কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ট্রাস্টি বোর্ডের সংবাদ সম্মেলন

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

ডিসেম্বর ২১ ২০২০, ১৭:৩২

নিজস্ব প্রতিনিধি: কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (সিবিআইইউ) এর সাবেক চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দীন আহমদ (সিআইপি) প্রধানমন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি দখল করে কক্সবাজারে একটি দুষ্ট নজির স্থাপন করেছেন।

চক্রান্তকারী ও পদলোভী এই চেয়ারম্যানের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টি আজ ধ্বংসের প্রান্তে। প্রতিষ্ঠাতাদের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম, মেধা ও সর্বস্ব অর্থ ব্যয় করে দাঁড় করানো বিশ্ববিদ্যালয়টির আজ করুন অবস্থা। অতীতে ছিলেন চেয়ারম্যান কিন্তু এখন প্রতিষ্ঠাতা দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছেন তিনি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শত শত শিক্ষার্থীরা নানা শঙ্কা ও বিপাকে পড়েছেন।

সোমবার (২১ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা তুলে ধরেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আব্দুস সবুর, আব্দুল মাবুদ, জসিমূল আনোয়ার খাঁন ও অধ্যাপক নুরুল বশর ভূঁইয়া প্রমুখ।

তাঁরা আরো অভিযোগ করে বলেন, সালাহ উদ্দীন আহমদ প্রতিষ্ঠাতা দাবি করে ভিসি নিয়োগসহ জবরদখল ও লুটপাট করে ক্ষমতার অপ-ব্যবহার করে চলেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য মাহবুবা সুলতানা জানিয়েছেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী কোনো বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদনের ক্ষেত্রে ট্রাস্ট গঠন বাধ্যতামূলক। এ জন্য ২০১৩ সালের ২৭ জুন ‘কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ট্রাস্ট’ রেজিস্ট্রেশন করা হয়। এ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যের সংখ্যা ছিল ১০ জন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে চলতি বছরের ২০ মে পর্যন্ত এ ট্রাস্টের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন সালাহ উদ্দীন আহমদ সিআইপি।

আরো বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে অবদান রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় সংখ্যাগরিষ্ঠ ট্রাস্টি সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে গত ২০ মে তাঁকে চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে কক্সবাজার ১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব জাফর আলম (এম.এ) কে চেয়ারম্যান মনোনীত করা হয়। বিষয়টি সহজ ভাবে মেনে নিতে পারেননি সালাহ উদ্দীন আহমদ।

ফলশ্রুতিতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ’র সেক্রেটারি ও সিবিআইইউ’র উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা মো. মুজিবুর রহমানের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।এমনকি করোনাকালীন সময়ে কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজেসে অন্যায়ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে একচ্ছত্র রাজত্ব কায়েম করেন। এমনকি নিজেকে দাবি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা। পরবর্তীতে কিছু শিক্ষক ও কর্মকর্তাকে অব্যাহতি দিয়ে ভিসি নিয়োগসহ অনিয়মে বাণিজ্য শুরু করেছেন।

ট্রাস্টি সদস্যরা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা পূনঃনির্ধারণের জন্য সাবেক চেয়ারম্যান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন করেন। অথচ প্রপোজাল বুক, ডীড অব ট্রাস্ট, অঙ্গিকারনামাসহ গত ৭ বছরের সকল ডকুমেন্ট অনুযায়ী সিবিআইইউ-এর উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা মো. মুজিবুর রহমান।

সংবাদ সম্মেলনে তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নীতিমালা অমান্য করে একক সিদ্ধান্তে ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে প্রফেসর ড. গোলাম কিবরিয়া ভূঁইয়া, একাডেমিক এডভাইজার হিসেবে একজন কলেজ শিক্ষক এ.কে.এম গিয়াসুদ্দীন, এ্যাসোসিয়েট প্রফেসর হিসেবে ড. খান সরফরাজ আলী, রেজিস্ট্রার হিসেবে খন্দকার এহসান হাবীব, পরিচালক (অর্থ) হিসেবে জসিম উদ্দীন নামের একজনসহ নানান শিক্ষাও প্রশাসনিক পদে অনেক অযোগ্য-অদক্ষ লোককে নিয়োগ দিয়েছেন।

এমনকি শুধুমাত্র মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উখিয়ার জনসভায় সিআইপি সালাহ উদ্দীন আহমদের নাম উল্লেখ করায় ৭ বছর পর নিজেকে প্রতিষ্ঠাতা দাবি করেছেন। এটা নিতান্তই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে প্রতারণার শামিল বলেও উল্লেখ করেছেন।

ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে নিয়োগ বাণিজ্যের পাশাপাশি ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের ভয়-ভীতি দেখাচ্ছেন সালাহউদ্দীন।

সদস্যরা আরও জানান, ‘এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসিতে অভিযোগ দিলে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় ইউজিসির পক্ষ থেকে। সেই কমিটির তদন্ত চলমান।’ অভিযুক্ত সালাহউদ্দীন ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় তাঁর অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে ভয় পাচ্ছেন উল্লেখ করে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেন লায়ন মুজিবুর রহমান।

এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের বেশির ভাগ সদস্যরা জানিয়েছেন দখলদার ও প্রতারকের হাত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে রক্ষা করা জরুরী। পাশাপাশি উচ্চ শিক্ষার বিদ্যাপীঠ কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভাসিটি দখলমুক্ত করে শিক্ষা ও গবেষণার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন

প্রসঙ্গত, কক্সবাজারের একমাত্র সর্বপ্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (সিবিআইইউ)। ইউনিভার্সিটি ট্রাস্ট-২০১৩ এর অধীনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত ইচ্ছায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের একমাত্র বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টি গড়া উঠে। বিশ্ববিদ্যালয়টি ট্রাস্টের তত্ত্বাবধানে বিগত ৭ বছর ধরে অতি সুনামের সঙ্গে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসলেও সম্প্রতি নানা জটিলতা হয়।