করোনা আপডেট; ফ্রন্টলাইন ও গবেষণা থেকে নেয়া

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

মে ১১ ২০২০, ১৫:১০

প্রতিবার যখন করোনা আপডেট দিয়েছি, নতুন কিছু তথ্য ও গবেষনার ভিত্তিতে কিছু নতুন তথ্য আসছে। নতুন একটা রোগ হিসেবে এখনো তেমন কিছুই জানিনা আমরা, নতুন অনেক কিছুই জানব।

১. উপসর্গ আবার স্বরন করে নেই- নতুন কোন জ্বর অথবা নতুন কাশি নিয়ে যেকোন কাউকেই করোনা সন্দেহ করতে হবে। তাছাড়া গলা ব্যাথা, গা ঠান্ডা হয়ে কাপনি হওয়া, মাথা ব্যাথা, গায়ে ব্যাথা, ক্লান্তি, স্বাদ চলে যাওয়া, ঘ্রাণশক্তি চলে যাওয়া দেখা যায়। ডায়েরিয়া ও বমিও দেখা যেতে পারে।

২. উপরের উপসর্গ গুলোতে খারাপ লাগলেও বাসায় ম্যানেজ করা যাবে। বাসায় থাকাই উত্তম, দরকার হলে টেলিমেডিসিন ব্যবহার করুন। Bachao – Health কাজ করছে টেলিমেডিসিনে ফেইসবুকেই একদম বিনামুল্যে –

https://www.facebook.com/bachaohealth/। তাছাড়াও বিএসএমএমইউ, সোসাইটি অফ মেডিসিন এবং আরো অনেকেই করছে টেলেমেডিসিন সার্ভিস। বাসায় থাকাকালিন ১৪ দিন আইসোলেশান এ থাকবেন। বের হবেন না, খাবার অন্য কেউ দিয়ে যাবে ও হাসপাতাল ছাড়া কথাও যাবেন না।

৩. যেই উপসর্গ হলে হাসপাতালে যাওয়া দরকার সেটা হলো শ্বাসকষ্ট। বাক্য শেষ করতে না পারা, নিশ্বাস নিতে কষ্ট হলে, তাড়াতাড়ি হাস্পাতালে যাবেন। তাছাড়া বেহুশ হয়ে গেলে, বুকে ব্যাথা হলেও যাওয়া উচিত।

৪. করোনাভাইরাস নিয়ে যা বুঝা যাচ্ছে তা হলো কোন ঔষধ এখনো পাওয়া যায় নাই। অনেক কিছুই গবেষনা করা হচ্ছে। এবং যেহেতু কিছুই নাই, তাই জাতীয় গাইডলাইন্সে কিছু ঔষধ সাজেস্ট করা হয়েছে। কিন্ত ওই ঔষধ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাবেন না।

৫. কিছু রোগ থাকলে সিরিয়াস রোগের ঝুকি বেশি- ব্লাড প্রেসারের সমস্যা, ডায়েবেটিস, হৃদরোগের সমস্যা, ফুসফুসের সমস্যা হলে তাদের ঝুকি বেশি। বয়স যাদের কম তাদের মধ্যে বেশি ঝুকি তাদের যাদের ওজন বেশি। দেখা যাচ্ছে ভেন্টিলেটার অল্পবয়সি অনেকেই মোটা ছিল।

৬. উপরের সবাই সহ ৬৫ এর উর্ধ্বে যারা আছে তাদের ভাল করে শিল্ড করা দরকার। সমাজে আমাদের দায়িত্ব এদের দেখে রাখা, সাহায্য করা।

৭. করোনা নিয়ে সব চেয়ে বেশি ঝুকি কিন্ত সমাজে এর সংক্রমন। এটা কমানোর জন্যে আমরা ৪টা কাজ করতে পারি। ১. অকারনে বাসা থেকে বের না হওয়া। যত বের হবেন তত সংক্রমন হওয়ার সম্ভাবনা। আরো খারাপ, আপনার জন্যে অন্য কার হয়ে যেতে পারে, বা বাসায় বৃদ্ধ বা বাচ্চা কাউকে দিয়ে ফেলতে পারেন। সব খুলে গিয়েছে বলেই বের হতে হবে তা না।

৮. ২. বের যদি হই তাহলে মুখ ঢাকা। এক গবেষনায় দেখা গিয়েছে যে সবাই যদি মাস্ক পড়ে অথবা না থাকলে কাপড় দিয়েও সংক্রমন কমানো যেতে পারে। কাশি, কথা বলার সময় ড্রপ্লেট এগুলা যদি ধরে ফেলা যায়, সংক্রমন কমবে। কথা বলার সময় আবার মাস্ক খুলবেন না।

৯. ৩. বারবার হাত ধোয়া, ভাল করে ধোয়া। বিভিন্ন জিনিসে হাত দিয়ে ওই হাত মুখের কাছে গিয়েই যা ক্ষতি

১০. ৪. বাইরে গিয়ে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা- সবার থেকে ৬ ফুট দুরত্ব রাখার চেষ্টা করবেন। নতুন রিসার্চে দেখা যাচ্ছে যে ছোট বন্ধ রুমে ছড়ানোর সম্ভাবনা বেশি। উহান থেকে গুয়াংজাউ এক লোক গিয়েছিল। এক রেস্তোরাতে পরিবার সহ খায়। পরে দেখা যায় পাশের দুই টেবিলের মানুষ সহ প্রাই ১০-১২ জন আক্রান্ত হয় ওই রেস্তোরা থেকেই।

১১. করোনা হওয়াটা কারো দোষ না। তাদের কে সমাজে সাহায্য করবেন। মনে রাখবেন, অসুস্থ ব্যক্তির সাহায্য করা আল্লাহর পথে ইবাদাত। তাদের কে ঘড় থেকে বের করে দেয়া, বাসায় ফিরতে না দেয়া এই কাজ গুলা জুলুম। এমন অত্যাচার আল্লাহ মাফ করবেন না।

১২. ডাক্তার, নার্স, সাস্থকর্মিদের উপর অমানবিক পরিশ্রম যাচ্ছে, নিজের জীবন বাজি রেখে। এই গরমে, ঘামে ভেজা অবস্থায় তিন লেয়ারের পিপিই পড়ে আপনার সেবায় নিয়োজিত। এর মধ্যে রোজা রাখছে। এর পর যদি তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন কিভাবে মেনে নিবে তারা? আমার এক বন্ধুকে দুদিন আগে মারা হয়েছে।

এমন আতংকের সময় সবাই সবার পাশে থাকা দরকার। নিজের আত্মীয়, প্রতিবেশি কে নিজেদের দেখে রাখা দরকার। সবাই একি সাথে কাজ না করলে অনেক অনেক মৃত্যু হবে।

ডা: রাইক রেদোয়ান

ইমারজেন্সি মেডিসিন বিভাগ,

ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি হসপিটাল