিবেদিত কর্মী মিম। মিমকে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ না দিয়ে সোহানকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে। মিম বিগত বছর থেকে কণ্ঠ্যঃবুয়েট আবৃত্তি উৎসব সহ জবি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবৃত্তি সংসদের হয়ে অংশগ্রহণ করে আসছে।

এছাড়া কখনো আবৃত্তি সংসদের সদস্য ছিল না এরকম মানুষকে কমিটিতে পদ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। তোরফা আজিজ পিয়ার ও আনন্যামা নাসুহা নুহিনকে যথাক্রমে প্রচার সম্পাদক ও অনুষ্ঠান সম্পাদকের মত গুরুত্বপূর্ণ পদ দেয়া হয়েছে। অথচ তারা কখনোই আবৃত্তি সংসদ থেকে প্রাথমিক সদস্যপদ নেয়নি এবং কার্যনির্বাহী পরিষদও তাদের সদস্যপদ দেয়নি। এটা গঠনতন্ত্র পরিপন্থী।

অভিযোগকারীরা বলেন, সম্প্রতি সংগঠনের ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা শিল্পী রানী দে উচ্চতর ডিগ্রী নিতে বিদেশ যাওয়ার পর সংগঠনে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করার জন্য বিগত কমিটির সভাপতি নওরীন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আশিক সাফাত, বর্তমান কমিটির সভাপতি আবদুল্লাহ আল সায়মুন পাভেল, সাধারণ সম্পাদক নোমান হাসান ও উপদেষ্টা কামরুল ইসলাম জুয়েল একসাথে কাজ করেছেন এবং এসকল অনিয়ম নৈরাজ্যের ক্ষেত্র বানাচ্ছেন আবৃত্তি সংসদকে।

গত ২১ জুলাই কমিটির জরুরী সভায় এসকল অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বললে শেখ সজীব আহমেদকে উপদেষ্টা কামরুল ইসলাম জুয়েল সংগঠনের জন্য ‘ক্ষতিকর’ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং সংগঠন ছেড়ে দিতে বলেন। অভিযোগকারীরা আরও জানান, সজীব সংগঠনের অনিয়ম ও অনৈতিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করলে তাঁকে ‘শোকজ’ করা হয় এবং মিটিং চলাকালীন সময়ে সোহান তাকে মারতে উদ্যত হয়।
তাই বিভিন্নভাবে গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে অনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রতিবাদে মাননীয় উপাচার্যের কাছে অভিযোগ করেছেন তারা।মাননীয় উপাচার্য অভিযোগ গ্রহণ করে কলা অনুষদের ডিন স্যারকে বিষয়টি তদন্ত করে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছেন।

উল্লেখ্য গত ১৪ই মে জবি আবৃত্তি সংসদের ২০১৯-২০ কার্যনির্বাহী পরিষদের কমিটি গঠিত হয় যা গত ১লা জুলাই থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে।