মহানবীর অবমাননায় নীরব ইস্যুঘাতক বঙ্গ মিডিয়া

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জুন ০৬ ২০২২, ২২:৪৪

আলী হাসান তৈয়ব: ঘটনাটা ঘটেছে গত সপ্তাহে। উত্তর প্রদেশের কানপুরে র শাসকদল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজিপি)’র নেত্রী মোদীর খুব কাছের ব্যক্তি নূপুর শর্মা তার টুইটারে প্রিয়নবী (সা.) এর আয়েশা (রা.)কে বিয়ে নিয়ে জঘন্য অবমাননাকর মন্তব্য করে। তাকে সমর্থন করে টুইট করে আরেক নেতা নেতা।

এর প্রতিবাদে ক্ষোভে ফেটে পড়ে কানপুরের মুসলিম সমাজ। শুক্রবার দিন তারা ধর্মঘটের ডাক দেয়। জুমার পর রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। পুলিশ মুসলিম বিক্ষোভকারীদের বেদম প্রহার ও লাঠিচার্জ করে। গ্রেফতার করে ২০ জনকে। মামলা করে হাজার হাজার অজ্ঞাত বিক্ষোভকারীর বিরুদ্ধে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বদৌলতে ঘটনা তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার করে আজব দুনিয়ায়। প্রিয়নবীকে সমর্থন করে চালু হওয়া মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। বিভিন্ন দেশে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয় ভারতীয় দূতকে প্রত্যাহার এবং ইন্ডিয়ান পণ্য বয়কটের।

সুখের কথা এবার আজমের আগে আরব জেগেছে। গতকাল প্রথমে কুয়েত তারপর কাতার তাদের দেশে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এবং অফিশিয়ালি রাষ্ট্রীয় প্রতিবাদী স্মারকলিপি তুলে দেয়। তারপর সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ও তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেয়। পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ ও সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন।

গতকাল প্রথম টুইটারে ঘটনা জানতে পারি। টুইটারে প্রিয়নবীর (সা.) অবমাননার বিরুদ্ধে বিশ্বের সব বড় বড় স্কলার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে নিজ নিজ দেশ থেকে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার এবং ইন্ডিয়ান পণ্য বয়কটের ডাক দিচ্ছেন। সময়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলেম শায়খ মুহাম্মদ হাসান আদ-দাদো, জনপ্রিয় দাঈ ও বক্তা শায়খ মাহমুদ হাসানাতসহ অনেক আলেম অনবরত লিখে যাচ্ছেন : ‘প্রিয়নবীর মর্যাদা রক্ষার চেয়ে আমাদের জীবনে বড় কোনো ইস্যু নেই।’

উম্মানের গ্রান্ড মুফতি, মিসর এবং লিবিয়ার রাষ্ট্রীয় ফতোয়া বোর্ড অফিসিয়ালি ফতোয়া জারি করেছেন পণ্য বর্জনের মাধ্যমে নবীজি (সা.) এর পাশে দাঁড়ানো এসময় পুরো উম্মাহর ওপর ফরজ। হারামাইন শরিফাইনের প্রধান শায়খ ড. আব্দুর রহমান সুদাইস কঠোর ভাষায় এর নিন্দা জানিয়েছেন।

আশ্চর্যের বিষয় হলো, আরব ও আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলোতে এ ইস্যু তোলপাড় সৃষ্টি করলেও বঙ্গীয় মিডিয়া এ ব্যাপারে একেবারে নীরব! এমনকি ইসলামপন্থী মিডিয়াগুলোও সরব নয়! শুধু নয়া দিগন্ত ভারতীয় পত্রিকার একটি ধর্মনিরপেক্ষ টাইপ নিউজ দায়সারাভাবে ছেপেছে। হুবহু একইকাজ করেছে এমনকি আমাদের ‘আওয়ার ইসলাম টুয়েন্টিফোর ডটকম’!

আল্লাহ আমাদের দেশের ইসলামি স্কলার ও দাঈদের ক্ষমা করুন। ইসলামি দলগুলোও হয়তো জানেই না। আর তথাকথিত আশেকে রাসূল ও সুন্নিদের তো কোনো খবরই নেই। আমাদের কারো ভূমিকাই সন্তোষজনক নয়।

ইতোমধ্যে আরবের বিভিন্ন সুপারমল নোটিশ দিয়ে ইন্ডিয়ান পণ্য তুলে নিয়েছে। জনগণ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়ে যাচ্ছে। আসুন আমরাও নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রিয়তম নবীজির (সা.) মর্যাদা রক্ষায় পণ্য বয়কট ও রাষ্ট্রীয় প্রতিবাদের আওয়াজ তুলি। এ ইস্যুতে কোনো অজুহাত গ্রহণযোগ্য নয়। কীভাবে আমরা কিয়ামত দিবসে তাঁর সামনে দাঁড়াব যদি আজ না দাঁড়াতে পারি তাঁর ইজ্জত রক্ষায়?

 

আরো পড়ুন: মহানবী সা.-কে অবমাননা; ভারতীয় সব শ্রমিককে বরখাস্ত করে দেশে পাঠিয়ে দেয়ার ঘোষণা