মাওলানা শরীফ মুহাম্মদের মত মানুষ আমাদের সমাজে আরো প্রয়োজন
একুশে জার্নাল ডটকম
আগস্ট ২৩ ২০১৯, ১৫:৩৭
ড. আ ফ ম খালিদ হোসাইন
২০০৪-২০০৫ সালের কথা মাওলানা শরিফ মুহাম্মদ সাহেব আমাকে চিঠি লিখে হযরত হাফেজ্জী হুযুর স্মারকগ্রন্থের জন্য লেখা পাঠাবার অনুরোধ করেন।তিনি ছিলেন স্মারকগ্রন্থের নির্বাহী সম্পাদক।তখন তাঁর সাথে আমার পরিচয় না থাকলেও নামের সাথে সখ্যতা গড়ে উঠে।পরবর্তী সময়ে তিনি দৈনিক ‘আমার দেশ’ পত্রিকার ইসলামী পাতার সম্পাদক ও মাসিক ‘আল কাউছার’ এর নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে কাজ শুরু করলে তাঁর সাথে আমার হৃদ্যতা বৃদ্ধি পায়।পত্রিকা অফিসে, পুরানা পল্টনে ও বায়তুল মুকাররমে তাঁর সাথে বসার সুযোগ হয়। বিভিন্ন সমসাময়িক ইস্যুর ওপর অনেক লেখা ‘আমার দেশ’ পত্রিকায় ছাপার ব্যবস্থা করেন তিনি।তখন দেশজুড়ে ছিল ‘আমার দেশ’-এর কাটতি। মাঝে মধ্যে ফোন করে লেখার ব্যাপারে পরামর্শ ও তাগাদা দিতেন।তাঁর সহযোগিতায় ‘আমার দেশ’ থেকে লেখক সন্মানীও পেয়েছি।আমার নিবন্ধ তাঁর হাতে পৌঁছতে দেরি ছাপতে দেরি নেই।
মাওলানা শরিফ মুহাম্মদ সাহেব একাধারে আলিম, লেখক, সম্পাদক, অনুবাদক, বক্তা ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব।বর্তমানে তিনি ইসলাম টাইমস ২৪. কম নামক নিউজ পোর্টালের সম্পাদক। বহুমাত্রিকতা তাঁর জীবনকে স্বতন্ত্রতায় মহিমান্বিত করেছে।সিলেট, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে তাঁর সঞ্চালনায় সন্ত্রাসবাদ বিষয়ক অনেক সেমিনার, আলোচনা ও মতবিনিময় সভায় বক্তব্য উপস্থাপনার সুযোগ হয়েছে আমার।
সম্পর্ক দিনদিন প্রগাঢ় হতে থাকে।তিনি আমাকে পছন্দ করেন। আমিও তাঁকে মুহাব্বত করি। বছর দু-তিনেক আগে তিনি একদিন চট্টগ্রামে আমার বাসায় হাযির যন্ত্রপাতি নিয়ে।তাঁর রিসালাহ বিডি প্রতিষ্ঠানের জন্য আমার ভিডিও সাক্ষাৎকার রেকর্ড করলেন। এই ভিডিওর ভিউয়ার প্রায় ৩০ হাজারের মত।
সাম্প্রতিক সময়ে একসাথে লালমনিরহাট সফর করি।তাঁর সহজাত সারল্য, ঈর্ষামুক্ত মন, মার্জিত আচরণ, বন্ধুবাৎসল্য, রসবোধ, হাসিমুখ, গুছিয়ে কথা বলার ধরন আমাকে বারে বারে মুগ্ধতায় আবিষ্ট করেছে।সাদাসিধে জীবন, অনাড়ম্বর পরিচ্ছদ, প্রতিভা অন্বেষণের প্রবণতা, সময়নিষ্ঠা, মানুষকে সম্মান করার মানসিকতা তাঁর জীবনের আলোকিত বৈশিষ্ট্য।নির্ঝঞ্ঝাট জীবানাচারে অভ্যস্ত এই সাধক বিবাদ এড়িয়ে চলেন।তাঁর সামনে কোন মানুষের ব্যাপারে কেউ অনুযোগ করলে তিনি তার সম্ভাব্য ব্যাখ্যা দেন যাতে গীবতের দ্বার উম্মোচিত না হয়।ইসলামী আদর্শের বিকাশ ও বিজয় তাঁর জীবনের চরম ও পরম আরাধ্য।আদর্শের ব্যাপারে তাঁর নিরাপোষ ভূমিকা আমার মতো অনেককে তাঁর কাছে টানে। নিজের চাইতে অন্যকে লাইমলাইটে আনতে পারলে তিনি যেন স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। ধান্ধাবাজি, অর্থলোলুপতা, ক্ষমতার অলিন্দে ঘোরাঘুরিকে তিনি ঘৃণার চোখে দেখেন।আমি দেখেছি যাদের নামের সাথে শরিফ আছে তাঁরা সাধারণত “শরিফ” হয়ে থাকেন। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মিয়া নওয়াজ শরিফ, পাঞ্জাবের সাবেক চীফ মিনিস্টার শাহবাজ শরিফের ভদ্রতা, সৌজন্য ও বিনয় অসাধারণ।হতে পারে এটা নামের পরোক্ষ প্রভাব।
মাওলানা শরিফ মুহাম্মদ সাহেবের মত মানুষ আমাদের সমাজে আরো জন্মলাভ করুক এটাই আল্লাহ তায়ালার দরবারে বিনীত প্রার্থনা। দিগন্তে প্রত্যাশার নতুন প্রভাত উঁকি দিচ্ছে। বহু তরুণ আলিম মিডিয়ার সাথে ইদানিং যুক্ত হয়েছেন দেখলে মনটা উৎফুল্ল ও আশাবাদী হয়ে উঠে। অনেকের সাথে পরিচয় নেই। অনেককে নামে চিনি সামনাসামনি দেখা হয়নি। মোবাইলে কথা হয়। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা প্রয়োজন মনে করি>> মাওলানা লিয়াকত আলী, মাওলানা উবায়দুর রহমান নদভী নকশবন্দী, মাওলানা হুমায়ুন আইয়ুব, মুফতি এনায়েতউল্লাহ, মাওলানা জহিরউদ্দিন বাবর, মুফতি কাসেম শরিফ, মাওলানা আলী হাসান তৈয়ব, মুফতি আমিন ইকবাল, মাওলানা আতাউর রহমান খসরু, মাওলানা শায়খ উসমান গণি, মাওলানা হাম্মাদ রাগিব, মাওলানা মুহাম্মদ মিনহাজুদ্দিন, মুফতি মুহাম্মদ মর্তুজা, মাওলানা অাবদুল গাফফার, এবং আরো অনেকে। এই সব তরুণরা হচ্ছেন A Galaxy of Stars যারা আলো ছড়াচ্ছেন। সকলের প্রতি রইল নিরন্তর শুভ কামনা। দোয়া করি আল্লাহ তায়ালা যেন সবাইকে হায়াতে তাইয়েবা নসীব করেন, আমিন।