বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছে ইসলামী ছাত্র মজলিস

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

অক্টোবর ০৭ ২০১৯, ১৮:০৫

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মনসুরুল আলম মনসুর ও সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ মনির হোসাইন এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রলীগ কর্তৃক বুয়েটের আবরার হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, বাংলাদেশ-ভারত চুক্তি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করায় আবরারকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ায় তাকে শহীদ করা হয়েছে তা আজ সর্বমহলে স্পষ্ট।

রোববার (৬ অক্টোবর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে সাধারণ ছাত্র ও কর্তৃপক্ষ ফাহাদের মরদেহ সকাল সাড়ে ৬টা দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সহপাঠীদের অভিযোগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রাত আটটার দিকে শেরে বাংলা হলের এক হাজার ১১ নম্বর কক্ষ থেকে আবরারকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর রাত দুইটা পর্যন্ত তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তারা বলছেন, ২ হাজার ১১ নম্বর রুমে নিয়ে তাকে পিটানো হয়।

আবরারকে পিটিয়ে হত্যার প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় সাংবাদিকদের এই তথ্য দিয়েছেন। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছাত্রলীগের দু’জনকে আটক করা হয়েছে। আবরারকে হত্যা করেছে ছাত্রলীগ, যার প্রমাণ ইতিমধ্যে দেশবাসী জানতে পেরেছে। আবরার হত্যাকাণ্ড দেশের ছাত্রসমাজ ও সাধারণ মানুষের মাঝে যে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে, তাতে সহজে বুঝা যাচ্ছে বাংলাদেশ জুড়ে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি হচ্ছে। আশা করা যায় আবরারের জীবনদানের মধ্যদিয়ে হিন্দুত্ববাদী ইসকনের অপতৎপরতা ও ভারতীয় আগ্রাসনের ব্যাপারে দেশবাসী সোচ্চার হয়ে উঠবে।

নেতৃদ্বয় উক্ত ঘটনার সাথে জাড়িত ভারতীয় গুপ্তচর ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদেরকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আবরার হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার না হলে বাংলার ছাত্র সমাজ তীব্র থেকে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবে।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, সময় এসেছে আধিপত্যবাদী ভারতের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর। শুধু আবরার হত্যার বিচার নয় বরং ভারতীয় আধিপত্যবাদমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মানের আন্দোলন এখন থেকেই শুরু করতে হবে। আবরার হচ্ছে ভারতীয় আগ্রাসন বিরোধী আন্দোলনের প্রথম শহীদ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, আবরার ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন- ‘৪৭ এ দেশভাগের পর দেশের পশ্চিমাংশে কোন সমুদ্রবন্দর ছিল না। তৎকালীন সরকার ৬ মাসের জন্য কলকাতা বন্দর ব্যবহারের জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ করল। কিন্তু ভারত নিজেদের রাস্তা নিজেদের মাপার পরামর্শ দিয়েছিল। বাধ্য হয়ে দুর্ভিক্ষ দমনে উদ্বোধনের আগেই মংলা বন্দর খুলে দেওয়া হয়েছিল। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আজ ইন্ডিয়াকে সে মংলা বন্দর ব্যবহারের জন্য হাত পাততে হচ্ছে। কাবেরি নদীর পানি ছাড়াছাড়ি নিয়ে কানাড়ি আর তামিলদের কামড়াকামড়ি কয়েকবছর আগে শিরোনাম হয়েছিল। যে দেশের এক রাজ্যই অন্যকে পানি দিতে চায় না সেখানে আমরা বিনিময় ছাড়া দিনে দেড়লাখ কিউবিক মিটার পানি দিব। কয়েকবছর আগে নিজেদের সম্পদ রক্ষার দোহাই দিয়ে উত্তরভারত কয়লা-পাথর রপ্তানি বন্ধ করেছে অথচ আমরা তাদের গ্যাস দিব। যেখানে গ্যাসের অভাবে নিজেদের কারখানা বন্ধ করা লাগে সেখানে নিজের সম্পদ দিয়ে বন্ধুর বাতি জ্বালাব।’ আবরারের এই ফেসবুক পোস্ট জীবন কেড়ে নিল। এসব মেনে নেয়া যায় না, এসবের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াবার সময় এসেছে।

শহীদ আবরার ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদী প্রথম শহীদ উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, আবরারের রক্ত বৃথা যাবেনা। অনতিবিলম্বে এর বিচার না হলে ছাত্র মজলিস অতীতের ন্যায় ছাত্র সমাজকে নিয়ে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে ইনশাআল্লাহ!

একুশে জার্নাল/ইএম