কলমসেনানী। আবদুল্লাহ আল খায়ের
একুশে জার্নাল ডটকম
ফেব্রুয়ারি ২১ ২০২৩, ১৭:২৭
কলমসেনানী
(ভাষা শহিদ ও মুসলিম লেখকদের প্রতি উৎসর্গিত)
আবদুল্লাহ আল খায়ের
জ্ঞানপাপী সব থাম্
জেগেছে কলম হাতে নিয়ে ঐ ওলামায়ে ইসলাম।
দিলে কুরআন জবানে জিকির নয়নে স্বপ্নঢল
ঈমান যাদের হিমালয়জয়ী হক পথে অবিচল।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্য কুরআন
বক্ষ ধারণে বিশ্ববিজয়ী আরশচুম্বী শান।
যাদের রাসুল মাতৃভাষায় শ্রেষ্ঠ শুদ্ধভাষী
তারা এ বিশ্বে ছড়াবে সুরভি সাহিত্য রাশি রাশি।
পড়া আর লেখা যাদের ধর্মে প্রভুর প্রথম বাণী
জ্ঞান-গরিমায় থাকবে প্রথম, আদেশ যে আসমানি।
তারা কিছুদিন ছিলো উদাসীন তাই দিয়েছিস গোল
ফাঁকা মাঠে একা ঝেড়েছিস তোরা তাবড়ো তাবড়ো বোল।
বাংলায় বসে ওলামা কাঁপায় এশিয়া-আরব জ্ঞানে
উর্দু-আরবি সাহিত্যে কতো অবদান নিস জেনে।
বাংলায় অবদান?
ভাষা-সাহিত্য জন্মদাতারা মুসলিম সুলতান।
শাসক হোসেন, ইউসুফ শাহ, সুলতান ইলিয়াস
এ সাহিত্যের স্থপতি তারাই পড়ে দেখ্ ইতিহাস।
বাংলাটা ছিলো ব্রাহ্মণদের নিষিদ্ধ পাপী ভাষা
মুসলমানরা আপন বানিয়ে জাগায় নতুন আশা।
কবি-শিল্পীরা পুঁথি সাহিত্যে তোলে ছন্দের দোল
হাকিম, সগীর, হামজা, উজির, সভাকবি আলাওল।
নব দিগন্ত উন্মোচনে কে সাহিত্যে এনেছে সাধ?
কাজী নজরুল, সিরাজী, মনির, মহাকবি কায়কোবাদ।
মুন্সি মেহের, মীর মশারফ, মোস্তফা, আকরম
শহিদুল্লাহ, আল মাহমুদ, বন্দে আলী কি কম?
ভাগিস না শোন রাগে
বাংলায় পুরো তাফসির লিখে সদর সাহেব আগে।
মাতৃভাষায় বুখারি পড়াটা ছিলো বাঙালির শখ
তরজমা করে মেটালেন তাও শাইখ আজীজুল হক।
অনুবাদ করে ইতিহাস গড়ে মারেফুল কুরআন
বিশ্বের বুকে বিখ্যাত নাম মুহিউদ্দীন খান।
সারাটা জনম টাকায় ঘুমিয়ে পাসনি যে ভুল আহ
শুধরে দিলেন আদিব হুজুর ভাষাবিদ মিসবাহ।
পূর্ণ কুরআন পদ্যে সাজিয়ে বিশ্বের বিস্ময়
আল্লামা কবি মুহিব খানের কৃতিত্ব ছোটো নয়।
মুসলমানের পরম যতনে সাহিত্য আজ ধন্য
তোরাতো শুধুই অশ্লীল বিষে করেছিস তা জঘন্য।
কান পেতে তাই শোন্
অচিরে পড়বে তোদের মাথায় শব্দের ভীম ড্রোন।
নতুন সময়ে নতুন সমরে দেখি হয় জিত কার
শোনা যায় কার গোঙ্গানি আর চেঁচামেচি চিৎকার।
স্মরণে রাখিস এক আল্লাহ আছে আমাদের পক্ষে
তোরা যে গোলাম বেঈমানদের হবে নাতো শেষ রক্ষে।
টাকা ও পদের বিনিময়ে তোরা বেঁচেছিস দ্বীন, দেশ
দেশপ্রেম ভুলে হৃদয়ে রাখিস সর্বদা ভিনদেশ।
চেতনার নামে নাস্তিকতার শেষ হবে অবশেষে
আলেম যুবারা দ্বীন-দেশ-জাতি বাঁচাবেই সবশেষে।
ভাঙবো অশুভ ভিত্
ওহির লেখক মুয়াবিয়া হলো আমাদের পথিকৃত।
হজরত আলি, হাসসান, রুমি, গাজালি, খয়াম আর
মহাকবি ফেরদোসি, সাদি হলো আদর্শ প্রেরণার।
হাফিজ, গালিব, জামি, ইকবাল কতো জ্ঞানী গুণধর
নদভি, থানভি, তাকি, ফররুখ চেতনার বাতিঘর।
বিষাক্ত বীজ উপড়ে ওঠিয়ে বুনে দেবো বিশ্বাস
আলো বাতাসের বদলাবো গতি রুখে দেবো নিঃশ্বাস।
কাব্য কথায় নয়া দিগন্ত করবো উন্মোচন
মিডিয়া জিম্মি জনগণ পাবে মুক্তির সমীরণ।
আরবি শেখার জন্য যেভাবে আসে সবে মকতব
তেমনি আসবে আমাদের কাছে বাংলা শিখতে সব।
আরবি-ফারসি কাফেরের ভাষা ছিলো ইতিহাস বলে
আজ ইসলামি ভাষা খ্যাতি পায় কার চর্চার ফলে?
তেমনি ওলামা কলমসেনানী হবে বাংলার হৃদ
আরবির ন্যায় হবে গবেষক হবে সেরা ভাষাবিদ।
ভাষার জন্য রফিক, সালাম, যেভাবে দিয়েছে প্রাণ
সেভাবে বাঁচাতে শুভ সাহিত্য জান দেবো কুরবান।
বেঈমান কর্ চুপ
যুগ যুগ ধরে দেখছি শুধুই শয়তানি সব রূপ।
নাস্তিকতার অপশক্তির ভেঙে দেবো কালোহাত
যুক্তি প্রমাণে মিথ্যাচারের তোলে নেবো বিষদাঁত।
বেহায়াপনার শিল্পভাগাড়ে নৈতিকতার অনল
জ্বালবো অচিরে করবো শুদ্ধ থাকবে সাহিত্যবল।
দেশবাসি পাবে শিকড়ের ঘ্রাণ, সহি শিল্পের সাধ
জরুরি, দারুণ, প্রামাণ্য আর বিশুদ্ধ সংবাদ।
দাদাবাবুদের পদলেহি ছাপ, ভিনদেশি ষড়যন্ত্র,
মুক্তচিন্তা নামে উস্কানি ছাড়া হবে সব গ্রন্থ।
পাঠ্যবইয়ে শিক্ষা-সমতা আনবে নিপুণ হাতে
রবে নাকো আর হেরফের কোনো ধর্ম-বর্ণ-জাতে।
দেশ হেফাজতে নায়েবে রাসুল হবে চতুর্থ খুঁটি
গোল্লায় যাবে হলুদ মিডিয়া- নীল নকশার গুটি।
হবে গবেষণা নতুন প্রাচীন রবে সাহিত্যপ্রেমী
জ্ঞানের আলোয় উজ্জ্বল হবে এদেশ ও একাডেমি।
০৫.০৫.১৪
ভৈরব
বি.দ্র. আল্লাহ ও কুরআন শব্দদ্বয়কে ব্যতিক্রম মনে করি। ছন্দমিলের প্রয়োজনে সংক্ষেপরূপে বিকৃত করা দৃষ্টিকটু ও অপছন্দ। তাই দয়া করে অভিজ্ঞজন স্থানভেদে মিলিয়ে পড়ে নিলেই হবে। আমরা বিকৃতিটা মেনে নিয়েছি বলেই অভিধানে স্থায়ীভাবে বিকৃত ছান্দিক শব্দ প্রথমে স্থান পেয়েছে!