সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় অস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে: রিজভী

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

সেপ্টেম্বর ১৯ ২০২১, ১৯:০৭

সাংবাদিক নেতাদের ব্যাংক হিসাব তলব হওয়া প্রসঙ্গে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক দিয়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় অস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে। অর্থাৎ সাংবাদিকেরা অবরুদ্ধ থাকুক, কথা বলো না। বেঁচে থাকলেও তুমি জীবন্ত লাশ। গোটা জাতিকে এতিম করার সব প্রচেষ্টা নিয়েছে শেখ হাসিনার সরকার। তিনি ক্রমাগত সেটাই করছেন।’

জাতীয় প্রেসক্লাবের আকরাম খাঁ হলে আজ রোববার দুপুরে গণতন্ত্র ফোরাম আয়োজিত এক আলোচনা সভায় রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আজ টেকনোলজির কারণে অনেক কিছুর সংবাদ চলে আসছে। আজ অনেকেই বিভিন্ন জায়গায় সম্পদ পাচার করছেন। তাদের সরকার কিন্তু টার্গেট করছে না, তাদের ধরে না। সাংবাদিকেরা কয় টাকা বেতন পান? কয়েক জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংককে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে, এঁদের অনেককে আমরা চিনি। অনেকের মাস গেলে খাওয়ার পয়সা থাকে না। এঁদের অ্যাকাউন্ট চেক করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। তার মানে, সামনে নির্বাচন আসছে, এই নির্বাচনে যত ধরনের অনাচার, যত ধরনের অপপ্রক্রিয়া আছে, এটা সরকার করবে এবং এর বিরুদ্ধে যেন কোনো সাংবাদিক যাতে না লেখেন এবং তাঁর পত্রিকায় কোনো ধরনের প্রচার না দেন, এ কারণেই এটা রাষ্ট্রীয় অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।’

রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব আর হাছান মাহমুদ সাহেব কেএম নূরুল হুদার মতো লোক খোঁজার জন্য যত ধরনের কাজ করা দরকার, সে কাজগুলোই তাঁরা করছেন। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ, সুতরাং তাদের খুঁজে বের করতে হবে কেএম নূরুল হুদার মতো একজন লোক। কারণ, আগামী নির্বাচন নিয়ে তাঁদের আরেকটি পরিকল্পনা রয়েছে।’

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন প্রয়োজন। মানুষ ভোট দিতে গিয়ে দেখবেন যে, তাঁর ভোট আগেই হয়ে গেছে, অথবা তিনি ভোট দিতে যাবেন না, অথবা তিনি জানবেন যে, তাঁর ভোটটা রাতেই দেওয়া হয়ে গেছে। এই নির্বাচন কমিশন যে পদ্ধতিগুলো শুরু করেছে, এই পদ্ধতি আমরা চাই না। বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে এবং যারা জাতীয়তাবাদী শক্তিকে বিশ্বাস করে, তাদের ঐক্যবদ্ধ শক্তি আজ প্রবল বেগে রাস্তায় নামতে হবে। তার কোনো বিকল্প নেই। আর, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন দেশে স্বাধীনভাবে কাজ করবে তখনই, তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং নিরপেক্ষ সরকার যখন প্রতিষ্ঠিত হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।’

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব আরও বলেন, ‘সরকারে যাঁরা আছেন, তাঁরা আজীবন ক্ষমতায় থাকতে চান। তাঁরা ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চান, তাঁরা বিরোধীদলশূন্য দেশ কায়েম করতে চান। সেখানে তো বিকল্প ব্যবস্থা থাকতে হবে। তাঁদের কথায় কোথাও গণতন্ত্রের লেশমাত্র নেই। ইতিহাসকে পদদলিত করে মাটিচাপা দিয়ে তাঁরা তাঁদের মতো ইতিহাস রচনা করেন। সে দেশে আপনি যাকে দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করেন, সে নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারবে না। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না, যদি একটি নির্দলীয় সরকার না হয়।’

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি খলিলুর রহমান ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন সিরাজীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সাবেক সাংসদ মাসুদ অরুণ, মৎসজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তবিবুর রহমান সাগর প্রমুখ বক্তব্য দেন।