সাক্ষাৎকার; ‘ইখলাস ও ত্যাগ হচ্ছে সংগঠনের চালিকাশক্তি

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

সেপ্টেম্বর ১৮ ২০১৮, ১৪:১৮

সংগঠন মানে শক্তি। সমাজে সামাজিক -অর্থনৈতিক সংগঠন বাড়ছে। সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে এমন অনেক কিছু সম্ভব হচ্ছে যা কিছু ক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমেও সম্ভব হয়ে উঠছে না। ফলে সংগঠনের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। উত্তর চট্টগ্রামের প্রথম সারির ধর্মীয় ও সেবামূলক সংগঠন আল আমিন সংস্থা। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সেবা ও জনসচেতনতামূলক কাজের মাধ্যমে উত্তর চট্টলার গণমানুষের আস্থা ও গৌরবের স্থান অর্জন করেছে সংস্থাটি।

এক সন্ধ্যায় হাটহাজারী মাদরাসা মার্কেটের ২য় তলায় সংগঠনের সংস্থার কার্যালয়ে আল আমিন সংস্থার সার্বিক কার্যক্রম, পরিকল্পনা ও বিভিন্ন ইস্যুতে একান্ত সাক্ষাৎকার দেন সংস্থার সাধারণ  সম্পাদক মুহাম্মাদ আহসানুল্লাহ।সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন একুশে জার্নাল এর  রিপোর্টার হাবীব আনওয়ার

একুশে জার্নাল : আসসালামু আলাইকুম।
আহসানুল্লাহ : ওয়ালাইকুমুসসালাম।

একুশে জার্নাল: কেমন আছেন?
আহসানুল্লাহ: আলহামদুলিল্লাহ।

একুশে জার্নাল: আল আমিন সংস্থা প্রতিষ্ঠার পটভূমি কী ছিল?
আহসানুল্লাহ: ১৮ ই নভেম্বর ২০০৫ ইংরেজিতে হাটহাজারী কলেজ মাঠে তাফসিরুল কুরআন মাহফিলকে কেন্দ্র করে আল আমিন সংস্থা প্রতিষ্ঠা লাভ করে। আমিরে হেফাজত আল্লামা আহমাদ শফী ও মুফতী আমিনী রহ. এর নির্দেশে হাটহাজারী মাদরাসার সাবেক মুহাদ্দিস শামছুল আলম রহ. কে আহবায়ক ও বাবুনগর মাদরাসার মুহাদ্দিস মাও. আবুল কালমকে সচিব করে আল আমিন সংস্থা প্রতিষ্ঠত হয়।

একুশে জার্নাল : শোনা যায়, সংগঠনের কিছু দায়িত্বশীলদের দ্বন্ধের কারণে আল আমিন সংস্থা প্রতিষ্ঠত হয়!
আহসানুল্লাহ: না, না এমন কিছু না। কোন দ্বন্ধ হয়নি। যারা এমন কথা বলছে তারা ভুলের মধ্যে আছে।

একুশে জার্নাল: আল আমিন সংস্থার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী কী?
আহসানুল্লাহ: আমাদের শ্লোগান হচ্ছে, “দ্বীন দরদী ও কল্যাণমুখী সমাজ বিনির্মাণ” সেই হিসেবে সমাজের অসহায়-দরিদ্রদের সহযোগিতা করা, অবিবাহিত মেয়েদের বিবাহের ব্যবস্থা করা, মোট কথা সমাজ কল্যাণমূলক কাজ করা। পাশাপাশি দ্বীনি কাজ যেমন, তাফসিরুল কুরআন মাহফিল, কেরাত মাহফিল, ইসলামী সেমিনারের আয়োজন করা ইত্যাদি।

একুশে জার্নাল: কওমী মাদরাসার গরিব ও মেধাবী ছাত্রদের নিয়ে আপনার কোন ফান্ড আছে কী?
আহসানুল্লাহ: তেমন ফান্ড নেই! কারণ, কওমী মাদরাসায় গরিব ছাত্রদের জন্য মাদরাসা থেকেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে আমারা “আল্লামা আহমাদ শফি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ” এর মাধ্যমে মেধা বৃত্তি, আর্থিক সহযোগিতা করার পরিকল্পনা হতে নিয়েছি।

একুশে জার্নাল : ‘আল্লামা আহমাদ শফি ফাউন্ডেশন’ কি আল আমিন সংস্থার সহযোগি সংগঠন?
আহসানুল্লাহ: না, ‘আল্লামা আহমাদ শফি ফাউন্ডেশন’ ভিন্ন একটি সংগঠন। তবে আমিও ওটার সাথে জড়িত আছি।

একুশে জার্নাল: বার্ষিক মাহফিলের পাশাপাশি আর কোন প্রোগ্রাম করার পরিকল্পনা আছে?
আহসানুল্লাহ: ইনশাআল্লাহ! এবছর তাফসিরুল মাহফিলের পাশাপাশি ‘আহলে হাদিস, দারিদ্র্য বিমোচনে যাকাতের ভূমিকা ও আকাবিরদের জীবনী’ শীর্ষক সেমিনার করার পরিকল্পনা আছে।

একুশে জার্নাল: সংস্থার আয়ের উৎস কী?
আহসানুল্লাহ: সংস্থার সদস্য এবং যারা সংস্থাকে মুহাব্বাত করে তাদের অনুদান।

একুশে জার্নাল: সংস্থার মাধ্যমে প্রতিবছর আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত হাফেজদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। যা জনগণকে আনন্দিত করে। এভাবে প্রবীণ আলেম, সফল শিক্ষক, সাংবাদিক, লেখক ও বোর্ডে উত্তির্ণ ছাত্রদের নিয়ে এমন কোন উদ্যোগ আছে কি না?
আহসানুল্লাহ: হ্যা,আছে তবে একটু সময় লাগবে।

একুশে জার্নাল: আগামী নভেম্বরে তো সংস্থার উদ্যোগে তিনদিন ব্যাপি তাফসিরুল কুরআন মাহফিল। আপনাদের প্রস্তুতি কেমন চলছে?
আহসানুল্লাহ: আলহামদুলিল্লাহ, পুরোদমে প্রস্তুতি চলছে। বক্তাদের দাওয়াত দেওয়া শেষ হয়েছে।
একুশে জার্নাল: এবার মাহফিলে বহির্বিশ্বের কাউকে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে কী?
আহসানুল্লাহ: হ্যা, মিসর ও ভারত থেকে ক্বারী সাহেবরা আসবেন এবং ভারতের আল্লামা মাহমুদ মাদানীও আসবেন।

একুশে জার্নাল : সংস্থার সদস্য হতে কেমন যোগ্যতা থাকতে হবে?
আহসানুল্লাহ: বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের অনুসারী হতে হবে।

একুশে জার্নাল : আমাদের দেশে অনেক সংগঠন আছে। দায়িত্বশীলদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন।
আহসানুল্লাহ: ইখলাস ও ত্যাগ হচ্ছে সংগঠনের চালিকাশক্তি। একটি সংগঠনকে সফলতার উচ্চ শিখরে নিতে হলে দায়িত্বশীলদের উচিত হলো, ইখলাস ও ত্যাগের সাথে কাজ করতে হবে। পদ ও নেতৃত্বের লোভ পরিহার করতে হবে। সংগঠনকে দলীয় কোন্দলের বাইরে রাখতে হবে।

একুশে জার্নাল: আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
আহসানুল্লাহ : আপনাকেও ধন্যবাদ।