পাইলট নিয়োগে অনিয়ম: ফেঁসে গেলেন বিমানের সাবেক দুই এমডি

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

নভেম্বর ২৫ ২০১৯, ২১:৪১

অবশেষে ফেঁসে গেলেন বিমানের সাবেক দুই ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ক্যাপ্টেন মোসাদ্দিক আহম্মেদ ও ক্যাপ্টেন ফারহাদ হাসান জামিল। পাইলট নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে বিমানের এই দুই এমডিসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুনীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সাবেক পরিচালক (প্রশাসন) বর্তমানে অধ্যক্ষ বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ট্রেনিং সেন্টার পার্থ কুমার পণ্ডিত ও ব্যবস্থাপক (নিয়োগ) ফখরুল হোসেন চৌধুরী।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা ২০১৮ সালে ক্যাডেট পাইলট নিয়োগের দায়িত্বকালীন প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বয়স নির্ধারণে বিমানের প্রচলিত বিধি-বিধান অনুসরণ করেননি। নিজেদের ইচ্ছামতো ব্যাখ্যা ও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এবং পরবর্তী সময়ে ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সংশোধন করে ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল মুনীম মোসাদ্দিক আহমেদের ভাতিজাসহ ৩০ জন প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করে নিজেরা লাভবান হয়েছেন।

লিখিত (এমসিকিউতে ২০ নম্বর ও বর্ণনামূলক ১০ নম্বর) পরীক্ষায় গ্রেস দেয়ার মাধ্যমে প্রার্থী চূড়ান্ত করে অবৈধভাবে বিমানের ক্যাডেট পাইলট নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করে আসামিরা তাদের ওপর ন্যস্ত ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধমূলক অসদাচরণ করে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা ও দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অপরাধ করেছেন।

দুদক সূত্র জানায়, বিমানের দুই দফায় পাইলট নিয়োগে মোসাদ্দিক আহম্মেদের সঙ্গে মূল ভূমিকায় ছিলেন পাইলট ফারহাত জামিল। দুটি নিয়োগের সময় মোসাদ্দিক আহম্মেদ ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন। ক্যাপ্টেন জামিল ছিলেন নিয়োগ কমিটির প্রধান। একই সঙ্গে তিনি ছিলেন পরিচালক ফ্লাইট অপারেশন (ডিএফও)। ডিএফও থাকার কারণে দুটি নিয়োগে জামিলকে কমিটির প্রধান করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, বিমানের বোর্ড সভায় ক্যাপ্টেন মোসাদ্দিক আহম্মেদকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। অপরদিকে ক্যাপ্টেন ফারহাত আহম্মেদ জামিলকেও এমডি পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে লাইন পাইলট হিসেবে রাখা হয়। দুদক সূত্রে জানা গেছে, বিমানের আইন অনুযাযী মামলা দায়ের হওয়ায় এখন লাইন পাইলট থেকেও ক্যাপ্টেন জামিলকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হবে।

দুদক সূত্র আরও জানায়, পাইলট নিয়োগে ক্যাপ্টেন জামিল আহম্মেদ সাবেক এমডি মোসাদ্দিক আহম্মেদের ভাতিজাসহ কমপক্ষে ৩০-৩২ জন প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করে তাদের বিশেষ সুবিধা দিয়েছেন। ৩২ শিক্ষার্থীর মধ্যে কমপক্ষে ৭ জন ছিলেন বিমান পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) নেতা ও সদস্যদের স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে ও পরিবারের সদস্য। ২ প্রার্থী ছিলেন সাবেক পাইলটের ছেলে।

মোসাদ্দিক ও জামিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ হচ্ছে, পাইলটের আবেদন করা প্রার্থীদের কাগজপত্র চার সদস্যের কমিটির মাধ্যমে বাছাই করার কথা ছিল। কিন্তু তারা কাজটি করেছেন তিন সদস্যের কমিটির মাধ্যমে। কমিটির আহ্বায়ককে বিষয়টি জানানোই হয়নি। মৌখিক পরীক্ষার সময় কমিটির সদস্য চিফ অব ট্রেনিং উপস্থিত ছিলেন না। ডেপুটি চিফ অব ট্রেনিংকে দিয়ে মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হয়। চিফ অব ট্রেনিং এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।