ইমতিয়াজ বুলবুলের স্মরণে পূর্বাচলে হচ্ছে মিউজিয়াম

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জানুয়ারি ২২ ২০২০, ১৪:৩৭

বাংলাদেশের সঙ্গীত জগতে অবিস্মরণীয় এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। তিনি ছিলেন একাধারে গীতিকার, সুরকার এবং সঙ্গীত পরিচালক। এককথায় বাংলা গানের বিরল এক প্রতিভা। এক বছর আগে আজকের এই দিনে কোটি মানুষকে কাঁদিয়ে তিনি চলে যান না ফেরার দেশে।

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে বাবার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানিয়ে নতুন একটি গান প্রকাশ করছেন ছেলে সামির ইমতিয়াজ। গানের শিরোনাম ‘মাটি আমার ঠিকানা’। গানের কথা লিখেছেন গাজী তানভীর আহমেদ। গানটির সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছিলেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। গানটি নতুন করে রি-অ্যারেঞ্জ করেছেন রোজেন রহমান।

সামির ইমতিয়াজ জানান, ‘বাবার অনেকগুলো গানই অপ্রকাশিত রয়েছে। সেগুলো নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে আমার। আর এই গানটিতে বাবা বেঁচে থাকতেই গাইড ভয়েস দিয়েছিলেন। কম্পিউটারে অনেক দিন সেই গান রয়ে যায়। কিছুদিন আগে কম্পিউটার খুলে গানটি খুঁজে পাই। একটা উপলক্ষ দেখে গানটি প্রকাশ করতে চেয়েছিলাম। এরজন্য বাবার মৃত্যুবার্ষিকী বেছে নিলাম।’

সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে ঢাকার পূর্বাচলে পানজোড়া বড়বাড়ি এলাকায় সায়রা প্যাভিলিয়ন রিসোর্টে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল স্মরণে একটি মিউজিয়াম চালু করা হবে বলেও জানান সামির ইমতিয়াজ। তিনি বলেন, ‘আমার মা (সুবর্ণা ইমতিয়াজ) বাবার স্মৃতি সংরক্ষণ করার জন্য ৫০০০ বর্গফুটের একটি জায়গা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বাবার স্মৃতি সংরক্ষণে আমি যেন মিউজিয়াম ধরনের কিছু করি। ভাবলাম, ভাবনাটা বেশ চমৎকার। এই মিউজিয়ামের মাধ্যমে আগামী প্রজন্মও বাবার সম্পর্কে জানতে পারবে। এখানে বাবার ব্যবহৃত জিনিসপত্র রাখা হবে। এই মিউজিয়াম থেকে বাবার সৃষ্টি করা গান সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ১৯৫৬ সালের ১ জানুয়ারি ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। স্কুলে থাকা অবস্থায় মাত্র ১৫ বছর বয়সে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশ নেন। মুক্তিযুদ্ধ থেকে ফিরে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল নিয়মিত গান করেন।

১৯৭৮ সালে ‘মেঘ বিজলি বাদল’ ছবিতে সংগীত পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন। ১৯৮৪ সালে বেলাল আহমেদ পরিচালিত ‘নয়নের আলো’ চলচ্চিত্রের গীত রচনা ও সংগীত পরিচালনা করেন তিনি। সেই চলচ্চিত্রের তাঁর লেখা ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘আমার বাবার মুখে’, ‘আমার বুকের মধ্যেখানে’, ‘আমি তোমার দুটি চোখের দুটি তারা হয়ে থাকব’ গানগুলো জনপ্রিয়তা পায়। তিন শতাধিক সিনেমায় সংগীত পরিচালনা করেছেন। দুবার বাংলাদেশের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।

বুলবুলের প্রায় সবগুলো গানই পেয়েছে তুমুল জনপ্রিয়তা। এরমধ্যে রয়েছে ‘সব কটা জানালা খুলে দাও না’, ‘ঐ চাঁদ মুখে যেন লাগে না গ্রহণ’, ‘সেই রেললাইনের ধারে মেঠোপথটার পাড়ে দাঁড়িয়ে’, ‘একাত্তরের মা জননী, কোথায় তোমার মুক্তিসেনার দল’, ‘উত্তর দক্ষিণ পূর্ব পশ্চিম সব ঘুরে এক ব্রহ্মচারী থমকে দাঁড়াল’, ‘এই দেশটা আমার স্বপ্নে বোনা নকশিকাঁথার মাঠ’, ‘যুদ্ধ এখনো থামেনি তাই তো তোমার ছেলে আসেনি’, ‘ও আমার আট কোটি ফুল দেখো গো মালি’ ,‘মাগো আর তোমাকে ঘুমপাড়ানি মাসি হতে দেব না’, ‘আমার বাজান গেল কই বাজার থিকা আনতে গিয়া চিড়া মুড়ি দই’, ‘একদিন ঘুম ভেঙে দেখি তুমি নাই’, ‘ওকে আর করল না তো কেউ বিয়ে’।