শীতকালে রুম হিটার বন্ধ করে ঘুমোতে যাওয়া জান-মালের জন্য নিরাপদ

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জানুয়ারি ১৬ ২০২২, ০৭:৩০

চলছে শীত মৌসুম।শীত মৌসুম একজন মুমিন মুসলমানের জন্য বিশেষ এক গনীমাত। ওমর ইবনে খাত্তাব রাযি. বলেন-

«الشتاء غنيمة العابدين»

শীতকাল ইবাদতকারীদের জন্য গনীমাত। [হায়াতুস সালফ বাইনাল কওল ওয়াল আমল -১৬৯]

হাদিস শরীফে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

«الغنيمة الباردة الصوم في الشتاء»

ঠান্ডা গনীমাত(অর্থাৎ-বিনা কষ্ট-ক্লাশে সওয়াব পাওয়া)শীতের দিনে সওম পালন করা। [তিরমিজি ৭৯৭, আহমদ ১৮৯৫৯]।

এ মৌসমটি যেমন গনীমাত তেমনি অসতর্কতার কারনে অনেকসময় অনেকের জীবনে কাল হয়ে দাঁড়ায়। এর কারন হচ্ছে, শীত মৌসুমে গ্রামগঞ্জে এবং শহরবন্দরে অনেকেই রুম হিটার কিংবা মাটির পাত্রে কয়লা জ্বালিয়ে শীতের তীব্রতা থেকে বাচার জন্য তাপ গ্রহন করে থাকেন এবং ঘুমানোর পূর্বে ইচ্ছাকৃতভাবে বা ভুলবসত তা বন্ধ না করেই ঘুমিয়ে পরেন।এতে করে অনেকসময় অগ্নিকান্ডের শিকার হতে হয়। এজন্য হাদিস শরীফে রসূল (সা:)নিজেদের জান-মাল এবং অর্থসম্পদ অগ্নিকান্ডের ভয়াবহতা থেকে রক্ষার জন্য উদ্ধুদ্ধ করেছেন। তি‌ঁনি বলেন,

«لا تتركوا النار في بيوتكم حين تناموا».

যখন তোমরা ঘুমাবে তখন তোমাদের ঘরগুলোতে আগুন রেখে ঘুমাবে না। [বুখারী, হাদিস নং ২৬০৯, মুসলিম, হাদিস নং ৫০৮৭]

উল্লেখিত হাদিসে ঘুমানোর সময় আগুন জ্বালিয়ে না রাখার ব্যপারে যে নিষেধাঙ্গা আসছে,তাতে অগ্নিকান্ডের আশংকা হয় এমন সবকিছুই বন্ধ করে রাখা এই নিষেধের অন্তরভূক্ত। যেমনঃ শীতের তীব্রতা থেকে রক্ষায় ইলেক্ট্রিক তাপ গ্রহনের বা পানি গরমের ইত্যাদি হিটার। যদিও এজাতিও ডিভাইসগুলো আগুন জাতিও নয়,তবুও এগুলো হাদিসের নিষেধাঙ্গায় শামিল। ইমাম নওয়ী (রহ.) বলেন,এই হাদিসটি ব্যাপক অর্থ বহন করে। ফলে বাতির আগুন ইত্যাদি সবকিছুর আগুন তাতে শামিল হবে। আর মসজিদ এবং অন্যান্য অঙ্গনে জুলন্ত অবস্থায় যে হারিকেনগুলো জ্বালিয়ে রাখা হয় সেগুলোর কারনেও যদি অগ্নিকান্ডের আশংকা থাকে তাহলে সেগুলো নিভিয়ে রাখার আদেশের মধ্যে শামিল হবে। [ শরহে মুসলিম লিন নওয়ী, ১৩/১৮৭]

হযরত আবু মুসা রাযি. থেকে বর্নিত। তিঁনি বলেন, একবার রাত্রি কালে মদিনার একটি ঘরে আগুন লেগে ঘরের লোকজনসহ আগুন লেগে পুরে গেল। তাদের অবস্থা নবী (সাঃ) নিকট জানানো হলে, তিঁনি বললেনঃ

«إن هذه النار هي عدو لكم، فإذا نمتم فاطفئوها عنكم».

এ আগুন নিঃসন্দেহে তোমাদের জন্য চরম শত্রু। সুতরাং তোমরা যখন ঘুমাতে যাবে, তখন তোমাদের হেফাজতের জন্য তা নিভিয়ে ফেলবে। [বুখারী, হাদিস নং ২৬০৯, মুসলিম, হাদিস নং ১৯৭৪]

ইমাম ইবনে হাজর আসকালানী রহ. এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেন, এই হাদিসে নিষেধাঙ্গার হিকমতের বর্ননা রয়েছে। সেটি হচ্ছে, অগ্নিকান্ডের আশংকা। [ফাতহুল বারী শরহে সহিহুল বুখারী ১১/৮৫]

 

 

 আবু আরীবা আমিন,

শিক্ষার্থী: আল আযহার ইউনিভার্সিটি