মাইক্রোসফ্ট এক্সেলের মাধ্যমে মাদরাসার রেজাল্ট

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

মার্চ ০৭ ২০২১, ০৯:৫৮

ফখরুদ্দীন আহমেদ

** এক্সেলে প্রতিটি ঘর/কোটা বা সেলের একটি নাম থাকে। এটি বুঝার জন্য এক্সেল ওপেন করে যে কোনো সেলে ক্লিক করুন। উপরে দেখুন একটি ইংরেজী বর্ণ সিলেক্ট হয়ে আছে, এবং বামে দেখুন একটি নাম্বার সিলেক্ট হয়ে আছে। এই বর্ণ ও নাম্বারের মিশ্রনেই সেলের নাম হয়ে থাকে। যেমন: K1, J5, M20 ইত্যাদি।

** সর্বপ্রথম রেজাল্ট ছকে একে সমস্ত ছাত্রের বিষয়ভিত্তিক নাম্বার সেলে সেলে বসিয়ে দিন।

** শুরুতে প্রথম ছাত্রের রেজাল্ট তৈরী করতে হবে। তারপর বাকিগুলো খুব সহজে কপি করে ফেলব।

** মোট নাম্বার
এক্সেলে গানিতিক কাজ করতে গেলে শুরুতেই ইক্যুয়াল বা সমান চি‎হ্ন বসাতে হয়। তাই আমরা প্রথম লাইনের ছাত্রের মোট নাম্বারের সেলে ক্লিক করে = দিয়ে তার ১ম বিষয়ের সেল নাম্বার থেকে শেষ বিষয়ের সেল নাম্বার লিখব। প্রতিটির মাঝে যোগ চি‎হ্ন দিব। যেমন: =E5+F5+G5+H5+I5+J5+K5
এটাকে সংক্ষেপে এভাবেও লিখা যায় : =SUM(E5:K5) অর্থাৎ সমানের পর SUM লিখে ফাস্ট ব্রাকেটের () ভিতর মাঝে কোলন : দিয়ে প্রথম বিষয়ের ও শেষ বিষয়ের সেলের নাম লিখব। লিখে এন্টার চাপলেই যোগ হয়ে যাবে। যেমন: =SUM(E5:K5)

** গড়

গড় বের করতে ভাগ করতে হয়। কম্পিউটারে ভাগের জন্য এই (/) চি‎হ্ন ব্যবহার করা হয়। গড় বের করতে গড়ের সেলে = দিয়ে মোট নাম্বারের সেলের নাম তারপর ভাগ চি‎হ্ন (/) তারপর কত দিয়ে ভাগ করতে চাচ্ছি অর্থাৎ মোট বিষয় কতটি লিখব। এবার এন্টার চাপ দিলেই গড় বেরিয়ে আসবে। যেমন: =L5/7

** মেধাস্থান
আমরা মোট নাম্বারকে ভিত্তি করেই মেধাস্থান দিয়ে থাকি। শুরুতে = লিখে RANK লিখব। তারপর প্রথম ( ) বন্ধনীর ভিতরে মোট নাম্বারের সেলের নাম লিখে কমা দিয়ে আবার মোট নাম্বারের সেলের নাম লিখব, তারপর কোলন (:) দিয়ে শেষ ছাত্রের মোট নাম্বারের সেলের নাম লিখব। কাজ এখানেই শেষ না। বর্তমানে এমন হল: =RANK(L5,L5:L10) । এবার লক্ষ করে দেখুন কমার পরে দুটি ইংরেজী বর্ণ আছে। উভয়টির শুরুতে ও শেষে দুটি করে ডলার চি‎হ্ন ($) দিয়ে এন্টার চাপুন। যেমন: =RANK(L5,$L$5:$L$10)

** দরজা/বিভাগ কীভাবে বের করব?
দরজা/বিভাগ বের করার আগে দুটি জিনিস বুঝতে হবে,
** আমরা সাধারণত দরজা/বিভাগ গড় নাম্বারের উপর ভিত্তী করে বের করি, অর্থাৎ গড় ৮০ বা তার উপরে হলে মুমতাজ, ৬৫ বা তার উপরে হলে জা. জি. ….. ৩৩ এর নিচে হলে রাসিব।

** ছাত্রের ১ম বিষয় থেকে নিয়ে শেষ বিষয়ের উপর ভিত্তী করে স্থগিত বের করি। যদি ১ম বিষয় থেকে শেষ বিষয়ের ভিতরে কোনো বিষয়ে পরীক্ষা না দেয় তাহলে তার সেল খালী থাকবে। এবং খালী পেলে আমরা তাকে স্থগিত ঘোষণা করব।

এবার দুটি সূত্র বুঝি:
পুরো সূত্র লেখার আগে ছোট করে আমাদের দুটি সূত্র বুঝতে হবে:
** =IF(COUNTBLANK(E5:K5),”স্থগিত”)
এই সূত্র এভাবে বুঝতে পারি, IF অর্থ যদি, (সবসময় IF এরপর প্রথম বন্ধনী ব্যবহার করতে হবে) COUNTBLANK(E5:K5) এর অর্থ E5 থেকে K5 পর্যন্ত কোনো সেলকে যদি কাউন্ট বা গণনা করে খালী পাওয়া যায়, তারপর (,) কমার অর্থ হল তাহলে, তাহলে কী হবে রেজাল্ট বসাতে হবে ডাবল কোটেশনের ভিতরে “স্থগিত” । সর্বশেষে IF এরপর যে বন্ধনী শুরু করেছিলাম তা শেষ বা ক্লোজ করে দিতে হবে। এভাবে আমরা খুব সহজে স্থগিত বের করে ফেলতে পারব। আপনাদের এখনো এক্সেলে কোনো কাজ করার দরকার নেই। আপাতত সূত্রটি বুঝে রাখুন। তাইলে =IF(COUNTBLANK(E5:K5),”স্থগিত”) পুরো সূত্রটির মানে হল, যদি E5 থেকে K5 পর্যন্ত কোনো সেল খালী হয় তাহলে স্থগিত।

** IF(M5>=80,”মুমতাজ”)
এই সূত্রের মধ্যে একটা জিনিসই কেবল নতুন এসেছে। তা হলো >= ,
বড় বুঝাতে > এটি ব্যবহার হয় ,
ছোট বুঝাতে < এটি ব্যবহার হয়,
এদুটির পর যদি = ব্যবহার করা হয়, তাহলে অর্থ হয়:
>= সমান বা বড়,
<= সমান বা ছোট,
তাইলে IF(M5>=80,”মুমতাজ”) সূত্রের অর্থ দাড়ায়, যদি M5 সেলটি ৮০ বা তার বড়(উপরে) হয় তাহলে মুমতাজ। এভাবে আমরা মুমতাজ থেকে রাসিব পর্যন্ত বের করতে পারি। এবার পুরো সূত্র লিখে দেখাই।
** পুরো সূত্র:
=IF(COUNTBLANK(E5:K5),”স্থগিত”,IF(M5>=80,”মুমতাজ”,IF(M5>=65,”জায়্যিদ জিদ্দান”,IF(M5>=50,”জায়্যিদ”,IF(M5>=33,”মাকবুল”,”রাসিব”)))))

আশা করি উপরের লেখা বুঝলে আপনারা পুরো সূত্রটিই বুঝে গেছেন। তারপরও ব্যাখ্যা করি। পুরো সূত্রটির মিনিং হলো, যদি E5 থেকে K5 সেল অর্থাৎ ১ম বিষয় থেকে শেষ বিষয়ের ভিতর কোনো সেল খালী হয় তাহলে স্থগিত, যদি M5 বা গড়ের সেলে ৮০ বা তার উপরে থাকে তাহলে মুমতাজ, ৬৫ বা তার উপরে থাকে তাহলে জায়্যিদ জিদ্দান, ৫০ বা তার উপরে থাকে তাহলে জায়্যিদ, ৩৩ বা তার উপরে থাকে তাহলে মাকবুল , অন্যথায় রাসিব।

খেয়াল করুন:
** প্রত্যেকটা সূত্রের বন্ধনী সূত্রের শেষে একসাথে ক্লোজ করা হয়েছে।

** রাসিবের ক্ষেত্রে পুরো সূত্র লিখতে হয়নি, কারন ৮০ বা তার উপরে, ৬৫ বা তার উপরে এভাবে ৩৩ বা তার উপরে শর্ত দেওয়ার পর যা বাকি থাকে তাই রাসিব। তাই এক্ষেত্রে কমা (,) দিয়েই তার ফলটা ডাবল কোটেশনের ভিতরে বসিয়ে দিয়েছি।

** বি. দ্র. সূত্র লেখতে গিয়ে স্থগিত, ‘মুমতাজ, জায়্যিদ জিদ্দান….রাসিব’ এই বাংলা শব্দগুলো সরাসরি লেখা সাধারনদের জন্য সম্ভব না। তাই এক্ষেত্রে অন্য কোনো ওয়ার্ড ফাইলে লিখে সূত্রের ভিতর পেস্ট করে দিন। কেননা, সূত্রের ভিতর বাংলা লেখা শো করবে না। আপনি যখনা বাংলা শব্দগুলো সূত্রতে পেস্ট করবেন তখন এমন হয়ে যাবে।
=IF(COUNTBLANK(E5:K5),”¯’wMZ”,IF(M5>=80,”gygZvR”,IF(M5>=65,”Rvwq¨` wRÏvb”,IF(M5>=50,”Rvwq¨`”,IF(M5>=33,”gvKeyj”,”ivwme”)))))
ঘাবড়াবেন না। জায়গামত ঠিকই কাজ করবে। সূত্র লেখার পর সেলের ফন্ট বাংলা করে দিন।

** এবার সূত্র কপি করার পালা। প্রথম ছাত্রের মোট নম্বররের উপর মাউজ নিয়ে ক্লিক করে ধরে একেবারে শেষে মেধাস্থান পর্যন্ত সিলেক্ট করুন। এবার সিলেক্টকৃত সেলগুলির শেষটি অর্থাৎ মেধাস্থান এর নীচে ডান কোনায় মাউজ নিন। দেখবেন কারসর + যোগ এর মত হয়ে যাবে। তখন ক্লিক করে ধরে রেখে একেবারে শেষ ছাত্র পর্যন্ত নিয়ে যান। ইনশাআল্লাহ সবার রেজাল্ট কম্পলিট।