ইজতিহাদ ও জিহাদের হার্মনি

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

সেপ্টেম্বর ১৬ ২০১৯, ২১:২০

[] মনোয়ার শামসী সাখাওয়াত []

 

পার্থিব জীবনের যাবতীয় যান্ত্রিক মনোটনি ক্লেদ ও গ্লানি
আমার দেহ ঢেকে দেয়, থাকে না কোন প্রভেদ তা মানি

বস্তুর সর্বগ্রাসী বন্যায় আমিও নিরুপায় হয়ে ভেসে যাই
খড়কুটোর মত আমার ক্ষুদ্র অস্তিত্ব বল কিভাবে টিকাই

যতই দিন যায় জাহেলি আগুন যেন জ্বলে উঠছে দিকেদিকে
আরো প্রখর হয়ে দাবানলের মত দালান পুড়ছে চারিদিকে

রুটি রুজি রিজিকের খোঁজে অসহায় মানুষ স্বেচ্ছাবন্দী হচ্ছে
সুদের কারবারী ইহুদী খ্রিস্টান চৈনিকের কৌশলী ঋণজালে

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অনৈতিক অপব্যবহারে বিশ্ব আজ অসুস্থ
শিক্ষা ও জ্ঞানের পীঠস্থান হয়েছে কর্পোরেট বিশ্বের অধীনস্থ

পাদ্রীদের বাড়াবাড়ির প্রতিক্রিয়ায় খোদ ধর্ম-ই হয়েছে প্রশ্নবিদ্ধ
সিজারের যা প্রাপ্য তা তাকে তো দিয়ে দিয়েছেন স্বয়ং যীশুখ্রিস্ট

গীর্জাগুলো আজ পড়ে আছে বিরান হয়ে শুধু স্থাপত্য বিস্ময় হয়ে
রবিবাসরীয় আসর পরিণত হয়েছে কেবল শুষ্ক রোবটিক রুটিনে

সাম্রাজ্যের নিষ্ঠুর নেশায় মত্ত হয়েছে গণতন্ত্রের ধ্বজাধারী প্রতীচ্য
একই উদ্দেশ্যে প্রতিযোগিতায় নেমেছে আজকের উদীয়মান প্রাচ্য

আধুনিকতা আর নারী স্বাধীনতার নামে একি অবাধ যৌনতা নৈরাজ্য
পাশ্চাত্য উচ্ছন্নে গেল বুঝি যেমন একদা গেছে গ্রীক রোমক সাম্রাজ্য

পণ্যসম্ভোগের চুম্বকী আকর্ষণে আধুনিক নাগরিক ভুলে গেছে তার আত্মা
শপিং মল আর নিয়ন লাইটের বিজ্ঞাপণে ঢাকা পড়েছে সত্য পরমসত্তা

জেরুজালেম, কাশ্মির, আরাকান মুসলিম কত জনপদ আজ জুলুমের অধীন
ইজতিহাদ ও জিহাদের ভারসাম্য দিয়ে হে মুসলিম তুমি এ বিশ্ব কর স্বাধীন।

 

উত্তরা, ঢাকা
১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

 

কবি পরিচিতি:
কবি মনোয়ার শামসীর জন্ম ১৯৬৭ সালে, ফরিদপুরে। পিতার সরকারী চাকরি সূত্রে শৈশব কেটেছে যশোর ও খুলনায়। পরে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৮৪-৮৬ সালে। এরপরে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে ১৯৮৯-৯৪ সালে। তিনি পেশায় একজন কারিক্যুলাম বিশেষজ্ঞ।

গদ্য ও পদ্য দুই মাধ্যমেই নিয়মিত লিখছেন। তিনি মূলত অনলাইনেই লেখালেখি করেন বেশি। তাঁর একটি গদ্যগ্রন্থ ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে ২০১৮ সালে — ‘রিথিংকিং ইসলাম ইন পোস্টমডার্ন টাইমস” শিরোনামে। অচিরেই তাঁর কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হতে যাচ্ছে — ‘রুপালী কলসভরা রুহানী কাব্যজল’ শিরোনামে।

রুমি, হাফিজ, শেখ সাদী, জামী প্রমুখ পারসিক মহান সুফি কবিরা তাঁর আদর্শ। বাংলা কবিতাকে তিনি পুনরায় অধিবিদ্যাগত ও আধ্যাত্মিক পরিমন্ডলে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন।