জঙ্গীবাদ : কথা বলতে হবে খুব সাবধানে

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জুলাই ০২ ২০১৯, ১৮:১৫

সৈয়দ শামছুল হুদা

ইসলামবিরোধী অপশক্তি রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠার সকল প্রকার উদ্যোগ, আয়োজন, চেষ্টাকেই জঙ্গীবাদ মনে করে।কিন্তু সরাসরি এ কথা তারা বলতে পারে না।আর সে কারণে প্রকৃত ইসলামপন্থীরা যাতে ইসলাম প্রতিষ্ঠার দিকে কোন প্রকার মনযোগ দিতে না পারে, তার জন্য নকল ইসলামিষ্ট তৈরী করে। হলি আর্টিজেনে হামলার সাথে যারা জড়িত, তারা যে নকল ইসলামিস্ট তা তাদের ছবি থেকেই অনুভব করা যায়। একই ঘটনা ঘটেছে শ্রীলংকায়। প্রকৃত ইসলামিস্টদের ইসলাম প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন থেকে দূরে রাখতে এ কাজ করা হয়।

ইসলাম পছন্দ করে না, এমন অপশক্তি- অর্থ দিয়ে, প্রশিক্ষণ দিয়ে, বিভিন্ন প্রকার কারিগড়ি ও রাজনৈতিক সাপোর্ট দিয়ে নিজস্ব সোর্স তৈরী করে। যারা সময়ে সময়ে আত্মঘাতি কাজ করে। এগুলো মিডিয়ার মাধ্যমে সমাজে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এসব দেখে সাধারণ মানুষ যাতে প্রকৃত কোন ইসলামী আন্দোলনের সাথে জড়াবার সাহস না পায়। পাকিস্তানে এমন অসংখ্য হামলা পরিলক্ষিত হয়। শ্রীলংকা এবং হলি আর্টিজেনে হামলার পরে অস্ত্র ধারণ করে পাগড়ি পরা ছবিগুলো খুব সুন্দরভাবে ইঙ্গিত করে আসলে এরা কারা? এরা যে কুরআন সুন্নাহর ইসলাম ধারণ করে না, এগুলো যে নকল ইসলামিস্ট তা পরিস্কার হয়ে যায়।

আজ অনেক ইসলামপন্থী এমন কি আলেম-উলামাদেরকেও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রাখতে দেখা যায়। অনেক মন্ত্রী, এমপি, প্রশাসনের কর্মকর্তা হুজুরদের কোন সমাবেশে এলেই প্রথমে যে ধুয়াটি তুলেন সেটা হলো জঙ্গীবাদ। ইসলাম প্রতিষ্ঠার প্রতিটি কাজকেই শাসক মহল ভয় পায়। এদেরকে নির্মুল করার এক অভিনব পদ্ধতি হলো জঙ্গীবাদ দমনাভিযান। এর আগে মৌলবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, কট্টরপন্থী ইত্যাদি শব্দগুলো মিডিয়ায় খুব ব্যাপক আকারে ব্যবহার করা হতো। এখন এটা কমে এসেছে। স্থান পুরণ করেছে জঙ্গীবাদ। কুরআন ও সুন্নাহর জ্ঞান রাখেন এমন যে কোন ব্যক্তি নকল ইসলামিস্টরা যা করছে, তা যে ইসলামী আদর্শ নয় তা বিশ্বাস করে। এদেশে বাংলা ভাইরা যে ইসলাম কায়েমের স্বপ্ন ছড়িয়ে দিয়েছিল, তার সাথে এদেশের আলেমদের কোন প্রকার সম্পর্ক ছিল না।

এসব বিষয়ে আমাদেরকে খুব সতর্ক থাকতে হবে। সতর্ক থেকে কথা বলতে হবে। আমাদের অসতর্কতায় যেন ইসলাম প্রতিষ্ঠার প্রকৃত কোন আন্দোলন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়। মিশরের ড. মুরসীদের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর বড় অপরাধ সে ইসলাম কায়েম করতে চেয়েছিল। আরব শাসকরা যারা শুধুই শাসক, এরা কেহই ইসলামের আদর্শ ধারণ করে না, লালন করে না। এরা মুরসিকে কোনভাবেই সহ্য করতে পারে নাই। আফগানিস্তানে মোল্লা ওমরদেরকে এ কারণেই সহ্য করা হয়নি। বিশ্ব মোড়লরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল আফগানকে নিয়ে।

আজকের এরদোয়ানদেরও এ পাল্লায় ফেলার বহু চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু সে বড় চালাক। সে কখনো মুখে ইসলাম কায়েমের কথা বলে না। সে ইহুদী খ্রীষ্টান সবার সাথেই বাহ্যিকভাবে আচরণটা সমানভাবে করে। তার মুখে যেমন দাঁড়ি নেই, পোশাকেও ইসলাম ধারণ করে না। ফলে তাকে সরাসরি জঙ্গী আখ্যায়িত করা যাচ্ছে না। কিন্তু এরদোয়ানরা সমাজের ভেতর থেকে ইসলাম প্রতিষ্ঠার যে নিরব আন্দোলন করছেন, তা বিশ্বের সব অপশক্তি বুঝলেও আমাদের দেশের কিছু অতি ইসলামিষ্ট বুঝতে অক্ষম। বিশ্বমোড়লদের ধোকা দিতে বর্তমান পরিস্থিতিতে এরদোয়ানরা যে পদ্ধতিতে আগাচ্ছেন, এর কোন বিকল্প এই মুহুর্তে চোখে পড়ে না।