ওসি বদলির সাথে সাথে মাদরাসা শিক্ষকের বাড়ি দখলের মামলা ঘুরে গেল

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

অক্টোবর ১৫ ২০১৯, ০৩:৪৭

একুশে জার্নাল ডেস্ক: সিলেটের ওসমানীনগরে বিতর্কিত ওসি এসএম আল মামুনের বদলির পরই নিরীহ শিক্ষক মাওলানা আব্বাস আলীর বসতঘর উচ্ছেদ ও সাজানো মামলায় গ্রেফতারের ঘটনায় বাদিসহ ৪জনকে আটক করেছে পুলিশ।

রবিবার রাতে দায়িত্ব প্রাপ্ত ওসি (তদন্ত) উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে দুস্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমে তাদের আটক করেন। আটককৃতরা হচ্ছে উপজেলার সাজানো মামলার বাদি মিজান এলাহির বাড়ির কেয়ার টেকার তাজ উদ্দিন মাস্টার(৫০), গোয়ালাবাজারের কচবুরাই গ্রামের আছাদ চৌধুরী (৩৫), তাজপুরের কাশিকাপন গ্রামের পারভেজ মিয়া (২৬) এবং রুকনপুর গ্রামের বাবলু মিয়া (২৬)। এ ঘটনায় সাজানো চাঁদাবাজী মামলায় জেল হাজতে থাকা নিরিহ মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা আব্বাস আলীর স্ত্রী পারভিন বেগম বাদি হয়ে আটককৃত ৪ জনসহ ৯জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১০/১২জনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
এদিকে গতকাল সোমবার দুপুরে শিক্ষক আব্বাস আলীর উচ্ছেদ করা বাড়ি পরিদর্শন করেছেন সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন পিপিএম। এসময় তিনি ভুক্তভোগীদের সর্বোচ্চ আইনি সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন।
এছাড়া সোমবার অনুষ্ঠিত উপজেলা আইন শৃংখলা কমিটির সভায় বিষয়টি আলোচিত হয়। সভায় সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ তাহমিনা আক্তার।

ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম মাইন উদ্দিন আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে অভিযানে নেমে দুস্কৃতিকারীদের আটক করি। এঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং বাকি আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

প্রসঙ্গত, পূর্ব রুকনপুর গ্রামের নিরিহ গরিব মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা আব্বাস আলী লেপাস ও তার চাচাতো ভাই মিজান এলাহির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। প্রতিপক্ষের ভয়ে দীর্ঘদিন ধরে ওই শিক্ষক পরিবার নিয়ে বাড়ি ছেড়ে অনত্র বসবাস করে আসছেন। গত শুক্রবার মিজান এলাহির ভাড়াটে সন্ত্রাসী বাহিনী ওই গরিব শিক্ষকের বসতঘর উচ্ছেদের জন্য ভাঙচুর শুরু করে। খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে ঘর ভাঙচুরকারী দু’জনকে আটক করে এবং শিক্ষক আব্বাস আলীসহ তার স্বজনদের মামলা দেয়ার কথা বলে থানায় নিয়ে আসে। কিন্তু থানায় এনে অপরাধীদের ছেড়ে দিয়ে সাজানো চাদাবাজী মামলায় ওই গরিব শিক্ষক ও তার স্বজনদের থানায় আটকে রাখেন ওসি। পুলিশের সহায়তা নিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন তার বসতঘর সম্পূর্ণ উচ্ছেদ করে এবং মালামাল অনত্র সরিয়ে নেয়। ঘটনাটি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। রবিবার বিকেলে স্থানীয় এলাকাবাসী তাজপুর বাজারে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে  থানার ওসি ও দুস্কৃতিকারীদের শাস্তির দাবি জানায়। এছাড়া সম্প্রতি থানায় বর্ণাঢ্য ভাবে গান-বাজনা ও নৈশভোজের মধ্য দিয়ে থানায় নিজের যোগদানের বর্ষপূর্তি পালনের ঘটনায় গত রবিবার ওসি মামুনকে রংপুর রেঞ্জে বদলি করা হয়। তার বদলির পরপরই দুস্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামে পুলিশ।