দ.আফ্রিকায় বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনে এক আলেমের অবদান
একুশে জার্নাল ডটকম
অক্টোবর ০৩ ২০১৯, ১৩:১৩

সাউথ আফ্রিকায় ২৯ সেপ্টেম্বর ১৯৬৯ সনে ঘটে মনে রাখার মতো দু’টি ঘটনা। প্রথমটি হচ্ছে, এক বিশাল জানাজা যাতে ৪০,০০০ লোক ইমাম আব্দুল্লাহ হারুনের খাটিয়া ১০ মাইল পর্যন্ত বহন করে এক মুসলিম গোরস্থানে পৌঁছে দিয়েছিল।
দ্বিতীয় ঘটনা, ঠিক সে রাতেই এক ভয়ানক ভূমিকম্প পুরো বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল। যারা জানাযায় অংশগ্রহণ করেছেন অনেকেই মনে করেন, এই জানাজা আর ভূমিকম্পের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে।
তারা বলেন, ৪৫ বছর বয়সি সাউথ আফ্রিকায় ইমাম হারুন এর মৃত্যু সত্যিই অনেক বেদনাদায়ক এবং দুনিয়াকে কাঁপিয়ে দেওয়ার মতোই একটি ঘটনা।
ইমাম হারুন ২৭ সেপ্টেম্বর বন্দিশালায় একশত ত্রিশ দিন নির্জন প্রকোষ্ঠে বন্দী থাকার পর মৃত্যুবরণ করেন। ইমাম আবদুল্লাহ হারুন সাউথ আফ্রিকায় বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের সক্রিয় এক কর্মী, যে আন্দোলন ১৯৯৪ সনে নেলসন ম্যান্ডেলাকে সাউথ আফ্রিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয়েছে।
বর্ণবাদী শাসনকালে জেলখানায় মৃত্যুবরণ করা ধার্মিক লোকদের মধ্যে ইমাম হারুণ ছিলেন প্রথম ধর্মীয় নেতা। ইমাম হারুণের মৃত্যু একথার প্রমাণ বহন করে যে বর্ণবাদী সরকারের অধীনে কোনো ধর্মিক মানুষ নিরাপদ নয়।
ইমাম হারুনের গাঁয়ে মৃত্যুর সময় ২৭ টির বেশি দাগ ছিল এবং তার বুকের দুটি হাড় ভাঙ্গা ছিল। তাছাড়া বর্ণবাদী সরকারের পুলিশি নির্যাতনের কথা কারো অজানা ছিল না। কিন্তু তা সত্ত্বেও বর্ণবাদী সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ইমাম হারুন মারা গেছেন সিঁড়ি থেকে পড়ে।
ইমামের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, তারা এই মিথ্যাচার কখনো গ্রহণ করবেন না। এবং তার মৃত্যুর ৫০ বছর পরও তারা এখনো তার মৃত্যুর নতুন তদন্ত চান।
স্বামীর মৃত্যুর ৫০ বছর পর ইমাম হারুনের স্ত্রী ৯৩ বছর বয়সে গত রবিবার ইন্তেকাল করেছেন। অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষার পরও তিনি তার স্বামীর হত্যার বিচার দেখে যেতে পারেননি।
তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আফ্রিকা ন্যাশনাল কংগ্রেস এমপি ফয়েজ জ্যাকব বলেছেন, ইমাম হারুনের স্ত্রী তার সন্তানদেরকে একাই বড় করেছেন। যদি বর্ণবাদী শাসকরা ভেবে থাকে তারা ইমাম হারুনের স্ত্রীর প্রেরণাকে হত্যা করতে পেরেছে তাহলে তারা ভুল করেছে।বিবিসি অবলম্বনে- এনাম হাসান, ইসলামটাইমস
একুশে জার্নাল/ইএম