মাওলানা মামুনুল হকসহ কারাবন্দী আলেমদের মুক্তির দাবি শায়খুল হাদীস পরিষদের

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জানুয়ারি ১২ ২০২৩, ১৯:৫২

বর্তমান সময় পৃথিবীব্যাপী ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশের ইসলামপন্থীরা অপশক্তির রোষানলের শিকার। সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় উলামায়ে কেরামকে প্রায় দুই বছর ধরে কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে।

সভায় বক্তাগণ আকাবিরে দেওবন্দের যোগ্যউত্তরসূরী মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা সাখাওয়াত হুসাইন রাজি, মাওলানা হারুন ইজহার, মাওলানা মুনির হুসাইন কাসেমিসহ কারাবন্দি আলেমদের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেন।

আজ বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি’২৩) সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের স্থানীয় একটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘উলামায়ে দেওবন্দের স্বর্ণালী অতীত, আজকের প্রেক্ষিত ও আমাদের করণীয়’শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময় সভার আয়োজন করে শাইখুল হাদীস পরিষদ। শায়খুল হাদীস পরিষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হকের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব মাওলানা হাসান জুনাইদ, যুগ্ম সদস্য সচিব মাওলানা এহসানুল হকের যৌথ পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মুফতি আরশাদ রাহমানি, মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমি, মাওলানা ইউসুফ আশরাফ। মতবিনিময় সভায় বিপুল সংখ্যক তরুণ আলেম, লেখক, গবেষক, ওয়ায়েজ ও খতিবগণ অংশগ্রহণ করেন।

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা মাহফুজুল হক দেওবন্দের অতীত ইতিহাস স্মরণ করিয়ে বলেন, দেওবন্দের চেতনাধারণকারীদের জন্য অপরিহার্য হলো, কঠিন পরিস্থিতিতেও কর্মতৎপরতা চালিয়ে যাওয়া। পরিস্থিতি বিবেচনায় কর্মপদ্ধতিতে পরিবর্তন হলেও কর্মতৎপরতা বন্ধ হতে পারে না। এসময় তিনি বৃহৎ ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে বলেন, নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় রেখে বিভিন্ন মতের-পথের মানুষদের নিয়ে একসাথে বড় শত্রুদের প্রতিরোধ করতে হবে। এক্ষেত্রে তিনি তরুণ আলেমদের অগ্রণী ভূমিকা রাখার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বসুন্ধরা ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের মহাপরিচালক মাওলানা আরশার রাহমানী বলেন, দেওবন্দিয়্যত মানে হলো তাওহিদে খালেস ও রদ্দে বাতিল। তাই আমাদের একনিষ্ঠভাবে একত্ববাদের অনুসরণের পাশাপাশি বাতিল মতবাদ প্রতিরোধেও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে হবে।

মাওলানা মামুনুল হকসহ কারাবন্দি আলেমদের দীর্ঘ দুই বছর যাবত বন্দি থাকার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিশিষ্ট আলেমে দীন মাওলানা ইউসুফ আশরাফ বলেন, মাওলানা মামুনুল হককে সাধারণ একটি মামলাতেও জামিন দিচ্ছে না। অথচ এটা তার সাংবিধানিক অধিকার।

জামিয়াতুন নুর আলকাসেমিয়ার মুহতামিম মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমি উলামায়ে দেওবন্দের ইতিহাস উপস্থাপন করে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করে স্বর্ণালি অতীত ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হবে। এ সময় তিনি হতাশ না হয়ে দৃঢ়চিত্তে কাজ চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। কওমী মাদরাসা থেকে রাজনীতি নিষিদ্ধের পায়তারাকে তিনি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের নাগরিক অধিকারহরণ আখ্যা দিয়ে এ অশুভ চক্রান্ত বন্ধে সজাগ থাকার আহ্বান জানান। বক্তব্যে তিনি বিনাশর্তে মাওলানা মামুনুল হকের মুক্তির দাবি জানান।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জামিয়া রাহমানিয়া আজিজিয়ার শিক্ষা সচিব মুফতি আশরাফজ্জামান, শায়খুল হাদীস রহ.-এর সাহেবজাদা মাওলানা মাহবুবুল হক, রংপুর জুম্মাপাড়া মাদরাসার নায়েবে মুহতামিম মাওলানা ইউনুস, জামিয়া ইসলামিয়া বাইতুল ফালাহ মাদরাসার ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা জালালুদ্দিন আহমদ, বিশিষ্ট ওয়ায়েজ মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, বিশিষ্ট আলোচক মাওলানা লুৎফুর রহমান ফরাজি, দৈনিক নয়া শতাব্দীর সহসম্পাদক মাওলানা আলী হাসান তৈয়ব, নূর বিডি. কম-এর সম্পাদক মাওলানা সৈয়দ শামসুল হুদা, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মাওলানা আবু মুহাম্মাদ রাহমানি, বিশিষ্ট আলোচক মাওলানা আতাউল করিম মাকসুদ, মক্কী নগর মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আহমাদুল্লাহ, জামিয়া রাহমানিয়া কাজলার মুহতামিম মাওলানা উজায়ের আমিন।

অনুষ্ঠানে শাইখুল হাদীস পরিষদের বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীলদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মাওলানা মুহসিনুল হাসান, মুফতি মুহাম্মাদুল্লাহ, মাওলানা ফয়সাল আহমদ, মাওলানা আবুল হাসানাত জালালি, মাওলানা আব্দুল্লাহ মোস্তফা, মাওলানা মাহফুজ হায়দার, মুফতি সাঈদ আহমদ, মুফতি মাসুম বিল্লাহ মাহমুদী, মাওলানা আব্দুল কাদের সিরাজী, মাওলানা নাসিরুদ্দীন, মাওলানা নেয়ামাতুল্লাহ আমিন, মাওলানা হুমায়ুন কবির, মাওলানা ইমদাদুল ইসলাম, মাওলানা হাফিজ আহমদ আমিনী প্রমুখ।