কাশ্মীরীদের পাশে দাঁড়ানো বিশ্বের বিবেকবানদের জন্য অপরিহার্য কর্তব্য

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

আগস্ট ০৫ ২০১৯, ১৯:৪১

হোসাইন আহমদ বাহুবলী

আপনাদের কারো মনে আছে, ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন কে ফাঁসি দেয়া হয়েছিল মুসলিমদের এক ঈদের দিনে?

আপনাদের মনে আছে ২০১৮ সালে মুসলিমরা যখন ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করার জন্য ছুটি কাটাচ্ছিলেন, তখন আরাকানের আকাশ বাতাস ভারী করে দিয়ে আসছিল নির্যাতিত মা-বোনদের করুন আর্তনাদ। মাসের পর মাস অনবরত দায়িত্ব পালন করে, যখন অবসাদ নেমে আসছিল দেহ জুড়ে। পরিবার ঘনিষ্ঠ হয়ে কিছু বিশ্রাম, কিছু আনন্দ, কিছু বিনোদনের জন্য যখন বাসা বাড়িতে অবস্থান করছিলাম,

তখনই অনলাইনে মুসলিমদের রক্তে নাফ নদী পানি লাল হয়ে ভাসছিল। হাত-পা বাঁধা মুসলিমদের মস্তক ছিন্ন করা হচ্ছিল। হাতের কব্জি, পায়ের গোড়ালি জীবন্ত বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছিল। বিশাল মরু প্রান্তরে ক্ষুটির সাথে মুসলিম শিশুদের কে দাঁড় করিয়ে বেঁধে, বড় বড় লাঠি দিয়ে পিটিয়ে, তারপর আলতো করে ছুরি দিয়ে তাদের গলা কেটে, মাথা ঝুলিয়ে নির্মম হত্যাকাণ্ডের এই ছবিগুলি যখন দৃশ্যপটে ভেসে উঠতো, তখন ঈদ আনন্দ পরিণত হতো নিরানন্দে।

সেই নিরানন্দ বুঝি আবার ফিরে আসছে আমাদের কাছে! এবার যখন মুসলিমরা ঈদুল আযহার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। ঠিক সেই মুহুর্তে ভারতের বিজেপি-মোদি সরকার কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন সহ বিশেষ সুবিধা বঞ্চিত করে আইন পাশ করে এক অনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে যারা আমাদেরকে ধর্মে-কর্মে নিরুৎসাহিত করত নিরন্তর, তারাই আজ ধর্ম চর্চায় বিভক্ত করছে গোটা বিশ্বটাকে।

গত রাত থেকে আরাকানের জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদেরকে গৃহবন্দী করেছে। মোবাইল-ফোন ইন্টারনেট সহ সকল যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে। স্কুল কলেজ মাদ্রাসা সহ সকল প্রতিষ্ঠানে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে।

সাথে সাথে কাশ্মীরে সেনা মোতায়েন সত্ত্বেও অতিরিক্ত ৩৫ হাজার সেনা মোতায়েন করে কাশ্মীরের মুসলমানদের কে তাদের অধিকার থেকে চিরতরে বঞ্চিত করে, গোলামীর জিঞ্জিরে আবদ্ধ করার জন্য সকল আয়োজন সম্পন্ন করেছে।

 

কাশ্মীরের মুসলমানেরাও ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নন তারা। শিশু-কিশোর, যুবক, আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সকলেই রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে ফেটে পড়েছেন।

নিরস্ত্র কাশ্মীরি মুসলমানদেরকে সর্ব প্রকার সহযোগিতা করা বিশ্বের সকল মুসলমানদের জন্য অপরিহার্য ফরজ দায়িত্ব হিসেবে আবর্তিত হচ্ছে।

প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তান সেই ফরয দায়িত্ব পালনে এগিয়ে এসেছে শুনে ভালো লাগছে। অতি দ্রুত তুরস্ক, মালয়েশিয়া সহ সকল মুসলিম নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে এই জুলুমের বিরুদ্ধে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করা গোটা বিশ্বের মুসলমানদের জন্য ফরজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই দায়িত্ববোধ হয়তো সকল মুসলিম রাষ্ট্র প্রধানের এবং কর্তাব্যক্তিদের জানাও নেই। আমরা যারা এই কর্তব্য সম্পর্কে অবগত, তাদের জন্য সমহারে ফরজ ঐ সকল নেতৃবৃন্দ ও কর্তাব্যক্তিদেরকে তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে অবগত করে দায়িত্ব পালনে আগ্রহী করে তোলা। উৎসাহিত করা।

মনে রাখতে হবে আমরা প্রত্যেকেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিজ নিজ সাধ্যমত সর্বোচ্চ মেধা, শক্তি, ঘাম, রক্ত ঝরিয়ে এই পাশবিকতার মোকাবেলায় এগিয়ে আসতে হবে।

নতুবা সময়ের ব্যবধানে এই খড়গ আপনার-আমার জন্য নেমে আসতে পারে।

আল্লাহ আমাদের সকলের সহায় হোন।