আল্লামা আহমদ শফীর বক্তব্য : কিছু কথা

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জানুয়ারি ১২ ২০১৯, ১২:১৪

হাবীব আনওয়ার: হাটহাজারী মাদরাসার বার্ষিক মাহফিলে আমিরে হেফাজত আল্লামা আহমদ শফী হাফিযাহুল্লাহ এর বক্তব্য নিয়ে কিছু মিডিয়া এমন খুশি হয়েছে, যেমন খুশি হয় চৈত্রের কাঠফাটা রোদে পানির জন্য হাহাকার করা ব্যক্তি যখন পানি পায়। এসকল মিডিয়া সবসময় কান পেতে থাকে, হুজুর কখন এমন কিছু কথা বলবেন, যা তাদের মত চেতনাবাজদের কিছু খোরাক জোগাবে। অথচ, এই মাথামোটাগুলো কখনও চিন্তা করে না যে, আল্লামা আহমদ শফী দা.বা. এই কথাগুলো কেন বললেন।

আল্লামা আহমদ শফী দা.বা. গতকাল বলেছেন, “মেয়েদেরকে স্কুল-কলেজে পাঠাবেন না…”। কিন্তু তিনি কেন এমনটি বলেছেন, এটি বলার আগে ও পরে কী কী কারণ উল্লেখ করেছেন, পক্ষপাতদুষ্ট সাংবাদিকরা এসব কোন মিডিয়ায় উল্লেখ করেনি। কারণ, তা উল্লেখ করলে তো তাদের মিশন সফল হবে না। টকশোতে তাদের নষ্ট চেতনা বিক্রি করা যাবে না।

আমরা সকলেই আমাদের সন্তানদের বিশেষ করে মেয়েদের নিয়ে চিন্তিত-সঙ্কিত।কারণ, দেশে যে হারে গণধর্ষণ চলছে, এ পরিস্থিতিতে কোন পিতা-মাতা তার সন্তানকে ঘরের বাহিরে পাঠিয়ে নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন না। প্রতিদিন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হচ্ছে যে, আজ অমুক জায়গায় শিক্ষকের হাতে ছাত্রী ধর্ষণ, সহপাঠীদের হাতে স্কুল ছাত্রী ধর্ষণ। সর্বশেষ গত পরশু শেরপুরে প্রকাশ্যে স্কুল ছাত্রীকে চুমু দেওয়ার অপরাধে তিন বখাটেকে জেলে পাঠিয়েছে আদালত।

হুজুর মূলত এবিষয়গুলো থেকে আমাদের সম্মানিতা মেয়ে, বোন, ভাতিজীদের হেফাজতের জন্য হুজুর সাদামাটা ভাবে বলেছেন, তাদের স্কুল কলেজে পাঠাবেন না। এর অর্থ হলো, নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের স্কুল কলেজে পাঠাবেন না। কারণ, বর্তমান স্কুল কলেজগুলো নিরাপদ নয়।প্রতিনিয়ত অঘটন ঘটেই চলছে এসব প্রতিষ্ঠানে ৷

আপনি অনেক কষ্ট করে খেয়ে না খেয়ে আপনার মেয়ের জন্য টাকা রোজগার করে বিভিন্ন ভার্সিটিতে সন্তানকে ভর্তি করিয়ে দিচ্ছেন। আপনার অনেক আশা। আপনার মেয়ে ভাল শিক্ষিত হবে, ডাক্তার হবে ইত্যাদি। কিন্তু আপনার মেয়ে সেখানে কী করছে, তা আপনি নিজে গিয়েই দেখে আসুন!

একজন মেয়েকে ভরণ-পোষণ প্রদানের দায়িত্ব বিয়ের আগ পর্যন্ত তার বাবার। বাবা না থাকলে বড় ভাইয়ের। কিন্তু ছেলের ক্ষেত্রে শুধু বালেগ হওয়া পর্যন্ত। আপনার জিম্মায় থাকা অবস্থায় আপনার মেয়ের দেখাশোনা করা, তাকে শরীয়ত মতো চালানোর দায়িত্ব আপনার। আপনার জিম্মায় থাকা অবস্থায় যদি সে শরীয়ত বিরোধী কাজ করে তাহলে তার দায় আপনাকে নিতে হবে।

আমি মিডিয়ার ভাইদের বলবো, অযথা ফালতু কাজে কেন সময় ব্যয় করেন? এসবের হিসেব কি আপনাকে দিতে হবে না? আপনি একজন মিডিয়া কর্মী। আপনার উপর মানুষের যে আস্থা আছে তা রক্ষা করুন।এসব বিতর্কিত নিউজের দ্বারা আপনার ক্ষতি ছাড়া কোন লাভ হবে না। দেখবেন, আপনার ঘরের লোকগুলোও আপনাকে বিশ্বাস করতে পারবে না। তাই আসুন, আমরা মুসলিম। আমাদের স্বকীয়তা বজায় রেখে পথ চলি।

লেখক: শিক্ষার্থী, মেখল হামিয়ুচ্ছুন্নাহ মাদরাসা, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।