কারাগারে যেতেই হলো মাদকসহ আটক রাজশাহীর সেই উপসচিবকে

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

ডিসেম্বর ২০ ২০২০, ২২:২৫

বদিউজ্জামান রাজাবাবু, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নানা নাটোকিয়তা শেষে রাজশাহী জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (উপ-সচিব) নুরুজ্জামান ও তার সহযোগী ওয়াহিদুজ্জামান লাজুকের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে মামলা হয়েছে। উপসচিব নুরুজ্জামানের বাড়ি পাবনা সদর এলাকার পশ্চিম শালগাড়ি গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে। আর ওয়াহিদুজ্জামানের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জের কানসাট উপজেলায়। রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সাংবাদিকদের চাপের মুখে গতকাল শনিবার বিকেলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক সাইফুর রহমান বাদি হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। ৬.৫ লিটার লিকুইড ফেন্সিডিলসহ তাদের আটক দেখানো হয়েছে এবং এসময় রাজশাহী জেলা পরিষদের পাজেরো জিপ গাড়ি (রাজ মেট্রো ঘ-১১-০০৭১) মামলায় জব্দ দেখানো হয়েছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মোজাফফর হোসেন। পরে সাংবাদিকদের চোখের আড়ালে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সার্কিট হাউস থেকে শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ২ আসামীকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট এর, বিশেষ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আবু কাহার এর আদালতে তোলা হয়। বিজ্ঞ আদালতের বিচারক তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিকে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার একাধিক সাংবাদিকরা বলেন, মাদকসহ আটক করে আসামীকে থানায় না নিয়ে সার্কিট হাউজে জামায় আদর করা হয় এ প্রথম দেখলাম। এ ছাড়াও আসামীদের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বাঁচানোর ব্যার্থ চেষ্টা শেষে আটকের দির্ঘ ১৯ ঘন্টা পরে মামলা রুজু করে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সার্কিট হাউস থেকে আসামীদের কোর্টে প্রেরন করেন যা পূর্বে না কোন দিন দেখেছি না শুনেছি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় অতিরিক্ত পরিচালক জাফরুল্লাহ কাজল এই প্রতিবেদককে অভিযোগ করেন, ফেন্সিডিলসহ নুরুজ্জামানকে আটকের পর চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক তাকে সার্কিট হাউসে নিয়ে নিজেদের হেফাজতে রেখে দেন। তাকে ছেড়ে দিতে চাপ প্রয়োগ করেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কোনো কর্মকর্তাকে সার্কিট হাউসে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ চাপ প্রয়োগের কথা অস্বীকার করে বলেন, নুরুজ্জামানের সরকারি গাড়িতে ফেন্সিডিল বহন করে নিয়ে যাচ্ছিল। এসময় নুরুজ্জামান ওই গাড়িতেই ছিলেন। তাকে আটকের পর তিনি নিজেকে রাজশাহী জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পরিচয় দেন। তখন তাকে সার্কিট হাউসে নিয়ে রাখা হয়। তিনি বলেন, মাদকসহ তাকে আটক করা হয়েছে। তিনি উপ-সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা। তাকে গ্রেপ্তারের আগে জনপ্রশাসন সচিবের অনুমতি প্রয়োজন হয়। আমরা অনুমতির অপেক্ষায় তাকে সার্কিট হাউসে নিয়ে যাই বলে জানান তিনি।