অফিসারদের সম্মানে মসজিদের সামনের কাতার খালি রাখার নির্দেশ

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জুলাই ০৪ ২০২০, ১৯:৫৫

একুশে জার্নাল ডেস্ক;

টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদে একটি নোটিশ নিয়ে সমালোচনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। মসজিদের প্রথম কাতারে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী ছাড়া কেউ দাঁড়াবেন পারবে না বলে ওই নোটিশে উল্লেখ করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে নোটিশটি মসজিদে প্রবেশ দরজাসহ বিভিন্ন স্থানে দেখা যায়।

নোটিশে লেখা ছিলো, “সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, বাসাইল উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক নামাজের জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। পাঁচ ওয়াক্ত এবং জুমার নামাজ চিহ্নিত জায়গার বাহিরে পড়া যাবে না এবং জামাত দাঁড়ানোর পূর্ব পর্যন্ত অফিসারগণের সম্মানে সামনের কাতারে না দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করা হলো। জামাত দাঁড়ানোর সময় সামনের চিহ্নিত খালি জায়গা পূরণ করে দাঁড়াবেন। মসজিদের বাহিরে/রাস্তায় মসজিদের কার্পেট বিছানো হবে না। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এ আদেশ কার্যকর থাকবে।”

জানা গেছে, মসজিদটির পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামছুন নাহার স্বপ্না ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন উপজেলা অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজার আল-আমিন।

বাংলা ট্রিবিউন এর সুত্রে জানা যায়, এমন ঘটনার পর ওই মসজিদের একজন মুসল্লি ক্ষোভের সাথে বলেন, “নোটিশটি টাঙানোর পর থেকে আমি ওই মসজিদে যাওয়া বাদ দিয়েছি। ওটা অফিসারদের মসজিদ।”

এ বিষয়ে বাসাইল উপজেলা ঈমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা মজিবর রহমান হেলালী বলেন, “মসজিদে যিনি আগে ঢুকবেন, তিনিই প্রথম কাতারে বসবেন। মসজিদে কোনো বৈষম্য নেই, সবাই সমান। কাউকে উঠিয়েও দেওয়া যাবে না। অফিসাররা প্রথম কাতারে বসবে, এটা হাদিস সম্মত না। মসজিদ কর্তৃপক্ষের এধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হয়নি।”

উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের ঈমাম হাফেজ রেজাউল করিম বলেন, “গত বৃহস্পতিবার মসজিদ পরিচালনা পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশে এ সংক্রান্ত নোটিশ সাঁটিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়াও শুক্রবার জুমআ’র নামাজের আগে নোটিশটি পড়ে মুসল্লিদের জানিয়ে দেওয়া হয়। সিদ্ধান্তটা পুরোপুরি মসজিদ কমিটির। তাদের নির্দেশনা মোতাবেক আমি শুধু সেটি বাস্তবায়ন করেছি।”

তবে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন বলেন, “কয়েকদিন ধরে মুসল্লিরা স্বাস্থ্যবিধি না মেনে নামাজ আদায় করছিলেন। যাতে সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামাজ আদায় করেন, এ জন্য নোটিশ দিয়ে বিষয়টি জানানোর জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু মসজিদের ঈমাম আগ বাড়িয়ে অফিসারদের বিষয়টি লিখেছেন। সামনের কাতারে অফিসাররা বসবেন এটা আমি তাকে লিখতে বলিনি।”

এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ইউএনও শামছুন নাহার স্বপ্না বলেন, “নোটিশের বিষয়টি আমার জানা ছিল না। পরে জানতে পেয়ে নোটিশটি তুলে নেওয়া হয়েছে। আমার অনুমতি না নিয়ে কীভাবে নোটিশ দেওয়া হলো এ বিষয়ে আগামীকাল (৫ জুলাই) জরুরি মিটিং আহ্বান করা হয়েছে।”

সুত্র: Bangla Tribune