আল হাসানাহ রক্তদান সোসাইটি’র ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান সম্পন্ন

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

ডিসেম্বর ২৪ ২০২২, ১৪:১৫

“মানবতার কল্যাণে এগিয়ে আসুন রক্তদানে” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে ২৩শে ডিসেম্বর (শুক্রবার) বাদ জুম্মা তাজপুর কদমতলাস্থ নুরুল কোরআন মাদ্রাসায় আল হাসানাহ রক্তদান সোসাইটি’র ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং ৬ষ্ঠ বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে দোয়া মাহফিল ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হাফিজ মাওলানা ইমাদ উদ্দিন এর সভাপতিত্বে ও নিবেদিত সদস্য হাফিজ শায়েখ ও হাফিজ সায়েম আহমদের যৌথ পরিচালনায় কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয়।

এতে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, খিদমাহ ব্লাড ব্যাংক এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবু সাইদ ইসহাক। ডিটিএলবি ও দারুল আজহার মডেল মাদ্রাসার পরিচালক  মুফতি মিনহাজ উদ্দিন মিলাদ সাহেব। বিশিষ্ট সমাজ সেবক  মাওলানা কে এম রায়হান সাহেব।ভিডিও কল এর মাধ্যমে বক্তব্য প্রদান করেন uae প্রবাসী, সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান হাফিজ মাওলানা মুহাম্মাদ সাইম উদ্দিন সাহেব।

এছাড়া আল হাসানাহর দায়িত্বশীলবৃন্দ বক্তব্য রাখেন, যথাক্রমে— প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সাবেক পরিচালক মাওলানা যাকারিয়া যাকি সাহেব।

প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হাফিজ মুফতি এনামুল হক্ব ফুজায়েল সাহেব। প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মোজাক্কির আহমেদ নাজু, মাওলানা নুরুদ্দিন নুর আলী, মাওলানা মুকবুল হুসাইন।

সদস্য এম কে নিজাম সাহেব, মাওলানা সালমান খালিদ, মাওলানা ইকবাল মাহমুদ, মাওলানা হুসাইন মাহমুদ, শেখ ওলীউর রহমান, শাহ উসামা আহমেদ, আব্দুল্লাহ রাবিব প্রমুখ।

অতিথিবৃন্দ তাদের বক্তব্যে বলেন রক্তদান একটি মানবিক দায়বদ্ধতা, সামাজিক অঙ্গীকার। “রক্ত দিন জীবন বাঁচান” ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার রক্তই এক লাল রঙের। এর মধ্যে কোনো বিভেদ নেই। মানুষের শরীরে রক্তের প্রয়োজনীয়তা এত বেশি যে, এটা ছাড়া কেউ বেঁচে থাকতে পারে না। মুমূর্ষু রোগীকে বাঁচাতে প্রায়ই জরুরি ভিত্তিতে রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। যেমনঃ দুর্ঘটনায় আহত রোগী, অস্ত্রোপচারের রোগী, সন্তান প্রসবকালে, ক্যানসার বা অন্যান্য জটিল রোগে, এলিমিয়া, থ্যালাসেমিয়া, থিমোফিলিয়া ইত্যাদি কারণে রক্ত সঞ্চালনের প্রয়োজন পড়ে। বাংলাদেশের মতো গরিব দেশে বছরে পাঁচ থেকে ছয় লাখ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয়, যার মাত্র ৩০ শতাংশ পাওয়া যায় স্বেচ্ছায় রক্তদাতার মাধ্যমে। বাকি রক্ত অধিকাংশ ক্ষেত্রে পেশাদার রক্তদাতা এবং আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়।রক্ত অবশ্যই মানবদেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। পূর্ণমাত্রায় রক্ত থাকলে মানবদেহ থাকবে সজীব ও সক্রিয়। আর রক্তশূন্যতা বা এনিমিয়া দেখা দিলেই শরীর অকেজো হয়ে পড়ে, প্রাণশক্তিতে ভাটা পড়ে। এই অতি প্রয়োজনীয় জিনিসটি কলকারখানায় তৈরি হয় না। বিজ্ঞানীদের যথাসাধ্য চেষ্টা সত্ত্বেও এখনো রক্তের বিকল্প তৈরি করা সম্ভব হয়নি। নিকট ভবিষ্যতে পাওয়া যাবে! এমনটাও আশা করা যায় না। মানুষের রক্তের প্রয়োজনে মানুষকেই রক্ত দিতে হয়। জীবন বাঁচানোর জন্য রক্তদান এতই গুরুত্বপূর্ণ যে, বলা হয় ‘করিলে রক্তদান, বাঁচিবে একটি প্রাণ’ ‘সময় তুমি হার মেনেছো রক্তদানের কাছে, দশটি মিনিট করলে খরচ একটি জীবন বাঁচে। এ সময় আল হাসানার যাবতীয় কার্যক্রম দেখে অতিথিরা ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং যেকোনো মুহুর্তে আল হাসানাহ কে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার চেষ্টা করবেন।

উল্লেখ যে ২০১৭ সালে ১৬ডিসেম্বর সোসাইটির যাত্রা শুরু, সিলেট জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, ওয়াজ মাহফিলে ক্যাম্পিং তথা কর্মসূচির আলোকে এ পর্যন্ত ২০০০হাজার ব্যাগ রক্ত দান করে অনেক অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।এবং ৬০০০ হাজার মানুষের রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করতে সক্ষম হয়েছে।এছাড়াও হত দরিদ্র বিপদগ্রস্ত মানুষদেরকে বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করেছে।

অনুষ্ঠানে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়—

প্রতিষ্ঠাতা সদস্য (১৬জনকে) ডায়মন্ড এ্যাওয়ার্ড (৩ জনকে পনের বার রক্তদাতা) গোল্ডেন এ্যাওয়ার্ড (৪ জনকে দশ বার রক্তদাতা) সিলভার এওয়ার্ড ( ৮ জনকে পাঁচ বার রক্তদাতা)

গোল্ডেন এ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত সদস্য শাহ সৈয়দ শাহি আহমেদ যুক্তরাজ্য গমন উপলক্ষে সোসাইটির পক্ষ থেকেও সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।

ব্লাড ম্যানেজম্যান্টের গুরুত্ববহ দায়িত্ব পালন করায় মাওলানা হুসাইন মাহমুদ এবং হাফিজ সায়েম আহমদকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

উপস্থিত সদস্যদেরকে সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান হাফিজ মাওলানা মুহাম্মাদ সাইম উদ্দিন এর পক্ষ থেকে গিফট প্রদান করা হয়। আরো উপস্থিত ছিলেন: সোসাইটির ম্যানেজম্যান্টের দায়িত্বশীল মাওলানা হুসাইন মাহমুদ, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মাওলানা মুমিনুল হক সহ সর্বস্তরের দায়িত্বশীল, সদস্য ও শুভাকাঙ্ক্ষীবৃন্দ।

বার্ষিক রিপোর্ট পেশ করেন মাওলানা যাকারিয়া যাকি সাহেব। পরিশেষে সভাপতি সমাপ্তি বক্তব্য প্রদান করেন এবং দোয়া পরিচালনা করেন নুরুল কোরআন মাদ্রাসার মুহতামিম হাফিজ আব্দুল কুদ্দুস সাহেব।