নদওয়ায় ছাত্রদের নিয়ে বিক্ষোভ করলেন সালমান নদভী

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

অক্টোবর ১৭ ২০১৯, ০১:০৯

গতকাল মঙ্গলবার নদওয়াতুল উলামার শিক্ষক মাওলানা সালমান নদভীকে বরখাস্তের খবর উর্দু অনলাইন গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে মাওলানা সালমান নদভী ছাত্রদের উদ্দেশে দরস শেষে জ্বালাময়ী ভাষণ দেন। তাতে তিনি তার জমহুরের মুখালিফ পূর্ব মতামত আবারও ব্যক্ত করেন এবং নদওয়ার উস্তাদদের কঠোর সমালোচনা করেন। বক্তব্য শেষে তিনি নদওয়ার মহাপরিচালকের দফতর বরাবর ছাত্রদের নিয়ে বিক্ষোভ করেন। নদওয়ায় অধ্যয়নরত সাইদ আহমদ খান নদভী নামের এক ছাত্রের ফেইসবুক পোস্ট থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

সাইদ আহমদ খান নদভী তার ফেইসবুক পোস্টে লেখেন, ‘গতকাল মঙ্গলবার হজরত মাওলানা (সালামান নদভী) দরসের পর এক জ্বালাময়ী ভাষণ দেন৷ বয়ানে জুমহুর আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহর বিরুদ্ধে গিয়ে সেই পুরোনো কথাই পুরনাবৃত্তি করেন৷ আসাতেজায়ে নদওয়াকে নিয়েও বিভিন্ন কথা বলেন৷…।’

প্রসঙ্গত, সামাজিক মাধ্যম ও ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়া মাওলানা সালমান নদভীর এ বক্তব্য ইসলাম টাইমস প্রতিবেদকের হাতেও আছে। গতকাল উর্দু বাসীরাত অনলাইন, মিল্লাত টাইমসসহ আরও কয়েকটি অনলাইন গণমাধ্যমে নদওয়া থেকে মাওলানা সালমান নদভীকে বরখাস্ত করার খবর দেখে ইসলাম টাইমস খবর প্রচার করে।পরে নদওয়া সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এখবরে কিছু জটিলতা আছে। মাওলানা সালমান নদভীকে নদওয়া থেকে পূর্ণাঙ্গভাবে না কি বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে-এ বিষয়ে অনানুষ্ঠানিকভাবে বিভিন্ন রকম খবর পাওয়া যায়।

সাঈদ আহমদ খান নদভী তার পোস্টে আরও লেখেন, ‘বয়ান শেষে ছাত্রদের বিশাল এক দল নিয়ে মহাপরিচালক হজরত রাবে হাসানি নদভি দা.বা.’র অফিসের দিকে যান৷ ছাত্ররা সেখানে সালমান সাহেবের পক্ষে আন্দোলন করে৷ মজার বিষয় হলো, এদের অধিকাংশই কলেজ থেকে আগত নদওয়াতে তাদের জন্য আলাদা শুবার ছাত্র! তাখাসসুসাতের বুঝমান তালেবে ইলমগণ দূর কিংবা নিকট থেকে দেখা ছাড়া আন্দোলনে শরিক হয়নি বললেই চলে!’

বিক্ষোভের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি আরও লেখেন, ‘অত:পর তাদের শোরগোল থামাতে হজরত মাওলানা বেলাল হাসানি নদভি দা.বা. মাইক হাতে নেন৷ ঘোষণা করেন- তোমাদের মধ্য থেকে পাঁচ জন ব্যক্তি এসে হজরত রাবে সাহেবের কাছে নিজেদের দাবি পেশ করো! শোরগোল করো না!!

এরই মাঝে জোহরের নামাজের সময় হয়ে গেলে ছেলেরা সবাই নামাজে শরিক হয়ে যায়৷ নামাজের পর আবার সামান্য উত্তেজনা দেখা যায়৷ পরিস্থিতি থামাতে (নদওয়ার মহাপরিচালক) হজরত রাবে সাহেব দা.বা. মসজিদের চেয়ারে বসে বয়ান শুরু করেন৷ তিনি বলেন- ‘দেখো, ছেলেরা! হজরত মাওলানা সালমান নদভি আমার ভাগিনা৷ আমি তাঁকে পড়িয়েছি৷ শিখিয়েছি৷ তাঁকে নিজ হাতে খাইয়েছি৷ লালন করেছি৷ সে যেনো আমারই সন্তান৷ তোমরা কেউ হট্টগোল করো না৷ তোমাদের কী দাবি, আমার কাছে বলো৷ সমস্যার সমাধান হবে ইনশা আল্লাহ’৷

ব্যাস, এক কথায় সকল তালেবে ইলম চুপ হয়ে যায়৷ পরিবেশ ঠান্ডা হয়ে যায়৷”

মাওলানা সালমান নদভীকে তাদরীস ছাড়া নদওয়ার সকল দায়দায়িত্ব থেকে বরখাস্ত করার কথা  জানিয়ে সাইদ আহমদ খান লেখেন, হজরত মাওলানাকে তাদরিস ছাড়া সকল দায়িত্ব থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে৷

তবে মাওলানা সালমান নদভীকে এখরাজের বিষয়ে নদওয়ার উস্তায হজরত মাওলানা ইকবাল সাহেবকে উদ্ধৃত করে তিনি লেখেন, “মাওলানা সালমান সাহেবকে নিয়ে তো মিটিং হচ্ছে৷ কিন্তু এখরাজের সিদ্ধান্ত এখনো নেওয়া হয়নি৷ আর না তিনি ইস্তেফা নিয়েছেন৷ বাকি, কেউ কেউ ইখরাজের পায়তারা করছে”৷

এদিকে গতকাল উর্দু বাসীরাত অনলাইন, মিল্লাত টাইমস, আল হিন্দ ইসলামিক ইউটিব চ্যানেলে বলা হয়েছে, মাওলানা সালমান নদভীর বিষয়ে যাচাই-বাছাই শেষে নদওয়াতুল উলামার সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ তাকে সব দায়িত্ব থেকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং এ  খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। তবে নদওয়ার পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক  বা অফিসিয়াল ঘোষণা এখনো আসেনি।-ইসলামটাইমস।

একুশে জার্নাল/ইএম/১৬-২৮