শান্তি প্রতিষ্ঠায় অনন্য নজির সৃষ্টি করছে তালেবান

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

অক্টোবর ০৬ ২০২১, ২২:৩৮

ছবি: রয়টার্স

সৈয়দ শামছুল হুদা

বিশ্বের ইতিহাসে এমন কোন নজির নেই যা করে দেখালো আ ফ গা নে র তা লি ব রা। ২০টি বছর আত্মনিয়ন্ত্রনের জন্য লড়াই সংগ্রাম করে যখন রাজধানী দখল করলো, তখন তারা একটি মানুষের গায়েও হাত তুললো না। ২০টি বছর যে সকল দালালরা তাদেরকে নানা প্রকার যন্ত্রনা দিলো, নানাভাবে নির্যাতন আর জুলুম করলো, সুযোগ পেয়ে তাদের গায়ে সামান্য নখের আছড়ও লাগালো না। এটা বলা যত সহজ বাস্তবাযন তত সহজ নয়। আমাদের দেশের কট্টর ইসলামবিদ্বেষী মিডিয়া এগুলো দেখেও তারা কোনদিন ভালো নিউজ করে না। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত একটি দেশে তা লে ব রা ক্ষমতায় আসলো মাত্র সেদিন। আর এখনই তারা নানা অভাব-অনটনের কাহিনী এমনভাবে রসিয়ে রসিয়ে প্রকাশ করতে লাগলো, যেন আ ফ গা নে র মানুষের চেয়ে তারাই বেশি কষ্টে আছে।

আ ফ গা নে র নতুন সরকার কয়েকদিন আগে একটি সার্কুলার জারি করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, যারা এদেশ ছেড়ে যে কোন কারণেই হোক চলে গেছে, তাদের বাড়িঘর এর পাহারাদার হলো রাষ্ট্র। এগুলো ভাড়ায় ব্যবহার করা হবে। তারা ফিরে আসলে তাদের কাছে ভাড়াসহ বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এটা কি এই যুগে কল্পনা করা যায়! এরচেয়ে বড় মানবিকতা, উদারতা আর কী হতে পারে?

”আ ফ গা ন উর্দু “নামক একটি টুইটার একাউন্টে এক সংবাদে দেখা যায়, একটি প্রদেশের গভর্ণর ঐ এলাকার সকল ফকির ও গরীব-মিসকীনদের তালিকা করছে, তাদের সকলের খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী তাদের জন্য নিশ্চিত করবে। তাদের ভরণ-পোষণের সম্পুর্ণ দায়িত্ব রাষ্ট্রের। ভাবা যায় কত সুন্দর উদ্যোগ।

কান্দাহার প্রদেশে সকল অস্ত্রের দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তারা বলছে, এখন আর দেশে কোন যুদ্ধ নেই। সুতরাং পারসোনাল নিরাপত্তার জন্য অস্ত্রের কোন প্রয়োজন নেই। প্রতিটি মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা দিবে রাষ্ট্র। তাদের খেদমতের জন্য সর্বক্ষণ সরকার তাদের পাশে থেকে কাজ করবে। পাশাপাশি যে সকল ব্যক্তি অস্ত্রের ব্যবসা করতো তাদের অস্ত্রগুলো রাষ্ট্র কিনে নিবে। যাতে তারা ক্ষতিগ্রস্থ না হয়। এর নামইতো ইনসাফ।

শহীদ পরিবারগুলোর প্রতি তারা বিশেষভাবে খোঁজ-খবর নিচ্ছে। তাদের অভিভাবকত্ব রাষ্ট্র নিজের হাতে নিয়ে নিচ্ছে। তাদের অভাব পূরণে রাষ্ট্র এগিয়ে আসছে।

আ ফ গা নের আফিম ব্যবসা তারা বন্ধ করে দিচ্ছে। ১৯৯৬থেকে ২০০১সাল পর্যন্ত তারা যখন ক্ষমতায় ছিলো, তখনও আফিমের উৎপাদন একেবারে সর্বনিম্নে নামিয়ে এনেছিল। এবারও তারা সেই উদ্যোগ নিয়েছে। এবং সেখানে বিকল্প চাষের জন্য উৎসাহিত করছে। এ ব্যাপারে বিশ্ববাসির তারা সহযোগিতাও কামনা করছে।

তারা সকল প্রতিপক্ষকে ক্ষমা করে দিয়েছে। এরচেয়ে বড় উদারতা আর কী হতে পারে। কারো প্রতি তারা পুর্ব কোন জিদ ধরে রাখেনি। কোন কষ্ট মনে লুকিয়ে রাখেনি। কোন প্রকার প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করেনি। এমন নজির যুদ্ধের ইতিহাসে বর্তমান বিশ্বে কোথাও নেই।

তারা ক্ষমতা পেয়েও কোন প্রকার বিলাসিতায় ঝুকছে না। তাদের রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনগুলোতে একেবারেই সাদামাটা খাবার গ্রহন করছে। কোথাও কোন বাহুল্য নেই। অতিরঞ্জন নেই। কারো মধ্যে ক্ষমতার কোন অহমিকা নেই। একমাত্র আল্লাহ তাআলার রেজামন্দি হাসিলই তাদের পরম চাওয়া। এখনো পর্যন্ত লোক চক্ষুর আড়ালেই থেকে গেছেন সে দেশের সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদাহ।