সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডি; এখনো থামেনি আগুন

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জুন ০৬ ২০২২, ১৭:১৬

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম ডিপোতে লাগা আগুন এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। নতুন করে রাসায়নিকের ৪টি কনটেইনারে আগুন জ্বলছে। আগুনের ধরণ সম্পর্কে সঠিক তথ্য না পাওয়ায় ঝুঁকিতে রয়েছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এই ঘটনায় চট্টগ্রামে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১০২ জন। তাদের মধ্যে ১৫ জনেরই শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন দুই ফায়ার সার্ভিস কর্মীসহ ১৪ জনের মধ্যে ১০ জনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক।

দুইদিন ধরে জ্বলছে ডিপোর আগুন। নতুন করে আরও চারটি কনটেইনারে আগুনের দেখা গেছে। ভেতরে কী রয়েছে তার সঠিক তথ্য না জানায়, এখনও বিপর্যয়ের ঝুকিঁতে রয়েছে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। কনটেইনার ভেঙে পানি দেয়ার পরামর্শ দিয়েছে সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞ টিম। নিরাপদ দূরত্বে সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে সবাইকে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, গতকাল থেকে শুরু করে সারারাত কাজ করছেন তারা। তবে বেশ বড় এলাকাজুড়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় সময় লাগছে নিয়ন্ত্রণে আনতে। তবে অধিকাংশ কনটেইনারই নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানানো হয়। এখনও অল্প অল্প আগুন থাকলেও তা সময়ের ধারাবাহিকতায় আরও নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়। সেই সাথে বলা হয়, কনটেইনারগুলোতে রাসায়নিক দ্রব্য আছে কিনা, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি।

দুর্ঘটনাস্থলে আরও মরদেহ থাকতে পারে। কিংবা মরদেহের ছাই ভস্ম, এমনও শঙ্কা করা হচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিস কুমিল্লার সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান বলেন, ৭ সদস্যের একটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। তারাই বের করবেন এখানে কোনো গাফিলতি ছিল কিনা। ভবিষ্যতে কী কী সুপারিশ করলে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না, উনারাই নির্ণয় করবেন।

এদিকে, সোমবার (৬ জুন) সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডিতে দগ্ধ রোগীদের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন ডা. সামন্ত লাল সেনসহ তিন সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল। আইসিইউতে থাকা তিন রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের দ্রুত ঢাকা নেয়ার তাগিদ দেয়া হয়। ড. সামন্ত লাল সেন বলেন, যদি রোগীদের আত্মীয়স্বজন রাজি হয়, তবে তাদের ঢাকা নিয়ে যেতে হবে, নিয়ে যাওয়া উচিত। কারণ, তাদের শরীর পুড়ে গেছে, শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাতে কিন্তু শ্বাস নিতে অসুবিধা হবে। বার্ন আইসিইউ গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। এখানে বার্ন আইসিইউ নেই, সাধারণ আইসিইউ। এখানকার চিকিৎসকরা সকল বার্ন রোগীরই সঠিক চিকিৎসা দিতে সক্ষম। কিন্তু এখানে সকল সুযোগ-সুবিধা নেই। তিনি আরও বলেন, আপনারা হাসপাতালে ভিড় করবেন না। একজন বার্ন রোগী কিন্তু বাংলাদেশের মারা যায় মূলত একটাই কারণে, সেটি ইনফেকশন। আর কোনোটিই নয়। ইনফেকশন হলে বার্ন রোগীকে কেউ বাঁচাতে পারবে না। ইনফেকশনের কারণে পুড়ে যাওয়া একটি ক্ষত অনেক বড় হয়ে যায়।

 

ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন দুই ফায়ার সার্ভিস কর্মীসহ ১৪ জনের মধ্যে ১০ জনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান, ১৪ জনের মধ্যে ৪ জন খুবই সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় আছেন। তাদের আইসিইউতে রাখা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন ফায়ার ফাইটারের ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। আরেক ফায়ার ফাইটারের পুড়ে গেছে ৬৪ শতাংশ। বাকি ১০ জনের মধ্যে ৬ জনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক।

চট্টগ্রাম মেডিকেলে ভর্তিদের মধ্যে থেকে আরও ৭ থেকে ১০ জনকে ঢাকায় আনা হতে পারে। সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউট।