চিকিৎসক সমাজ, গুজব ও সুচিকিৎসা : আমাদের করণীয়

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জুন ১৯ ২০২০, ২১:২৮

ডা. জুনায়েদ রনি


চিকিৎসকেরা তাদের পরিচিত লেভেলে পারসোনালি সমাদৃত, কিন্তু কমিউনিটি হিসেবে তাদের ব্যাপারে সাধারণ মানুষের মধ্যে বেশ নেগেটিভ ইমপেক্ট বিদ্যমান৷ এই সিচুয়েশন ক্রিয়েটের পিছনে সিস্টেমের যেমন দায় আছে, ঠিক তেমনই দায় আছে ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার নেতিবাচক নিউজেরও।

সিস্টেম চেইঞ্জ না হলে কোন চিকিৎসক যতই আন্তরিকতার সাথে চিকিৎসা দেন না কেন, এটা নিশ্চিত যে চিকিৎসকদের এই নেগেটিভ অবস্থান কখনোই চেইঞ্জ হবেনা। আর এই সিস্টেম চেইঞ্জ করা চিকিৎসকদের পক্ষে সম্ভবও না। কারন জাতিগতভাবে আমরা দূর্নীতিবাজ। সেবাদাতারা যেমন দূর্নীতিবাজ, সেবাগ্রহীতারাও (ধনী-গরীব)দূর্নীতিবাজ। তাই, ব্যক্তিজীবনে সততার চর্চা শুরু করলে সিস্টেমের দৃশ্যত একটা চেইঞ্জ আসবে, তবে আল্টিমেট চেইঞ্জ আনতে হবে রাষ্ট্রকেই।

স্বাস্থ্যখাতে অনেক সিন্ডিকেট(দালাল) গ্রুপ বিদ্যামান।এদের আল্লাহভীতি নেই বললেই চলে, কেন্দ্রীয়/স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে এদের বেশ সখ্যতা। ইলেকট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়ার উচিৎ চিকিৎসকদের দূর্নীতির পাশাপাশি এদের ভয়ংকর দূর্নীতিগুলোকে হাইলাইট করা৷ পাশাপাশি অনেক ফার্মেসীওয়ালা আছে যারা অনেক মানহীন ক্লিনিকের মার্কেটিং ম্যানেজার (দালাল) হিসেবে কাজ করে, এরা আমার/আপনার আত্মীয়স্বজনই, এদের ব্যাপারেও রেগুলার নিউজ হলে সাধারণের মধ্যে অনেক সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে৷

ফেইসবুকে ‘গোপন রহস্য উদঘাটন’ নামে চিকিৎসাবিষয়ক অনেক মিথ্যা- ভিত্তিহীন নিউজ ঘুরে। যেমন: ICUর গোপন রহস্য, অথচ এখন ICU পাওয়া মানে রীতিমতো যুদ্ধে জয় করা। এদেশে অনেক কুশিক্ষিত অসভ্য ফেইসবুকার আছে, যারা ফেইক নিউজ ছড়াতে বেশ সিদ্ধহস্ত। তাই কোন নিউজ ভাইরাল হলেই যাচাই বাছাই ছাড়া শেয়ার দেয়া থেকে সেটাকে আরো ভাইরাল করা থেকে বিরত থাকাটাও আশা করি আমাদের নৈতিক দায়িত্বের মধ্যেই পড়বে।

সর্বোপরি আমাদের আল্লাহ্ পাকের দিকেই ফিরে আসতে হবে। তা না হলে কস্মিনকালেও আমাদের অবস্থান শুধু চিকিৎসাক্ষত্রে না কোন ক্ষেত্রেই পরিবর্তন হবেনা। আল্লাহ্র কাছে তাই দু’আ করি আল্লাহ যেন আমাদের তাঁর দিকে ফিরে আসার তৌফিক দিয়ে দেন, আমাদের দুনিয়ার জীবনের কষ্ট লাঘব করে দেন, আর চিরস্থায়ী জান্নাতে যাওয়ার তৌফিক দিয়ে দেন, আমীন।