করোনা পরীক্ষাগার স্থাপন না হওয়ায় ভোগান্তিতে সাতক্ষীরাবাসী

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

মে ০১ ২০২০, ১৩:৫৩

সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরায় করোনা পরীক্ষাগার স্থাপন না হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে সাতক্ষীরার বাসিন্দারা ও কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীরা। এ নিয়ে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে সাতক্ষীরা বাসীদের মধ্যে। সাতক্ষীরা দূর্যোগ প্রবন একটি উপকূলীয় জেলা। ২২ লক্ষ মানুষের বাস এই জেলায়।

এদিকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে করোনা রোগীদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ হাসপাতালে পিসিআর মেশিন স্থাপনের মতো উপযোগী পরিবেশ থাকার স্বত্ত্বেও স্বাস্থ্য বিভাগের এক প্রকারের উদাসীনতার জন্য তা আলোর মুখ দেখছে না বলে অভিযোগ করেন সাতক্ষীরা সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

সারাদেশের তুলনায় সীমান্তবর্তী জেলা সাতক্ষীরায় করোনার ঝুঁকিতে আতঙ্কিত বেশি মানুষ। এ জেলার অধিকাংশ মানুষ শ্রমজীবী হওয়ার কারনে ইট ভাটার কাজের মৌসুমে দেশের বিভিন্ন জেলায় কাজের জন্য যেয়ে থাকে। এখন সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শ্রমজীবী সে সব মানুষেরা করোনা আক্রান্ত ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, শরিয়তপুর, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ সহ বিভিন্ন জেলা থেকে সাতক্ষীরাতে প্রবেশ করেছে। যার সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার এবং বিদেশ ফেরত বৈধ ও অবৈধপথে প্রায় ১৪ হাজার প্রবাসী সাতক্ষীরায় অবস্থান করছেন। ইতোমধ্যে করোনার উপস্বর্গ সন্দেহে ৩১৯ জনের নমুনা সংগ্রহ কতে করে খুলনা মেডিকেল কলেজে পাঠিয়েছে জেলার কর্মরত চিকিৎসকরা।

কিন্তু এ পর্যন্ত রিপোর্ট এসেছে মাত্র ১৮৯ টি। রিপোর্ট পেতে বিলম্বিত হওয়ার কারনে ভোগান্তিতে আছে রোগীদের আত্মীয় স্বজন সহ চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ।

একই সঙ্গে করোনা উপসর্গে জেলায় দিন দিন বাড়ছে। করোনা উপসর্গ নিয়ে বৃহস্পতিবার জেলায় আরও এক ব্যক্তি মারা গেছে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে সুনির্দিষ্ট বিষয়গুলো তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন সাতক্ষীরা-০১ (তালা-কলারোয়া) আসনের সংসদ সদস্য এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ।

ওই চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, গত দুই সপ্তাহ নারায়নগঞ্জ, ঢাকা, গাজীপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুরসহ করোনা আক্রান্ত বিভিন্ন জেলা থেকে সড়ক ও নৌপথে প্রায় ২০ হাজার এর বেশি শ্রমজীবী ওই সকল জেলার লকডাউন উপেক্ষা করে সাতক্ষীরা জেলায় ফিরে এসেছে এবং করোনা আক্রান্ত বিভিন্ন জেলা থেকে সাতক্ষীরায় আসা অব্যাহত রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিপুল সংখ্যক শ্রমজীবী মানুষ জেলায় ফিরে আসাতে জেলাবাসী শঙ্কিত। সাতক্ষীরা জেলায় এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত জেলা থেকে বিপুল সংখ্যক শ্রমজীবী মানুষ আসার ফলে এখানে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি প্রবল। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাসে করোনা সনাক্তকরণ কার্যক্রম বৃদ্ধি এবং সনাক্তকৃত রোগীদের আইসোলেসনে রাখা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। অথচ এ সকল ক্ষেত্রে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হলেও ফলাফল পেতে বিলম্ব হচ্ছে। এ মুহূর্তে আক্রান্ত জেলা থেকে আগত প্রায় ২০ হাজার শ্রমজীবী মানুষের করোনা সনাক্ত করা জরুরী হয়ে পড়েছে।

সাতক্ষীরার মানুষ মনে করেন তারা সবসময় অবহেলিত। এমত অবস্থায় সাতক্ষিরাতে একটি করোনা পরীক্ষাগার নির্মিত হোক এমনটা দাবি সাতক্ষিরা জেলাবাসীর।