আননূর ছাত্রকাফেলার নতুন চমক

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

আগস্ট ২৬ ২০২৩, ২৩:৫৮

দেশের বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামিয়া গহরপুরের ছায়া সংগঠন আননূর ছাত্র কাফেলা নিজের সৃজনশীল ও সুরুচিকর কাজ দিয়ে দিনদিন ইতিহাসে রঙিন অধ্যায় রচনা করছে। জামিয়া গহরপুরের প্রিন্সিপাল, বেফাকের সহ-সভাপতি, আল-হাইআতুল উলিয়ার সম্মানিত সদস্য মাওলানা মুসলেহুদ্দিন আহমদ গহরপুরীর পৃষ্ঠপোষকতায় অভিনব কার্যপ্রণালির মধ্য দিয়ে প্রতিনিয়ত আননূর ছাড়িয়ে যাচ্ছে সময়কে।

অপসংস্কৃতির তুমুল জয়জয়কারের এই যুগে আননূর ছাত্রকাফেলার সাংস্কৃতিক বিভাগ নিয়ে এসেছে নতুন চমক “রাসূল প্রেমের নাত” (নাশিদ)। দেশের খ্যাতিমান নাশিদশিল্পী, আহমদ আব্দুল্লাহ’র হাতে গড়া অন্যতম শিষ্য, তরুণ গীতিকার, সুরকার, আননূর সাংস্কৃতিক বিভাগের প্রধান জাকির সুহরাবের কথা, সুর ও কন্ঠে গত শুক্রবার বাদ আছর আননূর চ্যানেলে রিলিজ হয় অনবদ্য এই নাশিদ। তার সাথে সাকিব, আব্দুল্লাহ, জাবেদ ও ময়নুল কন্ঠ দিয়ে নাশিদটিকে আরো প্রাণবন্ত ও শ্রুতিমধুর করে তুলে।

নাশিদটি রিলিজ হওয়ার পর থেকেই শ্রোতামহলে পরিলক্ষিত হয় এক অন্যরকম ভাবাবেগ। রাসূল প্রেমের অনবদ্য এই নাশিদটি অল্প সময়ের মধ্যেই জয় করে নেয় শ্রোতাদের মন। জামিয়ার উস্তাদদের থেকে শুরু করে মাদ্রাসার ছাত্র, জেনারেল শিক্ষিত, সাধারণ জনগণ সবাই নিজেদের মুগ্ধতার কথা শেয়ার করেন নিজেদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওয়ালে।

জামিয়া গহরপুরের ইফতা বিভাগের প্রধান, মুফতি আব্দুল্লাহ সাহেব আননূরের এই চমৎকার কাজের প্রশংসা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেন “আমাদের ছেলেগুলো সুন্দর গেয়েছে। আল্লাহ যেন তাদেরকে দ্বীনের খাদেম হিসেবে কবুল করেন।” এছাড়া ‘মাদ্রাসার ছাত্রদের গজল, নাশিদে মন না দিয়ে শুধু পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়া চাই’ এমন মন্তব্যের যের ধরে বলেন “আমরা হার লাইনের তাগাদা পূরণ করার চেষ্টা করি।” এভাবেই আননূরীয়ান জামিয়ার আসাতিযা ও মুরব্বিদের নেক নজর, দোয়া ও ভালোবাসা প্রাপ্তির মাধ্যমে নিজেদের আরো উচ্চ অবস্থানে নিতে উৎসাহিত হচ্ছে। দিনদিন নিজেদের পদচ্ছাপকে সুদৃঢ় করছে পৃথিবীর বুকে।

“রাসূল প্রেমের নাত” নাশিদকে কেন্দ্র করে আননূরের বর্তমান জিএস ইলিয়াছ আহমদ লিখেন,”মুহাম্মাদ ﷺ।এই পবিত্র নামের মধ্যে যাদু মিশে আছে। আছে হৃদয়ের সুখ। আত্মার খোরাক। এ-নাম শোনামাত্র পরম ভক্তিতে ভরে ওঠে দিল। জেগে ওঠে আবেগ-অনুরাগ। নামের মানুষটি আমাদের আদর্শ। শ্রেষ্ঠ আলোক। যাঁর আলোর ধারে মাথা নত করে চির সুন্দর চাঁদ! তিনি সুন্দর— তাঁর সৌন্দর্যের সামনে সিজদা করে গোলাপ। পৃথিবীর সমস্ত নাস্তিক; তাঁর চরিত্রে কালিমা লেপন করতে চাইলেও— তিনি গোলাপের মতো নিষ্কলুষ। উসওয়াতুন হাসানায় স্বীকৃত মহাপুরুষ। আমাদের হৃদয় উত্তাল সতত—তাঁর প্রেমানলে।

ফিদাকা নাফসি ইয়া রাসুলাল্লাহ…!

রাসুল প্রেমের নাত গেয়েছেন অজস্র শিল্পী—নিজস্ব সুর লহরী দিয়ে। হৃদয়ের আবেগ মিশিয়ে। কিন্তু আমাদের এই আয়োজন সম্পূর্ণ ভিন্ন। আননূর ছাত্রকাফেলার সাংস্কৃতিক বিভাগের এই প্রযোজনা আপনাদের মুগ্ধ করবে, হৃদয়ের

হৃদয় উদ্বেল হবে রাসূল প্রেমের নাতে—ইনশাআল্লাহ।”

এছাড়াও আরো অনেকে নাশিদ ও তদসংশ্লিষ্ট সবার ভবিষ্যত উজ্জ্বল ও উচ্ছল হওয়ার কামনা ব্যক্ত করেন।

রাসূল প্রেমের লেখক 

রাসূল প্রেমের নাত জাকির সুহরাববের এক অতুলনীয় সৃষ্টি। অল্প বয়সেই গীত সংগীতে তার ব্যাপক দখল। ইতিমধ্যেই তার লেখা অনেকগুলা নাশিদ দর্শকমহলে জনপ্রিয়। ‘দুরুদের গান’ ‘আরবের ফুল’ এগুলোর অন্যতম। সুখের বিষয় হলো তার পাবলিশ হওয়া প্রথম নাশিদ “দুরুদের গান” তারই সংগীত বিষয়ক মুরশিদ আহমদ আব্দুল্লাহ পরিবেশন করেন, রিলিজ হওয়ার প্রাক্কালে তিনি বলেন, “জাকির সুহরাব, সে আমার ছাত্র। ছাত্র মানে হিফজের ছাত্র। তিন বছর পড়িয়েছি। মেধাবী ছেলে। তার সাথের আরও অনেকে আছে প্রচুর মেধাবী । জাকির এখন দুর্দান্ত লেখে। অনেকগুলো নাশিদ লিখে দিয়েছে। ধীরে ধীরে সেগুলোও আসবে ইনশাআল্লাহ।” তিনি আরো বলেন, “ছাত্রের লেখা নাশিদ গাচ্ছি ভাবতেই অন্যরকম লাগছে। জাকিরের মেধায় আল্লাহ আরও বরকত দিন, আমিন।”

রিলিজ পরবর্তী সময় থেকে এখন পর্যন্ত দুরুদের গান সমান তালে দর্শকপ্রিয়। জাকির সুহরাবের মায়াবী তুলিতে আঁকা চির জীবন্ত একটি গান এটি। এমন একটি লিরিকের মাধ্যমে নাশিদ অঙ্গনে জাকির সুহরাবের রাজকীয় অভিষেক তার তীক্ষ্ণ ও শক্তিমান কলমেরই সুফল। সৃজনশীল ও সুরুচিবোধতার পরিচায়ক। হিতাকাঙ্ক্ষী ও কল্যাণকামীরা তার গীত সংগীতে উজ্জ্বল, আলোময় ও কর্মমুখর ভবিষ্যতের আশাবাদী। সুহরাব দিনদিন নিজেকে ছাড়িয়ে যাক এই প্রত্যাশাবাদী। আল্লাহ তাকে কবুল করুক।

আননূর সর্বদা আপন গতিতে চির দুর্দম। আননূর মুক্তা জন্ম দেয়া ঝিনুকের বহুল প্রতীক্ষিত বৃষ্টির ফোটা। জ্বলজ্বলে ইয়াকুতিদের জন্ম দেয়াই তার মূল অভিপ্রায়। আননূর নিজ গতিতে এগিয়ে চলুক। ঝলমলে তারকাদের ভিড়ে আলোকিত হোক তার আলয়। নতুন এই কাজ সহ তার সমস্ত কাজকে সাধুবাদ জানাই। ভবিষ্যতে আরো সুন্দর, সৃজনশীল, ও আবেদনময়ী কাজ নিয়ে পৃথিবী মঞ্চে হাজির হোক এই কামনা করি।