আপোষহীন আল্লামা বাবুনগরীকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হচ্ছে

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জানুয়ারি ২৫ ২০১৯, ১৪:৪৪

হাবীব আনওয়ার

আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী হাফিজাহুল্লাহ ৷ একটি নাম। একটি ইতিহাস। একটি আশা-ভরসার স্থান।একজন মজলুম আলেমেদ্বীন। দেশের সর্ববৃহৎ দ্বীনী বিদ্যাপিঠ হাটহাজারী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী পরিচালক। অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সংগ্রামী মহাসচিব। সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি একজন বিদগ্ধ মুহাদ্দিস। তার কাছ থেকে হাদীসের দরস নিয়ে হাজার হাজার আলেম আজ সারা পৃথিবীতে দ্বীনের প্রচার- প্রসার করছেন।

হযরতের আরও একটি বড় পরিচয় হলো, তিনি আপোষহীন একজন নেতা। হেফাজতে ইসলামের সেই ভয়াবহ ট্রাজেডির সময় বিনা দোষে রিমাণ্ডে ৩২ দিন জালেমের জুলুম নির্যাতন সহ্য করেছেন। কিন্তু কখনও আপোষ করেননি।

তাঁর বয়স সত্তরের কোঠায়। রিমান্ডের সেই বর্ণনাতীত নির্যাতনের পর থেকেই তিনি বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত। ডাক্তারের পরামর্শ তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নেওয়া খুবই প্রয়োজন৷ কিন্তু তিনি চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যেতে পারছেন না, পাসপোর্ট না থাকার দরুণ! ২০১৩ সালের অদ্ভূত কিছু মিথ্যা মামলার দায়ে তাঁকে গ্রেফতার করার পর তাঁর পাসপোর্ট নিয়ে নেওয়া হয়।যা আজ অব্দি ফেরত দেয়নি সরকার। বিভিন্ন সময় ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিলেও তারা কথা রাখেনি।

মুফতী আমিনী রহ.-কে আমরা সবাই চিনি। কীভাবে বাতিলের সাথে আপোষহীন ভাবে পথ চলতে হয় সেই শিক্ষাটা আমাদের দিয়ে গেছেন সযত্নে। মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত যিনি সত্যের পথে লড়ে গিয়েছেন, তিনিই মুফতী আমিনী রহ.! মুফতী আমিনী রহ.-কে সরকার ইচ্ছে করলে কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্টে নিক্ষেপ করতে পারতেন। কিন্তু সরকার তা করেনি৷ কেন করেনি জানেন? কারণ, আমিনী রহ.-এর জনপ্রিয়তা এত বেশি ছিল যে, জনতার রোষানল এড়াতেই তাকে কারাগারে পাঠায়নি। কিন্তু সরকার তাঁকে কৌশলে নজরবন্দি রেখে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে। যা আমাদের অনেকের বোধগম্যই হয়নি। দুঃখজনক ৷

আমি মনে করি আল্লামা বাবুনগরীর বেলায়ও সরকার সেই নীতি গ্রহণ করেছে। পাসপোর্ট জব্দ করে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত রেখে মুফতি আমীনি রহ.-এর ন্যায় আল্লামা বাবুনগরীকেও নিশ্চিত মৃত্যুমুখে ঠেলে দেয়া হচ্ছে ৷ তাই আল্লামা বাবুনগরীর পাসপোর্ট ফেরত নিয়ে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা এখন সময়ের দাবী ৷

বর্তমান সময়ে (আমি যদি ভুল না বলি) হেফাজত নেতাদের সাথে সরকারের একটা সখ্যতা গড়ে উঠেছে। অনেকে নাকি সরকার থেকে বিভিন্ন সুবিধাও ভোগ করছেন! তো যারা সরকারের মেহমান হচ্ছেন, তারা ইচ্ছে করলেই আল্লামা বাবুনগরীর পাসপোর্ট ফেরত আনাসহ উলামায়ে কেরামের নামে করা সকল মামলা প্রত্যাহারের কাজটিও সেরে ফেলতে পারেন। কিন্তু কেন যেন, সবসময় বিষয় দুটি এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে…

আল্লামা বাবুনগরী এ দেশের সম্পদ। এ দেশকে উন্নতির উচ্চ শিখরে নিতে হলে আল্লামা বাবুনগরী’র মত বিদগ্ধ মুহাদ্দিস ও জনদরদী মানুষের প্রয়োজন অনস্বীকার্য। সরকার প্রতি আমাদের উদাত্ত আহ্বান, অবিলম্বে তাঁকে তাঁর অধিকার ফিরিয়ে দিন!

লেখক: শিক্ষার্থী, মেখল মাদরাসা, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।